শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৬

আহমেদ উল্লাহ ভূঁইয়ার একগুচ্ছ কবিতা

অনলাইন ডেস্ক
আহমেদ উল্লাহ ভূঁইয়ার একগুচ্ছ কবিতা

আমরা শিশু

আমরা শিশু মানব কলি-সাধারণের দৃষ্টিতে

নিষ্পাপ শিশু মোরা-আল্লাহ পাকের সৃষ্টিতে।

সবার প্রিয় স্নেহধন্য-বর্ষে সবাই আশীর্বাদ

হিংসা বিদ্বেষমুক্ত বলে-দিচ্ছে না কেউ অপবাদ!

গুরুজনদের দেখে শিখি-পৃথিবীটাই বিদ্যালয়

পরিবেশের প্রভাবেই-জীবন বোধের বিকাশ হয়।

সুস্থ সমাজ নিরাপত্তা-শিক্ষালয়ের পরিবেশ

গুম-খুনের এ রাম রাজত্বে-হই না যেন নিরুদ্দেশ।

আমরা শিশু মানব কলি-মানুষ রূপেই ফুটতে দিন

অঁাধার ফুঁড়ে পৃথিবীতে-আনবো আমরা নতুন দিন।

বয়ঃজ্যেষ্ঠ নারী পুরুষ-সবাই মোদের গুরুজন

আচরণে সিদ্ধ হলে-আর কিছুর নেই প্রয়োজন।

মজার খাবার, দামী পোশাক-সুখতো বয়ে আনে না

এ কথাটা অনেকেই-হয়তো নিজেই জানে না।

ধন-সম্পদ চাই না মোরা-যাচি সুন্দর আচরণ

মুক্ত মনের মানুষ রূপে-ঘটুক মোদের উত্তরণ।

মোদের হাসি ভুবনজয়ী-গোলা বারুদ অর্থহীন

ভালো বেসে শিশুর মতো-সব মানুষকে বুকে নিন।

স্নেহ, প্রীতি, ভালোবাসা-সবচে’ বেশি শক্তিধর

বুলেট থেকে মিষ্টি বুলি-কার্যকরী অধিকতর।

নষ্ট চিন্তায় পুষ্ট সমাজ-শিশুর বিকাশ রুখে দেয়

এই সমাজে বাড়লে শিশু-বুঝবে কি সে ন্যায়-অন্যায়?

সভ্য সমাজ গড়তে হলে-আগে গড়ুন পরিবেশ

নষ্ট চিন্তা বিদায় করুন-বিদায় করুন হিংসা-দ্বেষ।

আহ্বান

হে কিশোর, হে তরুণ, যে যুবক-ফিরে এসো পথে

আবেগেই দ্রুতলয়ে চলছো উল্টো রথে।

তোমরাই জাতির প্রাণ-সুন্দর আগামীর নির্মাতা

যৌবনই জীবনের ছবি-ভুলেছ সে কথা?

অশালীন পোশাক আশাক-উদ্ধত আচরণ

ঘটায় বিবেকের অধঃপাত-বিকাশের পথ সংকোচন।

নোংরা সংস্কৃতি-লজ্জা হন্তারক-আত্ম বিনাশী ভাইরাস

তারই উফসী ফলন, অসংযত আচরণ-ফলাফল গুম-খুন-সন্ত্রাস।

সমাজ সংসার, কাটায় প্রহর-তোমাদের মুখ পানে চেয়ে

হতাশায় নিমজ্জমান, মেঘে ঢাকা আসমান-ঝড় আসছে ধেয়ে।

রাষ্ট্র-তরী দুলছে ঢেউয়ে-অসংযত পাল

দেশ জাতিকে রক্ষা কল্পে-কষে ধর হাল।

তোমরা জাতির মেরুদণ্ড-তোমরা জাতির প্রাণ

যৌবনের হাত ধরেই-সভ্যতার উত্থান।

চিতা বাঘের জিজ্ঞাসা

চতুষ্পদী প্রাণী আমরা-জঙ্গলেই বাস

পরিবেশ রক্ষাকল্পে খাই না কভু ঘাস।

আমরা পশু মেনে চলি-প্রকৃতির বিধান

বিধাতা প্রদত্ত খাদ্যে-জিইয়ে রাখি প্রাণ।

পেট পুরে খেতে পারলেই-তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলি

বিলাসবহুল প্রাসাদ চাই না-ঝোপ ঝাড়ে চোখ মুদি।

খাদ্যদ্রব্য কঁাচাই খাই-আগুন নাহি জ্বালি আগুন-ধেঁায়ায় পরিবেশ দূষণ-পশু হলেও বুঝি।

বন্য হরিণ মেষ শাবক-একটা যদি পাই

সব স্বজনরা মিলে মিশে-মজা করে খাই।

মানব জাতি সব সময়ে-করছে মোদের ঘৃণা

কোন্ কারণে হিংস্র বলে-আমরা তা বুঝি না।

আমরা কি ভাই লিপ্ত থাকি-স্বজাতি নিধনে?

জনপদ কি ধ্বংস করি-বোমা বিস্ফোরণে?

আগলে রাখি কোলের শিশু-জড়িয়ে ধরে বুকে

মানুষ কেন ছোট্ট শিশু-হত্যা-ধর্ষণ করে?

বুক চিতিয়ে তবুও মানুষ-নিজকে সেরা ভাবে

প্রকৃতির সব বিপর্যয়ে-থাকে পুরোভাগে।

আমরা চতুষ্পদী প্রাণীকুল-প্রাণ-জগতের সেরা

মোদের শিক্ষায় শিক্ষিত হোক-সকল মানুষেরা।

ডেঙ্গু মশার অভিযোগ

আমরা ডেঙ্গু মশা, রক্ত পায়ী-অতি ক্ষুদ্র প্রাণী

তোমরা মোদের জন্মদাতা-এ কথাই জানি।

গর্ত খেঁাড়, ময়লা জমাও-করো পরিষ্কার?

মানব বর্জ্যেই জন্ম মোদের-তবু কেন শুনছি তিরস্কার?

জন্ম যখন দিচ্ছ বাপু-প্রাণ বঁাচাতে খাবারের দরকার

সৃষ্টি কর্তার বিধান মতে-মোদের রক্তই খাবার।

কথায় কথায় তুচ্ছ করো-করছো নিত্য ঘৃণা

তোমরা কেমন মানব জাতি-আমরা কি চিনি না?

স্বজাতির রক্ত চুষে-হচ্ছো মোটাতাজা

বিবেক থাকলে দিতে পারো-আমাদেরকে সাজা?

মানুষ হয়ে মানুষ খুন-লুটে, গুমে পাকা

শ্রেষ্ঠ প্রাণীর সনদ দিয়ে-পাপ যায় কি ঢাকা?

জনগণের করের টাকা-করছো তোমরা লুট

তোমরা মানুষ সেরা প্রাণী-এ কথাটি ঝুট।

পাপকে ঘৃণা করতে শেখ-পাপীকে কর মাফ

সৃষ্টি কর্তার বিবেচনায়-এটাই ইনসাফ।

পয়দা যখন করছো মোদের-খাবার মোরা চাই

নইলে কিন্তু হুল ফুটাবো-গোরস্থানেই ঠঁাই।

লেখক পরিচিতি : আহমেদ উল্লাহ ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আয়কর আইনজীবী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়