কুরআনে হাফেজ হলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আশেক এলাহী

কচুয়ায় পুরো ৩০ পারা কুরআন মুখস্থ করে হাফেজ হলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আশেক এলাহী। প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অন্ধ হওয়ার কারণে ছোটবেলা কুরআন শিখতে পারেননি। শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে ১৭ বছর বয়সে এসে গত ২ বছর টানা শুনে শুনেই পুরো কুরআনুল কারিম মুখস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন । তিনি কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের আলী আশ্রাফের ছেলে। তাদের পরিবারে রয়েছে বাবা, মা ও ৩ বোন।

আশেক এলাহীর বাবা আলী আশ্রাফ ও মা হোসনেয়ারা বেগম জানান, আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিলো ছেলেকে হাফেজ বানাবো। দরিদ্র ও অন্ধ হওয়ার কারণে সে ইচ্ছা পূরণ ততোটা সহল ছিলো না। আমার ছেলের প্রবল আকাঙ্ক্ষার কারণে আজ সে শুনে শুনে পুরো কুরআন মুখস্থ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রায় ২ বছর পূর্বে কচুয়া জামিয়া ইসলামিয়া আহমাদিয়া মাদরাসায় তাকে ভর্তি করাই। সেখানে গত ২ বছর ওস্তাদের কুরআন পড়া শুনে এখন পুরো ৩০ পারা কুরআন মুখস্থ করেছে আশেক এলাহী। বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে হিফজ ফাইনাল পরীক্ষায় ও ২০২৪ সালে হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয় সে। এজন্যে আল্লাহর দরবারে লাখো কোটি শোকরিয়া জানাই।

মাদ্রাসার শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, দু বছর পূর্বে আশেক এলাহী এ মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সকলের সহযোগিতায় সে শুনে শুনে কুরআন মুখস্থ করেছে। আসলে সে একজন অন্ধ হয়েও নিজেকে কখনো দমিয়ে রাখতে শিখেনি। নিজেকে কুরআন শিক্ষায় শিক্ষিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে সে।

মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক হাফেজ মো. মোস্তফা বলেন, বর্তমান যুগে দৃষ্টি থেকেও অনেকে কুরআন শিখতে চায় না, সে প্রেক্ষিতে আশেক এলাহী ব্যতিক্রম উদাহরণ। ইচ্ছা ও চেষ্টা থাকলে কুরআন শিক্ষা সম্ভব। তার সফলতা ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন তিনি।

এদিকে আশেক এলাহী অন্ধ হলেও সহপাঠীদের সাথে নিয়মিত খেলাধুলা করেন। পুরো কুরআন মুখস্থ করায় খুশি তার সহপাঠীরা।