সোমবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ডাকাতিয়া নদী ও সিআইপি অভ্যন্তরস্থ খাল খননসহ ৫ দফা দাবিতে সংগ্রাম কমিটির সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:২৯

অভিনব পন্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি, অর্ধকোটি টাকা ঋণ নিয়ে লাপাত্তা

মো: জাকির হোসেন
অভিনব পন্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি, অর্ধকোটি টাকা ঋণ নিয়ে লাপাত্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট শাখা। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেটে অফিসে ভুয়া পরিচয়ে চাকরি করেছেন এক যুগ। ভুয়া পরিচয়পত্র ও জাল সনদে চাকরি নিলেও এক যুগেও ধরা পড়েনি। হেলপার টু প্লাম্বার পদে চাকরি নিয়ে পেয়েছেন পদোন্নতি, ভোগ করেছেন ব্যাংকের সব সুযোগ-সুবিধা। চাকরিতে থাকা অবস্থায় গৃহনির্মাণের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, যা সুদসহ বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকা পরিশোধ না করে তিনি এখন গা ঢাকা দিয়েছেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তি চাকরিতে যোগদানের সময় দাখিল করা তথ্য অনুসারে, তার নাম মো. ফারুক মিয়া। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী থানার গান্দিনা গ্রামে। তারা বাবার নাম মো. আনোয়ার হোসেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, তার প্রকৃত নাম মিনহাজ মিয়া। তিনি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের উত্তরপাড়া বালিয়া গ্রামের মো. আব্দুল জলিল মিয়ার ছেলে।

অভিযোগে বলা হয়, ফারুক মিয়া বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট অফিসের প্রকৌশল বিভাগে পদোন্নতি পেয়ে হেলপার-টু-প্লাম্বার প্রথম মান পদে কর্মরত থাকাবস্থায় গত বছরের ৬ জুন থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় ব্যাংকের সংস্থাপন শাখা থেকে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু ‘প্রাপক অন্যত্র চলিয়া গিয়াছে তাই ফেরত’ মর্মে চিঠি ফেরত আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মো. ফারুক মিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী গান্দিনা গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং মিনহাজ মিয়া টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল মিয়ার ছেলে। ফারুক মিয়াকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার শিক্ষাসনদ সংগ্রহ করেছিলেন মিনহাজ মিয়া। এরপর ফারুকের নামে নিজেই চাকরি করতে থাকেন।

এদিকে প্রকৃত ফারুক মিয়া তার চাকরি না হওয়ায় (জানতেন না মিনহাজ তার নামে চাকরি করছেন) প্রবাসে চলে যান।

এদিকে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি নেওয়া মিনহাজ মিয়ার মামা সাইফুল ইসলাম মিয়াও বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটের প্রকৌশল শাখায় কর্মরত ছিলেন। মূলত তিনিই তার ভাগনে মিনহাজকে ফারুক মিয়া নামে বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটের কর্মকর্তাদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেন। সে সূত্র ধরেই ফারুকের নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পান মিনহাজ। এ ঘটনার পর সাইফুল ইসলাম মিয়াকেও ব্যাংক থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে মিনহাজ মিয়ার মামা সাইফুল ইসলাম দাবি করে বলেন, আমি ঘটনাটি জানতাম না। মিনহাজের সার্টিফিকেটে কিছু ভুল ছিল। তার নাম মিনহাজ আর স্কুলের সার্টিফিকেটে ছিল ফারুক। এ বিষয়টা সে আমাকেও বলেনি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক কালবেলাকে বলেন, ভুয়া পরিচয়ে এক যুগ একজন মানুষ কীভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করল, বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের ব্যাংক সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম মাহমুদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনা সত্য। তবে দায়িত্ব নিয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না। যেহেতেু অপরাধী ধরা পড়েছে, ফৌজদারি অপরাধে তার শাস্তি হবে।

তিনি আরও বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে পুলিশ প্রার্থীর কাগজপত্র ভেরিফিকেশন করেছে।

তথ্যসূত্র : কাল বেলা

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়