প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:৩৩
চাঁদপুর সাহিত্য সন্ধ্যা ও বিশ্ববাঙালি মৈত্রী সম্মাননা

চাঁদপুরে সাহিত্য, সৌহার্দ্য ও বাঙালি আত্মপরিচয়ের এক অনন্য মিলনমেলা হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়েছে 'চাঁদপুর সাহিত্য সন্ধ্যা ও বিশ্ববাঙালি মৈত্রী সম্মাননা-২০২৫'। সাহিত্য মঞ্চ ও বিশ্ববাঙালি সংসদ বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন মিলনায়তনে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সকল বীর শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। বাঙালির আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণ করে এই নীরবতা মিলনায়তন জুড়ে সৃষ্টি করে এক গভীর আবেগঘন পরিবেশ।
এরপর 'সমাজ বিনির্মাণে লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবদান' শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সাহিত্য ও সমাজকর্মে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত একাধিক গুণী সাহিত্যিক, গবেষক ও সমাজকর্মীর হাতে তুলে দেয়া হয় 'বিশ্ববাঙালি মৈত্রী সম্মাননা'।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি ও সাংবাদিক হাসনাইন সাজ্জাদী। উদ্বোধন করেন কবি ও গীতিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আবদুল আউয়াল। প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন তেজগাঁও কলেজের অধ্যাপক কবি ও কণ্ঠশিল্পী মাহবুবা বেগম।
বিশ্ববাঙালি সংসদ বাংলাদেশের সভাপতি, কবি ও সাংবাদিক লোকমান হোসেন পলার সভাপতিত্বে এবং চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চের সভাপতি আশিক বিন রহিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাহিত্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক লেখক ও অনুবাদক সাদ আল-আমিন।
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন কবি মাহবুবা রহমান লাকী, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সহ-সভাপতি আবদুল্লাহিল কাফী, কসবা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল খায়ের স্বপন, কবি ও বাচিক শিল্পী শামীমা আফরোজ হ্যাপী, সমাজসেবক ও লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠাতা ফজলুল হক টিপু, চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি, কবি ও অনুবাদক মাইনুল ইসলাম মানিক, চাঁদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি ম. নূরে আলম পাটওয়ারী, কবি ও লেখক মামুন চৌধুরী, কবি ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা শরীফ খান দীপু, কবি ও অনুবাদক নূরুল হক, পাক্ষিক চাঁদনগর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সাবিত্রী রাণী ঘোষ, সামাজিক সংগঠন আপনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি রোটারিয়ান ডা. রাশেদা আক্তার এবং কবি মো. রবিউল ইসলাম খান।
সাহিত্য সন্ধ্যায় কবিতা পাঠ করেন এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, কবি ও লেখক মুখলেছুর রহমান ভূঁইয়া, মনিরুজ্জামান বাবলু, কবির হোসেন মিজি, মুহাম্মদ হানিফ, জাহিদ নয়ন, আরিফুল ইসলাম শান্ত, ইমরান শাকির ইমরু, ইয়াসিন দেওয়ান প্রমুখ। সবশেষে প্রান্তিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম কাজী রাসেলের নেতৃত্বে সংগঠনের শিল্পীরা লোকজ গান পরিবেশন করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা সাহিত্য ও সমাজের পারস্পরিক সম্পর্ক, প্রজন্মান্তরের সাহিত্য বিনিময় এবং বিশ্বব্যাপী বাঙালি সংস্কৃতির বিস্তারে সম্মিলিত উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা বলেন, সাহিত্য সমাজের দর্পণ। এখানেই মানুষের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন ও সংগ্রামের ভাষ্য সবচেয়ে নিখুঁতভাবে ধরা পড়ে।
বক্তারা আরো বলেন, ভাষা ও সাহিত্যের বন্ধনই বিশ্ববাঙালিকে এক সুতোয় গেঁথে রাখে। এই মৈত্রী সম্মাননা কেবল একটি স্মারক নয়, এটি বাঙালির চেতনাগত ঐক্য ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের স্বীকৃতি।
সমগ্র অনুষ্ঠানজুড়ে কবিতা, কথামালা ও আন্তরিক সৌহার্দ্যের আবহে চাঁদপুর সাহিত্য সন্ধ্যা পরিণত হয় এক স্মরণীয় সাংস্কৃতিক আসরে।
আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতেও বাঙালির সাহিত্য ও মৈত্রীর বন্ধনকে দৃঢ় করতে এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে।








