শনিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে রাজনৈতিক মামলায় আসামীদের আটক অভিযান অব্যাহত। যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতা-কর্মী আটক
  •   ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল যুবকের
  •   চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
  •   রাজধানীতে কচুয়ার কৃতী সন্তানদের সংবর্ধনা
  •   সম্প্রীতির চমৎকার নিদর্শন আমাদের বাংলাদেশ --------------জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

ইসলাম প্রচার-প্রসারে আলেমদের ভূমিকা

মুফতি মুহাঃ আবু বকর বিন ফারুক
ইসলাম প্রচার-প্রসারে আলেমদের ভূমিকা

মহান আল্লাহ তা’য়ালার আশরাফুল মাখলুকাত-সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানব জাতি। মানব জাতির হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে নবী-রাসূলগণকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাঁরই ধারাবাহিকতায় আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে আমাদের নবী বা রাসূল হিসেবে পাঠিয়েছেন।

রাসূল (সাঃ) শেষ নবী। এরপর আর কোন নবী পৃথিবীতে নবী হিসেবে আসবে না।

আল্লাহ তা’য়ালা রাসূল (সাঃ)-এর উপর আল কুরআন মাজিদ নাযিল করেছেন। রাসূল (সাঃ) ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম। যিনি ইসলামের বিধান অনুযায়ী জীবন-যাপন করেন তিনি মুসলিম বা মুসলমান। রাসূল (সাঃ) থেকে ইসলামের দাওয়াত শুরু হয়ে সাহাবায়ে কেরামের মাধ্যমে, অলী-আউলিয়ে পীর মাশায়েখদের মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াত বর্তমান সময়ে এসে উপস্থিত হয়েছে।

বর্তমান সময়ে ও অলী আউলিয়া, পীর মাশায়েখ, আলেম ওলামাগণ ইসলামের দাওয়াত দিয়ে আসছে। হযরত শাহ জালাল, শাহ পরান, জৈনপুরী, ফুরফুরা, ছারছীনাসহ একদল হক্ক সেলসেলার আলেম ওলামাগণ দীন প্রচারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকা, ওয়াজ-মাহফিল, সভা, সমাবেশ, আলোচনা, রেডিও, টেলিভিশন, পেপার পত্রিকাসহ বিভিন্ন উপায়ে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হচ্ছে।

ইসলাম প্রচার-প্রসারে আলেমদের ভূমিকা অন্যতম। আলেমগণ হচ্ছেন নবীদের ওয়ারিস ‘ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া’।

আলেমগণ যেভাবে ইসলামের প্রচার-প্রসার করতে পারে :

১. আলেমগণ সহীহ-শুদ্ধভাবে কুরআন শিক্ষার ধারা জারী রাখতে পারে।

২. তাযকিয়ায়ে নাফস তথা মানুষের অন্তর পরিশুদ্ধ করে দীন প্রচার করতে পারে।

৩. সুন্নাহ বিষয়কভাবে শিক্ষদানের মাধ্যম।

৪. মসজিদে ধর্মীয় আলোচনার মাধ্যমে।

৫. জুমআর আলোচনা।

৬. ওয়াজ-মাহফিলের মাধ্যমে ইসলামের আদর্শ তুলে ধরে।

৭. মানুষের কাছে কাছে গিয়ে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে।

৮. দেশ-বিদেশে সফর করে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া।

৯. লেখা-লেখনীর মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াত দেয়া।

১০. রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমে ইসলামের আদর্শ তুলে ধরা, যাতে সহজে ইসলামের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে যায়।

১১. ইসলামের দাওয়াতে মিশন চালু রাখা।

১২. মসজিদ মক্তবের মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া।

১৩. মসজিদ ভিত্তিক পাঠাগার স্থাপন, বর্তমান সময়ের এক অতিবগুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যা ইসলাম প্রচার-প্রসারে ব্যাপকভাবে উন্নয়ন হবে।

