প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৮:৪৮
চালকসহ গাড়ি আটক, সড়ক অবরোধ
রায়পুরে মাদরাসার ছুটি শেষে বাড়ি যাওয়া হলো না ফাতেমার

প্রতিদিনের মতো মাদরাসা শেষে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে এক বান্ধবীকে নিয়ে সড়ক পার হচ্ছিলো ফাতেমা আক্তার। কিন্তু বাড়ি তো যাওয়া হলো না তার। মাথা একদিকে আর নিথর দেহ পড়ে আছে সড়কের আরেক দিকে। লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন রাখালিয়া মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় ৩টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত বিচারের দাবিতে রাখালিয়া গ্রামবাসী ও নিহতের স্বজনরা ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
নিহতের নাম ফাতেমা আক্তার (১৪)। সে দালালবাজার ইউনিয়নের মন্দার বাড়ির প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। আহত হয়েছে নিহতের বান্ধবী একই শ্রেণীর হালিমা আক্তার (১৪)। সে একই শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
শনিবার (২৬ জুলাই ২০২৫) দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে রায়পুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপরে রাখালিয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যায় রায়পুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের রাখালিয়া গ্রামে কভার্ডভ্যান ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সালেহা বেগম নামের এক নারীকে উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। সিএনজির যাত্রী এক নারীসহ আরো ৪ জন আহত হয়।
রায়পুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রাজন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “মাদরাসা ছুটির পর ফাতেমা তার বান্ধবীকে নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় সেখানে বেপরোয়া গতিতে লক্ষ্মীপুর থেকে রায়পুরে ছেড়ে আসা আনন্দ পরিবহন তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ফাতেমার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথক হয়ে যায় তার দেহ। এ সময় অন্য শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। পরে সেখান থেকে আহতকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, ফাতেমা আক্তার মরিয়মের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় চালককে আটক এবং আনন্দ পরিবহনটি জব্দ করা হয়েছে ।
নিহতের স্বজন মাসুদ হোসেন বলেন, “আনন্দ পরিবহন সবসময় তাদের সিডিউল অনুযায়ী সময় বাঁচানোর জন্যে দালালবাজারের পরেই রায়পুরের উদ্দেশ্য বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে আসছে গত কয়েক বছর । এভাবে তারা অনেক মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।''
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, শনিবার দুপুরে ছুটি শেষে রাখালিয়া গ্রামে মহাসড়ক পার হতে গিয়ে এক মাদরাসা ছাত্রী নিহত ও এক ছাত্রী আহত হয়। শুক্রবারও সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও ৪জন আহত হয়। সঠিক বিচারের বিষয়টি আশ্বস্ত করলে মানুষ সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। চালক ও গাড়ি আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।