প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:১৯
চার সন্তানের জনকের আত্মহত্যা! মৃত্যুর পর গায়েবী চিরকুট নিয়ে ধূম্রজাল

চাঁদপুরে বিভিন্ন এনজিও থেকে উত্তোলিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর ২০২৫) দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
|আরো খবর

ছবি :মৃত রুবেল
তিনি পেশায় একজন রিকশাচালক এবং তার স্ত্রী বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
হতভাগা স্ত্রী জানান, কয়েক বছর আগে স্বামী এক্সিডেন্টে আহত হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য এলাকার বিভিন্ন মানুষ এবং এনজিও ঋণ নেন। সেই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এলাকার মানুষ এবং এনজিওর লোকদের কাছে নানাভাবে অপমানিত হন। অপমান সহ্য করতে না পেরে তারা শহরের ব্যাংক কলোনীতে ভাড়া থাকতেন এবং বড় সন্তানরা নানার বাড়িতে থাকতো।
স্ত্রী আরও জানান, কয়েকদিন আগে তার স্বামী নিজ গ্রামে গিয়ে বিষপান করেন। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি জানান, বাড়িতে তার বড় ভাইয়ের ছেলে তাকে মারধর করেছে এবং ঋণের টাকার জন্যও মানুষ অপমান করেছে।
তিনি বলেন, স্বামীর ঋণ পরিশোধ করতে তিনি নিজেও বিভিন্ন বাসায় কাজ করেছেন। বর্তমানে চার সন্তান নিয়ে তিনি চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে তার মৃত্যুর পর একটি গায়েবী চিরকুট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে শাশুড়ি, শালী ও শ্যালককে দায়ী করা হয়। কিন্তু পরিবারের দাবি, রুবেল লেখাপড়া জানতেন না, শুধু নামটি লিখতে পারতেন। চিরকুটের হাতের লেখার সাথে তার ন্যাশনাল আইডির স্বাক্ষর মিল নেই।
স্থানীয়দের দাবি, মৃত্যুর তিনদিন পরে এই চিরকুট কীভাবে প্রকাশ্যে এলো তা তদন্ত করলে রহস্য বেরিয়ে আসবে। কারণ লেখাটি দেখে বোঝা যায় এটি কোনো শিক্ষিত মানুষের লেখা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে কয়েকটি শব্দ ভুলভাবে লেখা হয়েছে যাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে এবং স্ত্রীসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। চিরকুটের বিষয়েরও গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হবে।
ডিসিকে / এমজেডএইচ








