প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:১৯
অর্থ নয়, যোগ্যতাই সরকারি চাকুরি পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
চাঁদপুরে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব শূন্যপদে নিয়োগ এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে। চাকরী প্রার্থী ও সাধারণ মানুষের ধ্যান ধারণা বাহিরে এসে এবার নিয়োগ পেয়েছে ৭জন ইউনিয়ন পরিষদ সচিব। বিষয়টি অবশ্যই শতভাগ প্রশংসার দাবী রাখে। সরকারি চাকরীর ক্ষেত্রে এভাবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকলে সাধারণ মানুষের অতীত ধারণা খুব দ্রুতই পরিবর্তন আসবে এবং চাকরীপ্রার্থীদের যোগ্যতা অর্জণের আগ্রহ বৃদ্ধিপাবে। এতে করে অসদুপায় অবলম্বনকারীরা এখন থেকে আর সুযোগ খুঁজবে না। সচিব পদে এবছরের নিয়োগ চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ এর মহতী উদ্যোগ ও স্বচ্ছতার কারণে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যার ফলে যোগ্যপ্রার্থীরা চাকুরীর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। নিয়োগ পেয়ে প্রার্থীরাও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
|আরো খবর
নিয়োগের বিষয়ে সরেজমিন বুধবার (১ ডিসেম্বর) কথা হয় নিয়োগপ্রাপ্ত নাজমুল হোসাইন (শাহীন) এর সাথে। শাহীন সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ড শ্রীরামপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রৌশন আলী বেপারী ছেলে।
শাহীন জানান, আমি খুব দারিদ্রতার মধ্যে পড়া-লেখা করেছি। পরিবারের অবস্থা খারাপ থাকায় পড়াশুনাও করতে কষ্ট হয়েছে। পড়া-শুনার পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আমি আবেদন করি। কোন আশানরুপ ফল পাইনি। এদিকে হৃদরোগে আক্রান্ত বাবা ও অসহায় পরিবার এবং চাকরী না পাওয়ায় একসময় আমি হতাশ হয়ে পড়ি। পরের লোকমুখে শুনি জেলা প্রশাসক স্যার ইউপি সচিব পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞাপ্তি দিয়েছেন। এও শুনি উনার সততা ও সুনামের কথা। এটা শুনে আগ্রহ করে ইউপি সচিব পদে আবেদন করি এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহন করি। এই পদে চাকুরীর পক্রিয়া খুব দ্রুত সময়ে ও স্বচ্ছতার মধ্যে সম্পন্ন হয় এবং আমি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই।তিনি আরো জানান, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে কোন অর্থ খরচ ও সুপারিশ না করে চাকরী পাওয়ায় গর্ববোধ করছি। আমার প্রত্যশা আমার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের জন্য যেভাবে জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন, আমি তার পথ অনুসরণ করে নিজ দায়িত্ব পালন করব। ছেলের চাকুরী হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রৌশন আলী বেপারী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের জন্যই আমি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ করেছিলাম। কিন্তু আমার কোন অর্থ সামর্থ নেই। আজ আমার সন্তানের কর্মসংস্থান হওয়ার কারণে একজন পিতা হিসেবে খুবই আনন্দিত ও গর্বিত।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, স্বচ্ছতার সাথে আমি নিয়োগ পক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আমি চেয়েছি যোগ্যব্যাক্তিই যোগ্য স্থানে বসুক। কোন প্রকার তদ্বির ও অনৈতিক উপায় ছাড়াও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরী পাওয়া যায় বিষয়টি সাধারণ মানুষ জানুক। এর ফলে চাকুরী প্রার্থীরা যোগ্যতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করবে এবং অনৈতিক উপায় অবলম্বন থেকে বিরত থাকবে।