প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
উত্তপ্ত মরুর বুকে অমীমাংসিত রহস্য ধারণ করে দাড়িয়ে থাকা পাঁচ হাজার বছর পুরনো বিশাল স্থাপনা। যারা এর সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তারা অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়। বহু জ্ঞানী ব্যক্তি এগুলো দেখে হয়ে যায় দিশেহারা।
এতটুকু ছিদ্র পথও নেই যা দিয়ে বের করা যায় এর রহস্য উন্মোচন। এগুলো কি? এগুলোর কি কাজ? এগুলো কিভাবে তৈরি হলো? বলছিলাম মিশরের পিরামিডের কথা। বলা হয়ে থাকে আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে মিশরের ফারাও কয়েক লাখ শ্রমিক দিয়ে এই পিরামিড বানিয়েছেন।
পূর্বে ধারণা করা হতো এসব পিরামিড ফারাওদের কবর। যেখানে তাদেরকে মৃত্যুর পর সকল ধনসম্পদ সহ দাফন করা হতো। কিন্তু আমাদের জেনে আসা এই ধারণাগুলো ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আজ পর্যন্ত এসব পিরামিড থেকে কোন লাশ পাওয়া যায়নি। ফারওদের লাশ পাওয়া গেছে তাদের নিজস্ব কবরস্থানে যাকে বলা হয় ‘ভ্যালি অব দ্যা কিংস’।
প্রতিটি পিরামিড ত্রিমাত্রিক জ্যামিতিক নকশা ও গাণিতিক অনুসরণ করে তৈরি করা। একটি কোনায় কোন খুত নেই। এর ভেতরের তাপমাত্রা সবসময় ২০ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে এর আশেপাশের মরুভূমির তাপমাত্রা কখনো কখনো ৭০ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তও হয়ে যায়। আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় ভুমিকম্প ন্যূনতম ক্ষতি হয়নি। তাই অনেকেই বলতে চায় এগুলো মানুষের তৈরি নয়। ভিনগ্রহের এলিয়েনরা এসে এসব তৈরি করে গেছে।
এই পিরামিড গুলোর একটি ‘গ্রেট পিরামিড অব গিজা’ যার উচ্চতা প্রায় ১৪৭ মিটার। এটি পৃথিবীর একমাত্র পিরামিড যার ৮টি পার্শ্ব রয়েছে। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিলো ২০ বছর। এর একটি পাথরের ব্লকের ওজন ছিলো আড়াই টন করে। এটির পাথরগুলো দূর দূরান্তের পাহাড় থেকে আনা বিশেষ পাথর ছিলো। এতো বড় পাথর তখনকার মানুষ কিভাবে এতো উঁচুতে উঠিয়েছিলো তা নিয়ে রয়েছে হাজারো বিস্ময়।
শত শত বছর ধরে এই নিশ্চিদ্র পিরামিডগুলো নিয়ে গবেষণা চলছে। এগুলো আধুনিক প্রযুক্তির স্ক্যান করে দেখা যায় এতে রয়েছে তিনটি ফাঁকা চেম্বার। যাদেরকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছে যথাক্রমে : কিংস চেম্বার, কুইন্স চেম্বার এবং বেজ চেম্বার। এই চেম্বার বা ফাঁকা রাস্তাগুলো আবার তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকার পাথর দিয়ে। এই পথে রোবট পাঠানো হয়েছিলো যা ভেতরে ঢুকে তার কার্যক্ষমতা হারিয়েছে। নিকোলা টেসলার মতো কিছু বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন হয়তোবা এসকল পিরামিড ব্যাবহৃত হতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে।
বিজ্ঞানের চরম অগ্রযাত্রার এ যুগে এসে আমরা আজো উন্মোচন করতে পারিনি পিরামিডের ভেতরে লুকিয়ে থাকা রহস্য। এই পৃথিবীর বিশালতা মাঝে আরো কত অমীমাংসিত অজানা গোপন সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে তা জানতে হয়তো আমাদের অপেক্ষা করতে হবে বহু শতাব্দী।