প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
লাইট ফর হিউমিনিটি : চাঁদপুরের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ছড়াচ্ছে শিক্ষার আলো
লাইট ফর হিউমিনিটি। চাঁদপুর শহরের সুবিদিত একটি সংগনের নাম। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের স্কুল পরিচালনাই তাদের প্রধান কাজ। ‘এসো আলোকিত মানুষ হই’ এই স্লোগানকে হৃদয়ে ধারণ করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার লক্ষ্যে ২০১৭ সাল থেকে একদল তরুণ-তরুণী (কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী)কে নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এই সংগঠনটির সাথে জড়িত আছেন সমাজসেবক এবং একজন মানবিক মানুষ লায়ন মাহমুদ হাসান খান (বর্তমান তরুণ প্রজন্মের ‘নানাভাই’ হিসেবে যিনি সবার কাছে পরিচিত)।
সালাহউদ্দিন আহমেদ, মহিমা লোধ, জয়নব ইমা, পূজা রাণী সর্দার, অসীমা দাস দৃষ্টি, সানিয়া তাসনিম ইভা, সাদিয়া কবির, জান্নাত মিম, তামান্না রহমান, রুবা, রিয়াদসহ একদল তরুণ-তরুণী মেঘনা নদীর পাড়ে জেলে পল্লীতে (টিলাবাড়ি) নামক বস্তিতে এক চিলতে উঠানে প্রথম এর কার্যক্রম শুরু করে।
বর্তমানে লাইট ফর হিউমিনিটি স্কুলের কার্যক্রম চলে আসছে চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্রীরামদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্বেচ্ছাশ্রমে নিজেদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
প্রতি শুক্রবার ৩ ঘন্টা করে কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ১০/১৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর স্বেচ্ছাশ্রমে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রায় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর ৫ দিন বিদ্যালয়ের পড়ালেখা গুলো কোচিং সেন্টারের মতো ঝালাই করে দেয়া হয়। সুন্দর মন মানসিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, ছবি আকাঁ, সুন্দর হাতের লেখাসহ নানান কার্যক্রম করা হয়, যার মাধ্যমে তাদেরকে সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি জাতীয় দিবসগুলো যেমন মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস সহ নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশপ্রেম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সহ নানান বিষয়ে তাদেরকে জ্ঞানদানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হয়। শিক্ষার্থীদের বছরব্যাপী শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ে আসার উৎসাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছু হালকা নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়, যে কাজে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান সহযোগিতা করেন। স্কুল ব্যাগ, টি-শার্ট, খাতাণ্ডকলম, শীতকালে শীতের গরম কাপড় সহ নানান উপকরণের মাধ্যমে লেখাপড়ার জন্যে উৎসাহ প্রদান করা হয়ে থাকে। স্কুলের সাথে সম্পৃক্ত সকল স্বেচ্ছাসেবী বন্ধু নিজেদের ছোট-ভাইবোনের মতো সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ রকম মহতী উদ্যোগে খুব কম মানুষকে করতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা লায়ন মাহমুদ হাসান খান (সবার ভালোবাসার ‘নানাভাই’ নামে যিনি পরিচিত) বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এ স্কুল পরিচালনা করে আসছি। আমাদের যতটুকু সম্ভব ততটুকু শ্রম ও অর্থ দিয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্কুলের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এসব শিশু যাতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়, তারা যেন মানুষের মতো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা তাদের পাশে রয়েছি এবং আগামী দিনগুলোতেও থাকবো। এই সুবিধাবঞ্চিত বাচ্চাদের আগামীর স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।