প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৫২
কাঠ মিস্ত্রী দম্পত্তির নবজাতক বিক্রির অভিযোগ !
দিন মজুর কাঠ মিন্ত্রীর সন্তান বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে! ওমর ফারুক নামের এই নবজাতক ভূমিষ্ট হওযার মাত্র ১৫ দিনের মাথায় নতুন মা'য়ের কোলে তুলে দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের বেতিয়াপাড়া গ্রামের কৈয়ারপুল সংলগ্ন তালুকদার বাড়ির। তবে নবজাতক ওমর ফারুকের বাবা কাঠমিস্ত্রি মো: সেলিম তার স্ত্রী মৌসুমি'র উপস্থিতিতে শিশুটি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বিক্রি নয় আমার জেষ্ঠস্ (স্ত্রী"র বড় বোন ) নি:সন্তান হওযার কারনে তাকে আমরা ষ্ট্যাম্প করে পালক ( দত্তক) দিয়েছি। শিশুটি এই দম্পত্তির তৃতীয় সন্তান।
|আরো খবর
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, তারা দারিদ্রতার কারণে স্বচ্ছলতার সাথে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন না। এমন কি তাদের বসত ঘরটি একটি রুমের টিনের ঘর। টাকার অভাবে স্ত্রী মৌসুমির চিকিৎসা এখনো করতে পারছেন না। যার কারণে নবজাতককে নিকট আত্মীয়ের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
সরজমিনে সোমবার (১৫ এপ্রিল দুপুরে) সেলিম মিয়ার বেড়াহীন ঘরের অংশে বসে কথা হলে সেলিম মিয়া জানান, তার ৫ বছর বয়সি একটি মেয়ে ও ৩ বছর বয়সি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ৩০ মার্চ বিকালে উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সাইট সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্ম দেন স্ত্রী মৌসুমি বেগম। সাইড সিজারের ক্ষত এখনো শুকায়নি স্ত্রী অনেক অসুস্থ। ঔষধ কিনতে পারছেন না টাকার অভাবে। এখন বিছনায় শষ্যাশায়ী মৌসুমী। বাকিলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শাহনেওয়াজ আপাকে ফোন দিয়েছিলাম এখন কি করবো কিন্তু তিনি কোন কিছু না বলে ফোন কেটে দেন।
অপর এক প্রশ্নে মো: সেলিম মিয়া জানান, গত পরশু (১২ এপ্রিল) জেষ্ঠস এসে ওমর ফারুককে কচুয়াতে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেছে।
এ সময় তিনি জানান, ১৪ বছর পূর্বে তাঁর জেষ্টস (স্ত্রীর বড় বোন) ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়েছে। তাদের কোন সন্তান না হওয়ার কারনে সংসারে অনেক কথা শুনতে হয় তাকে। যার কারনে তাদের দ্বিতীয় সন্তানকে ফাতেমা বেগম দত্তক নিতে চেয়েছেন। কিন্তু তারা দেননি। তৃতীয় সন্তানের জন্মের দিন ফাতেমা বেগম আবারও তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। যার ফলে মানবিক কারণে এবং আত্মীয়তার দিক বিবেচনা করে সদ্য নেওয়া নবজাতককে দত্তক দেন।
সন্তান বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে মো: সেলিম বলেন, আমরা পালক (দত্তক) দিয়েছি, তারা (ফাতেমা বেগম) টাকা দিতে চেয়েছে, আত্বীযতার কারনে আমরা নেইনি। তবে স্ট্যাম্পের মাধ্যকে ছেলেকে দত্তক দেওয়া হয়েছে। স্ট্যাম্প এখনো রেডি করা হয়নি, এক আত্মীয়কে লিখতে দেওয়া হয়েছে।
দেশের আইন অনুযায়ী স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর করা অনাপত্তিপত্রের মাধ্যমে শিশু দত্তক নেওয়ার আইনগত কোন বৈধতা নেই। কোন শিশুকে দত্তক নিতে হলে, ওই শিশুর বয়স ১৮ বছরের নিচে এবং ১৮৯০ সালের অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইনের অধীনে বৈধ অভিভাবকত্বের জন্য পারিবারিক আদালতে আবেদন করতে হবে।
এ ব্যাপারে হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোটা. ইউসুফ প্রধানীয়া সুমন জানান, কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, নবজাতক বিক্রির বিষয়টি জানতে পেরেছি। ইতিমধ্যে আমি ঐ বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল বলেন, দত্তকের আইনগত বৈধতা রয়েছে। তবে যথাযথ নিয়মের মাধ্যমে হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যদি আইনের ব্যতয় ঘটে এবং অন্য কোনো কারণ থেকে থাকে তাহলে বিষয়টি দেখা হবে। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।