বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ যৌথ বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট ৯০ যানবাহনে তল্লাশি।। ১২ মামলায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা, ৬ গাড়ি জব্দ
  •   হরিণা থেকে দু মাদক ব্যবসায়ী আটক
  •   কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩৯ জনের তথ্য চেয়েছে দুদক

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ২২:২২

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির নির্বাচন

মতলব উত্তরের ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ২৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রিজাইডিং অফিসার !

মতলব উত্তর ব্যুরো।।
মতলব উত্তরের ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ২৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রিজাইডিং অফিসার !

মতলব উত্তর উপজেলায় ১জন সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলার ২৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব বাগিয়ে নেয়ার বিষয়টি এখন আলোচনায় সবার শীর্ষে । এমনকি আইনকে পাশ কাটিয়ে তিনি উপজেলার ১৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বেও রয়েছেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা প্রিজাইডিং অফিসার হওয়ার শর্ত থাকলেও উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল আলম এ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বে থেকে কৌশলে ২৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রিজাইডিংয় অফিসারের ক্ষমতা নিয়ে নেয়ার বিষয়ে পুরো উপজেলায় এখন সমালোচনার ঝড় বইছে। তিনি ১৮টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৫টি স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটি নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে আছেন।

উপজেলার ক'টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ উপজেলায় প্রথম শ্রেণীর ২০-এর অধিক কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও অর্থলোভী ও কৌশলবাজ একজন সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উপজেলার ৪২টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনা করার ক্ষমতা তথা প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব নেয়ার বিষয় সাধারণ মানুষের চোখে আশ্চর্যের হলেও এ অফিসার মূলত এরকমই বলে জানান স্থানীয় বেশ ক'জন প্রধান শিক্ষক। তারা জানান, বিগত ১৫ বছর তিনি তৎকালীন রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সাথে ভাগ-বাঁটোয়ারা ও বিশেষ সখ্যতার বদৌলতে এ উপজেলায় কর্মরত ছিলেন--এটা আশ্চর্যের বিষয়; তখন বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন তিনি একাই করতেন--এটাও আশ্চর্যের; স্কুল নির্বাচনে মাঠের অবস্থা ভালো এমন অন্তত দু প্রার্থীর সাথে কন্ট্রাক্ট করে তাদেরকে হুবহু ব্যালট-ছিল ছাপিয়ে দিয়ে বিশ্বস্ত ভোটারদের মাধ্যমে বাক্সে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করে পাসের ব্যবস্থা করে দিতেন--এটাও আশ্চর্যের। স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্বাচন ও তার দাপ্তরিক কাজে বহু আশ্চর্যের বিষয় সাধারণ মানুষের কাছে আলোচনার বিষয় হলেও এ উপজেলার প্রধান শিক্ষকরা মোটেও আশ্চর্যান্বিত নন। কারণ, তিনি অসম্ভব ক্ষমতাধর। আর তিনি যে কোনো অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন--সেটা এখানকার প্রধান শিক্ষকরা খুব ভালো করেই জানেন। তাছাড়া ওনার মতের বাইরে গেলে পরিণতি কী হতে পারে সেটাও প্রধান শিক্ষকদের অজানা নয়।

ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষকরা আরো অভিযোগ করে বলেন, এই সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার 'আশরাফুল স্যার' বিগত ১৫ বছর এ উপজেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে থেকেছেন প্রিজাইডিং অফিসার। প্রিজাইডিং অফিসারের সম্মানীর নাম করে এবং বিভিন্ন অজুহাতে তিনি প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজারেরও অধিক টাকা হাতিয়ে নিতেন।

উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রিজাইডিং অফিসার আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে বেশ ক'টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হতে বিগত সময়ের স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপিয়ে প্রার্থীর কাছে বিক্রিসহ নানা অভিযোগ থাকলেও উপজেলা বা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে তাদের কেউই সাহস পাননি। কেননা তার হাত নাকি অনেক লম্বা।

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলার ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, মতলবের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে নিজের পকেট ভারী করতে এই আশরাফুল সাহেবের কোনো জুড়ি নেই। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আমার স্কুল থেকে অর্থ লোপাটের পাঁয়তারার কারণে আমি ওনাকে এই উপজেলা থেকে অন্যত্র বদলি করালেও তদবিরের জোরে খুব দ্রুতই তিনি আবার এ উপজেলায় ফিরে আসেন। এ উপজেলা যেনো ওনার টাকা বানানোর ফ্যাক্টরি।

কথা হলেই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও ২৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রিজাইডিং অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, আমি প্রিজাইডিং অফিসার হতে পারি কি পারি না এবং আমি কোন্ গ্রেডের অফিসার কেউ না জানলে আইসা জাইনা যাক। আর এতোগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রিজাইডিংয়ের দায়িত্ব তো আমি নেই নাই, কর্তৃপক্ষ আমাকে দিয়েছে।

এ বিষয়ে কথা হলে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুসুম মনি জানান, প্রথমদিকে তাকে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির প্রিজাইডিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু পরে আর দেয়া হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়