১৪. শিক্ষা ক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে দ্বীন প্রচার করা।

১৫. ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে আলেমগণ সম্পৃক্ত হয়ে ও ইসলামী অর্থনীতি চালু করা যায়।

১৬. চিকিৎসা ক্ষেত্রে আলেমদের অবদানের মাধ্যমেও ইসলামের প্রসার ঘটানো সম্ভব।

১৭. রাষ্ট্র পরিচালনায় আলেমগণ সম্পৃক্ত হয়ে সহজে ইসলামের প্রচার- প্রসার কাজে সম্পৃক্ত হতে পারে।

১৮. দেশের প্রতিটি সেক্টরে আলেমগণ সম্পৃক্ত হয়ে সহজে মানুষের মধ্যে ইসলামী আদর্শ মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া ও আমরা দেখতে পাই, পীর মাশায়েখগণ মানুষের কাছে কাছে গিয়ে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেন।

সর্বত্র ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে করণীয় :

সর্বত্র ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে আমরা প্রথমে লিল্লাহিয়াত ভিক্তিক জীবন-যাপন করতে হবে। ব্যক্তি, পারিবারিক, সমাজ, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের দাওয়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও দেশভিক্তিক প্রচার কাজ চালাতে হবে।

রাস্তায় রাস্তায়, লোকালয়ে ও সর্বত্র ইসলামী বাণী ফেস্টুন দেয়ার দ্বারা সকলের নিকট ইসলামী আদর্শ পৌঁছানো সম্ভব। রেডিও, টেলিভিশনসহ স্যাটেলাইট ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া যায়। প্রতিটি মসজিদে মসজিদ পাঠাগার স্থাপন করে ইসলামের প্রচার-প্রসারে কাজ করা যায়।

সরকারি-বেসরকারী সকল অনুষ্ঠানে কিছু সময়ের জন্য হলেও ইসলামী আদর্শ তুলে ধরতে পারলে দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ থাকায় দুর্নীতি কমে যাবে আশা করা যায়। সরকারি-বেসরকারি সকল কাজে আলেমদের সম্পৃক্ততায় ইসলামী আদর্শ পৌঁছানো সম্ভব ও দেশ থেকে অন্যায়-অপরাধ দমন সম্ভব হবে। কারাগারগুলোতে কয়েদীদের ইসলামী মূল্যবোধের সুযোগ দেয়া হলে কারাগারে ডাকাত, চোর হিসেবে প্রবেশ করলেও আশা করা যায় অনেকাংশের ভালো মানুষ হয়ে কারাগার থেকে বের হবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও বটে। সংসদে প্রতি অধিবেশনের পূর্বে ইসলামী আদর্শ প্রচার করা গেলে সংসদ সদস্যদের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ ফয়দা হবে। এতে তাঁরা কোন অপরাধে জড়িত হবেনা।

দেশ সোনার দেশে তখনই পরিণত হবে যখন দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে ইসলামী আদর্শ পৌঁছে দেয়া যাবে। তখন দেশে থাকবেনা অন্যায়-অপরাধ, জুলুমণ্ডনির্যাতন, চুরি-ডাকাতি, রাহাজানি, দুর্নীতিসহ যাবতীয় অপরাধ।

কারণ ইসলাম শান্তির ধর্ম, যেকোন দেশে ইসলামী আদর্শ থাকলে সে দেশ শান্তির দেশে পরিণত হবে, যে সমাজে ইসলামী আদর্শ থাকবে, সেখানে শান্তি থাকবে। যে পরিবারে ইসলামী আদর্শ থাকবে সে পরিবারে শান্তি থাকবে। কোন অনৈসলামিক দেশ ও যদি ইসলামী আদর্শ মেনে চলে তবুও সে দেশেও শান্তি থাকবে।

ইমাম ও খতিব : বিষ্ণুপুর মদিনা বাজার বাইতুল আমিন জামে মসজিদ, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়