বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫০

শখ থেকে রঙিন পাখি বাণিজ্যিকভাবে পালন, আর্থিকভাবে লাভবান মিঠুন

কৃষিকণ্ঠ প্রতিবেদক
শখ থেকে রঙিন পাখি বাণিজ্যিকভাবে পালন, আর্থিকভাবে লাভবান মিঠুন

পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে কার না ভালো লাগে। তবে সেটা যদি হয় নানা প্রজাতির বাহারি রঙের বিদেশি পাখি, তাহলে তো কোনো কথাই নেই।

চাঁদপুর শহরের চক্ষু হাসপাতাল সংলগ্ন বিল্লাল টাওয়ারে মিঠুন দেবনাথ নামে এক জুয়েলারী ব্যবসায়ী শখের বশে ৫ জোড়া পাখি কিনে পালন শুরু করেন। তবে শখ থেকে তিনি এখন বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন ও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

জানা যায়, মিঠুন দেবনাথ ব্যবসার পাশাপাশি ২০০৪ সালে শখের বসে কয়েক ৫ জোড়া পাখি পালন শুরু করেন । এরপর থেকে ধীরে ধীরে তিনি পাখি বাড়াতে শুরু করেন। এখন তার খামারে বিভিন্ন দেশের ৬ প্রজাতির ২০ রকমের ১০০ জোড়া বিদেশি পাখি রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিঠুন দেবনাথ তার ভাড়া বাসার একটি রুমে গড়ে তুলেছেন পাখির খামার। সেই খামারের নামকরণ করেছেন শখ এভিয়ারী। সেখানে গ্রিলের সঙ্গে আলাদা আলাদা খাঁচার ঘর তৈরি করা হয়েছে। আবার দিয়ে রাখা হয়েছে হাঁড়িও। তার মধ্যে বিদেশি হরেক রকমের রঙিন পাখি। খাঁচায় রাখা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ককাটেল, দক্ষিণ আফ্রিকার লাভ বার্ড, ইন্দোনেশিয়ার জাভা, জাপানের জেপি, হল্যান্ডের রিংনেক ও অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডেন ফিঞ্চ। এছাড়াও এসব পাখির সামনে ছোট ছোট মাটির পেয়ালায় করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন রকমের খাবার। এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষের নজর কাড়ে। প্রতিদিন তার খামারে পাখি দেখতে ও কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন লোকজন।

এ বিষয়ে কথা হয় মিঠুন দেবনাথের সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ২০০৪ সালে শখের বসে ৫ জোড়া সানকুনর পাখি পালন শুরু করি। এরপর ধীরে ধীরে পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। আমার খামারের নাম শখ এভিয়ারী। এক সময় চিন্তা করলাম প্রাণিসম্পদের আওতায় গৃহপালিত পশু গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, ভেড়া পালনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। কিন্তু পাখি পালনে আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি। আমাদের দেশে পাখির বাণিজ্যিক খামার নেই বললেই চলে। সেই কথা চিন্তা করে আজকে বাণিজ্যিকভাবে পাখির খামার গড়ে তুলেছি। বলতে পারেন কিছুটা সফল হয়েছি। প্রতিদিন খামারে পাখি দেখতে ও কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন লোকজন। কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন।

মিঠুন আরো বলেন, বর্তমানে তার খামারে বিদেশি ৬ প্রজাতির ২০ রকমের ১০০ জোড়া পাখি আছে। এসব পাখির মধ্যে লাভ বার্ড ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এছাড়াও বিভিন্ন পাখির দাম বিভিন্ন রকম। পাখি বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি।

মিঠুন দেবনাথ আরও বলেন, আমাদের দেশে অনেকদিন ধরে পাখি কেনাবেচা হয়ে আসছে। মার্কেটও গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে বাচ্চা সংগ্রহ করে লালন পালন করে সেখান থেকে আবার বাচ্চা তৈরি করা হয়। কিছু কিছু পাখি ২ থেকে ৪ বার বাচ্চা দেয়। এই বাচ্চাগুলো বিক্রি হয়ে থাকে। পাখি লালন-পালন অনেক সহজ। এদের রোগবালাইও কম হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেশি। এসব পাখির খাবারগুলো সাধারণত দেশের বাইরে থেকে আসে। এই খাবারগুলো সংগ্রহ করে খেতে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রকম পাখির খাবার বিভিন্ন রকম। ধরতে গেলে খাবারের খরচও কম। এসব পাখির বাজারে মূল্য বেশি।

মিঠুন জানান, আমরা যে পাখিগুলো পালন করছি, এসব পাখির জন্মই খাঁচায়। এ পাখিগুলো সহজেই যে কেউ যে কোনো জায়গায় পালন করে বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিতে পারে। এতে করে লাভবান হওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।

মিঠুন দেবনাথ শখের বশে জুয়ালারী ব্যবসাও শুরু করে ছিলেন। আজ তিনি জুয়েলারী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার দোকানের নামও শখ জুয়েলার্স। সেটি চাঁদপুর পৌরসভার বিপণীবাগ মার্কেটে উত্তর-পশ্চিম গলিতে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদের মো. মফিজুল ইসলাম খন্দকার বলেন, এসব পাখির রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। কম সময় ও খুব কম খরচে এসব পাখি লালন-পালন করা যায়। লাভজনক একটা পেশা বলা যেতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের দাপ্তরিক কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়