আমাদের সহযোদ্ধাদের গায়ে ফ্যাসিবাদের কেউ আঘাত করলে বিএনপি বসে থাকবে না ------শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততায় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে চাঁদপুরে জাতীয়তাবাদী যুবদল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই ২০২৫) বিকেলে চাঁদপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা যুবদল এই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. একেএম সলিম উল্যাহ সেলিম ।

জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল আমিন খান আকাশের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার। জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি দেওয়ান মো. সফিকুজ্জামান, খলিলুর রহমান গাজী, ফেরদৌস আলম বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিমুছ সালাম, চাঁদপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আক্তার হোসেন মাঝি ও সদস্য সচিব অ্যাড. হারুনুর রশিদ, জেলা বিএনপি নতা আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক হযরত আলী ঢালী, যুব বিষয়ক সম্পাদক বশির আহমেদ রিপন খান, জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আকতার হোসেন সাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল পাটোয়ারী, পারভেজ আলম রবিন, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক শাহজাহান কবির খোকা, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম নজুসহ যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, সরকারের ব্যর্থতায় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। যারা দেশের মঙ্গল চায় না তারা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সম্পর্কে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। তারা বিএনপি ও তারেক রহমান নিয়েও ষড়যন্ত্র করছে। যুবদলের নেতা-কর্মীরা বেঁচে থাকতে তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবো না।

শেখ মানিক আরো বলেন, আজকে এই প্রতিবাদের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিতে হবে দেশে আর কোনো স্বৈরাচারের উত্থান হতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, গেলো ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি এবং সেই আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন করিয়েছি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।

শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির উদ্দেশ্যে বলেন, এই দলে যেসব নেতা রয়েছেন তারা আমাদের সন্তানতুল্য। অথচ আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও তারা কথা বলছে। এনসিপির নেতৃবৃন্দকে বলবো, তোমরা যেই অভিভাবকের পেছনে হাঁটছো তারা মানুষকে রগকাটা শেখায়। তোমরা ঠিক করো কী করবে। দেশপ্রেমিক অভিভাবকের পেছনে থাকবে, না তাদের পেছনে থাকবে। বুধবার যে ঘটনা গোপালগঞ্জে হয়েছে, সবার আগে বিএনপি মহাসচিব এবং তারেক রহমান নিন্দা প্রকাশ করেছেন। আমাদের সহযোদ্ধাদের গায়ে ফ্যাসিবাদের কেউ আঘাত করবে তাতে বিএনপি বসে থাকবে না। তোমরা প্রকাশ্যে আমাদের নেতার কাছে ক্ষমা চাও। আমাদের নেতা তারেক রহমান, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া উদার মনের নেতা। অবশ্যই তারা তোমাদের ক্ষমা করবেন। আমরা আগামীদিনে একসাথে সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবো।

শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের দলের বদনাম করার জন্যে বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে সবাই সজাগ থাকতে হবে। কোনো অপপ্রচারের ফাঁদে পা দিবেন না। কেউ কোনো মাদকের সাথে লিপ্ত থাকবেন না। মাদকের সাথে যে সম্পৃক্ত থাকবে, সে বিএনপিতে থাকতে পারবে না। দলের অতি উৎসাহী হয়ে কারো নামে ব্যানার বানাবেন না। আমাদের নেতা তারেক রহমান যাকে নমিনেশন দেবেন আমরা তার জন্যে নির্বাচন করবো।

সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম বলেন, বিএনপির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ছাত্র-জনতার মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না। আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। সামনে অদৃশ্য শক্তির সাথে লড়াই। তারা প্রকাশ্য হয়ে গেছে। জামাত-শিবির স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ঠাঁই হয়েছে দিল্লিতে, আর তারা যাবে পাকিস্তানে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের জিয়ার আদর্শের সৈনিক হতে হবে। প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী যোগ দেয়। এদিন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জোড়পুকুর পাড়, কালীবাড়ি, বাইতুল আমিন মসজিদ চত্বর হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চাঁদপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় যুবদলের নেতা-কর্মীদের স্লোগানে স্লোগানে চাঁদপুর শহরের রাজপথ কম্পিত হয়ে উঠে।