বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৩, ২১:৩৩

অপ্রত্যাশিত ঈদ সালামি

জাহাঙ্গীর আলম হৃদয়
অপ্রত্যাশিত ঈদ সালামি

আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। পরিচিত কবি, সাহিত্যিক কিংবা দামি কোন লেখক নই। তবু মাঝে মাঝে মনের চাহিদা মেটাতে লেখালেখি করি। ইতোমধ্যে বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় কবিতা, গল্প, সাক্ষাৎকারভিত্তিক, ইংরেজি, বাংলা অনুবাদসহ আমার লেখা মোট ৫টি বই বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

২০২৩ সালে প্রকাশিত আমার লেখা পঞ্চম বই ‘আমার স্মৃতিরেখা’ প্রকাশিত হয়। বইটিতে স্থান পেয়েছে আমার ভালো লাগার অতীত, ভালো লাগা কিছু মানুষ, ভালো লাগা বন্ধুসহ অনেক কিছুই। প্রবাসে থাকাবস্থায় ‘আমার স্মৃতিরেখা’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বইমেলা থেকে বইটি অনেক শুভাকাক্সক্ষী সংগ্রহ করেছেন।

গত ৫ মার্চ ২০২৩ সালে সৌদি আরব থেকে দেশে আসি। এসেই প্রকাশিত ‘আমার স্মৃতিরেখা’ বইটি চাঁদপুর জেলা প্রশাসক, শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার অফিসার ইনচার্জ, পৌর মেয়র, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিকিৎসক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক ভাইদের হাতে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে দিয়েছি। পেয়েছি সকলের আন্তরিক ভালোবাসা।

আমার বইটিতে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের প্রয়াত সভাপতি ইকরাম চৌধুরীর কিছু গল্প রয়েছে, তার পরিবারের হাতে বইটি শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে তুলে দেয়ার অপেক্ষায় আছি। শুধু তা-ই নয়, ‘আমার স্মৃতিরেখা’ বইয়ে চাঁদপুর জেলার সুপরিচিত মুখ, স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা বদরুন নাহার আপার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তিনি মহামারি করোনায় কয়েকবার আক্রান্ত হয়েছেন, মহান আল্লাহ সকলের দোয়ায় ওনাকে সুস্থ করে দিয়েছেন। এরপর কিছু দিন আগে অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মহান আল্লাহ তাঁকে সুস্থ করে দিয়েছেন। প্রবাসে থেকে ওনার সাথে কথা বলেছি।

দেশে এসেছি আমার বইয়ে যাকে নিয়ে শিরোনাম করেছি মমতাময়ী বদরুন নাহার, তাঁর হাতে কখন বইটি শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে তুলে দিবো সেই সুযোগ খুঁজছিলাম। গত ১১ এপ্রিল সকালে আমি বদরুন নাহার আপাকে কল দিলাম। বললাম আমি হৃদয়, তিনি বললেন, কী খবর হৃদয় কবে এসেছো দেশে? আমি আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছি, চাঁদপুর আছি আসো দেখা করে যাও। বললাম, আপা তাহলে আমি ১২ এপ্রিল আসবো আপনার সাথে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। বললেন আসো। সেইদিন রাতেই স্নেহময় কবি, প্রাবন্ধিক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান ফেসবুক মেসেঞ্জারে নক দিয়ে জানতে চাইলো কবে চাঁদপুর আসবো। আমি বললাম ১২ এপ্রিল সকালে বদরুন নাহার আপার চেম্বারে আসবো। ফরিদ বললো ঠিক আছে। যথারীতি ১২ এপ্রিল দুপুর ১২টার আগেই চাঁদপুর গেলাম দেখা হলো ফরিদের সাথে। একসাথেই বিশিষ্ট চিকিৎসক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা বদরুন নাহার আপার চেম্বারে গেলাম। আপা আমাদের দেখেই গালভরা হাসি নিয়ে হৃদয়, ফরিদ এসেছো।

আমায় তিনি মায়ের মমতা নিয়ে কাছে টেনে নিলেন। বললেন আমার সুস্থতার জন্য সৌদি আরব থেকে দোয়ার আয়োজন করেছো, পত্রিকার মাধ্যমে দোয়া চেয়েছো হৃদয় সত্যিই তোমাদের স্নেহময় ছোট ভাইদের দোয়া আছে বলেই মহান আল্লাহ আজও আমাকে সুস্থ রেখেছেন। রোজার দিন সকালে কিবা আপ্যায়ন করি তোমাদের। বললাম কিছুই লাগবে না আপা। শুধুমাত্র এসেছি আপনার হাতে আমার লেখা ‘আমার স্মৃতিরেখা’ বইটি শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে তুলে দিতে। আলাপচারিতার এক ফাঁকে আপার হাতে বইটি তুলে দিলাম। তিনি বইটি হাসিমুখে গ্রহণ করলেন।

বিদায়ের পালা। বললাম, আপা আপনি অনেক ব্যস্ত আজ আসি। তিনি বললেন, দাঁড়াও হৃদয়। এ কথা বলেই হাতে একটা খাম দিয়ে বললেন, এটা তোমার জন্য আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসার ঈদ সালামি। নিতেই হবে মানা করতে পারবে না বোন হিসেবে দিলাম। জড়িয়ে ধরে চোখের পানি ছেড়ে বললেন ভাইরে কখন দুনিয়া ছেড়ে যাবো চলে জানি না, আমার জন্য দোয়া করবে। তোমাদের সকলের আন্তরিক ভালোবাসা নিয়েই আমার বেঁচে থাকা।

আপার কথা আর চোখের পানি দেখে নিজের চোখ ভিজে পানি গড়িয়ে পড়ছে। জীবনের অনেক বছর অতিবাহিত হয়েছে। এমন আবেগাপ্লুত ঈদ সালামি আর ভালোবাসা পাইনি। ১২ এপ্রিল ২০২৩ আমার জীবনের আরেক ইতিহাস, যা ক্ষণিকের জীবনে ভুলে যাবার নয়। শুধু মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ। একই সাথে আল্লাহর দরবারে দোয়া করছি, আল্লাহ তুমি সৈয়দা বদরুন নাহার আপাকে সুস্থতার সাথে নেক হায়াত দান করুন। তিনি যেনো মানুষের কল্যাণে সবসময় পাশে থাকতে পারেন। আমিন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়