প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৪:৪৬
হাইমচরে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন, দামে অসন্তুষ্ট কৃষক
সবজি ক্ষেতে সবুজ হাসি থাকলেও কৃষকের মুখ ম্লান
হাইমচরে আগাম শীতকালীন সবজির ব্যাপক ফলনে কৃষকের মুখে হাসি থাকলেও বাজারে এসে সেই হাসি ফিকে হয়ে পড়ছে। ভালো দাম না পেয়ে সবজি চাষের আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা। ট্রাক্টরে হাল চাষ, মাঠে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম, ঔষধ ছিটানো আর বাজার পর্যন্ত নিয়ে আসার ভাড়া, সবজি বিক্রি করে পোষাতে পারছেন না বলে অনেকের অভিযোগ। ক্রেতার কাছে সবজির দাম দ্বিগুণ হলেও পাইকারি বাজারে কৃষকরা সবজি বিক্রি করছেন আগের চেয়ে মাত্র ৫-১০ টাকা বেশিতে। কিন্তু সার, ঔষধ ও শ্রমিকের হাজিরায় যা খরচ হয়েছে তা আশানুরূপ হয় না।
|আরো খবর
বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। তবে বাজারে দাম বাড়লেও কৃষকের কাছে সেই দামের অর্থ পৌঁছাচ্ছে না। কাঁচা বাজারগুলোতে গত সপ্তাহের তুলনায় বাজার ভেদে শাক-সবজির দামের পার্থক্য ২০ থেকে ৩০ টাকা প্রতি কেজিতে। উপজেলার আলগীবাজার, রায়ের বাজার, জনতা বাজার, হাইমচর বাজার, হাওলাদার বাজার ও তেলির মোড় সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য মিলেছে।
২২ অক্টোবর ২০২১ সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আগাম শীতকালীন বিভিন্ন সবজি ইতোমধ্যে বাজারে উঠলেও পাইকারী বাজারে মূলা, পটল, করলা, ফুলকপি (ছোট), শশা, ঢেঁড়শ, পেঁপের দাম কেজিতে ১৫-২৫ টাকা বেড়েছে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সবজির দাম কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন পাইকাররা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, লেবু, বেগুন, পটল, শশা ইত্যাদি প্রতিকেজি ৫০-৬৫ টাকা, করলা ৬০-৮০, মূলা ও ঢেড়শ ৪০-৬০, ফুলকপি (ছোট) ৮০-১০০, বাঁধাকপি ৬০-৮০, কাঁচা পেঁপে ৩০-৪০, মিষ্টি কুমড়া ৪৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লালশাক ও পুঁইশাক প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ৫০-৬৫ টাকায়, মাঝারি সাইজের দেশি লাউ ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা বাজারে দাম বাড়তি থাকলেও পাইকারি বাজারে দাম তেমন বাড়েনি। বেগুন, পটল, শশা ইত্যাদি পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ৩০-৪০ টাকা, মূলা ও ঢেড়শ ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইমচর উপজেলার জনতা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মিজান গাজী ও সুমন জানান, আগাম শীতকালীন বিভিন্ন সবজি বাজারে চলে এসেছে। বাজারে সবজির দামও বেড়েছে। কিন্তু আমরা দাম পাচ্ছি না। চাষের খরচের সঙ্গে মিলিয়ে যে দাম পাচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে লাভ তেমন হবে না।
হাইমচর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ দেবব্রত সরকার জানান, মেঘনায় অনাকাঙ্ক্ষিত জোয়ার, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে দুই থেকে তিনবার ক্ষেতের সবজি নষ্ট হয়ে হওয়ার প্রভাবে সবজির দাম এখন কিছুটা বেড়েছে। বাজারে অতিরিক্ত দাম নেওয়ার বিষয়টি আশা করি কয়েকদিনে ঠিক হয়ে যাবে। তবুও এ বিষয়ে কোনো কৃষক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের পাশে আমরা দাঁড়াবো। ঢাকাতে আমাদের যে সরকারি কৃষি বিপণন কেন্দ্র রয়েছে কৃষকদের সবজি কিনে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এজন্য কৃষকদের উপজেলায় যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।