প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫১
রূপালী ব্যাংকের ৪৮৯ কোটি টাকা লোপাট, আসামি ৮ জন
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ৪৮৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রূপালী ব্যাংকের পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারি পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
|আরো খবর
মামলার আসামিরা হলেন- ডলি কন্সট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডলি আক্তার, রূপালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক খালেদ হোসেন মল্লিক, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সোলায়মান, স্থানীয় কার্যালয়ের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. গোলাম সারোয়ার, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, পল্টন শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক (সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মতিঝিল কর্পোরেট শাখা) এএসএম মোরশেদ আলী ও জিওগ্রাফ সার্ভে করপোরেশন লিমিটেডের মালিক মো. পারভেজ বিন কামাল।
মামলার এজাহারে সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জালিয়াতির মাধ্যমে মতিঝিল করপোরেট শাখা থেকে ৭৫১ কোটি ৯৯ লাখ ৮৬ হাজার ১০৬ টাকা উত্তোলন করে। বিভিন্ন সময়ে সুদাসলসহ ৩০৮ কোটি ৯০ লাখ ৬১০ টাকা পরিশোধ করেন। সুদসহ বাকি ৪৮৯ কোটি ৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৭৫ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন। দুদকের অনুসন্ধানে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকালে অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ডলি কন্সট্রাকশনের মালিক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি মতিঝিল করপোরেট শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলেন। এরপর ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কার্যাদেশ লিয়েন রাখার শর্তে ১০৪ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। এরপর সংশ্লিষ্ট শাখা, বিভাগীয় ও প্রধান কার্যালয়ের শিল্পঋণ বিভাগের সুপারিশের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৯৯০তম বোর্ডসভায় ৫৫ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর থেকে কয়েক দফায় প্রতিষ্ঠানটির নামে ঋণ অনুমোদন করা হয়। ডলি কনস্ট্রাকশন ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ঋণের ৭৫১ কোটি ৯৯ লাখ ৮৬ হাজার ১০৬ কোটি টাকা উত্তোলন করে এবং এর বিপরীতে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০৮ কোটি ৫৩ লাখ ৯০ হাজার ৬০১ টাকা পরিশোধ করে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৪৮৯ কোটি ৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৭৫ টাকা, যা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/৪০৬/৪২০/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।