প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫, ১৮:০১
খোদ বিচারক এসে মিটালেন সম্পত্তিগত বিরোধ

সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে মামলা হয় চাঁদপুরের আদালতে বেশ কয়েক বছর আগে। দলিলের চৌহুদ্দিতে রাস্তা উল্লেখ নেই, সিএস কিংবা বিএস-এ কিছুটা গলদ। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে ভিন্ন ভিন্ন যুক্তি তর্ক, এ নিয়ে বহু সালিস, বহু মাপ হয়েছে, কিন্তু সমাধান আর হয়নি। একপরেই এক পক্ষ যায় আদালতে। মামলা চলছে তো চলছে, স্থায়ী সমাধান আর হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিরোধীয় সম্পত্তিস্থলে সরজমিনে আসেন বিচারক স্বয়ং। তিনি চাঁদপুরের আমলী আদালত (হাজীগঞ্জ)-এর সিনিয়র সহকারী জজ মো. আবদুল আলীম, সাথে আসেন সরকারি আমিন আর উভয় পক্ষের আইনজীবীগণ। ঘন্টা দুয়েকের মাপের পরে মিটে গেলো বিরোধ। বাদী-বিবাদী সব মেনে নিয়ে মিলে গেলেন, আর দিলেন কোলাকুলি। ঘটনাটি গত শুক্রবার (২৩ মে ২০২৫) হাজীগঞ্জের ৭ নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামের।
|আরো খবর
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ মো. আবদুল আলীমের আদালতে সম্পত্তিগত মামলাটি উঠে। বিচারক উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে সরজমিনে আসার সিদ্ধান্ত নেন। যে কথা সেই কাজ। হাজীগঞ্জ উপজেলায় দেওয়ানী মোকদ্দমার নালিশি জমি সরেজমিনে দেখতে এই বিচারক হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং পশ্চিম বড়কুল ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামে আসেন শুক্রবার। তাঁর সঙ্গী হন মামলার বাদী, বিবাদী, উভয় পক্ষের আইনজীবীগণ, আদালতের পেশকার, পুলিশ, সার্ভেয়ারগণ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ সময় বিজ্ঞ বিচারক বাদী, বিবাদীর মধ্যে বেশ কিছু বছর ধরে চলে আসা ভূমি বিরোধ মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে জমির মাপ শেষের পর মিটিয়ে দেন। তিনি বাদী, বিবাদী উভয়ের সম্মতি ও আগ্রহে চূড়ান্ত মিমাংসা করে দেন এবং বিরোধীয় জমির সীমানা স্থায়ীভাবে চিহ্নিত করেন। তাৎক্ষণিক বাদী-বিবাদী উভয়ে মেনে নিয়ে নিজেরা কোলাকুলি দিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিজ্ঞ বিচারকের বুদ্ধিমত্তাতে খুশি হয়ে বাহবা দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মোকদ্দমার বাদী পক্ষ আদালত কর্তৃক মোকদ্দমার নালিশি জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে মোকদ্দমাটি তাৎক্ষণিক আপোষ মীমাংসা করতে দেওয়ানী কার্যবিধি ১৯০৮-এর অর্ডার ১৮, রুল ১৮ ও
ADR (Alternative Dispute Resolution)
সংক্রান্ত বিধানের অধীনে আবেদন করেন। বাদীর এই আবেদনে শুনানিকালে বিবাদীপক্ষ অনাপত্তি দেয়। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে মোকদ্দমার নালিশি জমিতে সরেজমিন পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সে অনুযায়ী সরেজমিন পরিদর্শনে এসে বিজ্ঞ বিচারক সফলভাবে মোকদ্দমাটির ভূমি বিরোধের স্থায়ী সমাধান করেন।
এদিন উপস্থিত ছিলেন বাদী মো. শফিকুর রহমান, বিবাদী মো. মমিনুল হক তালুকদার,
অ্যাডভোকেট মো. নূরুল হক, অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ।