প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ১৫:২৫
মিথ্যা ওয়ারিস সনদ নিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি খারিজ করলেন বড় ভাই!
চুরিতো চুরি তার উপরে সিনাজুড়ি। এমনই একটা ঘটনাই ঘটেছে উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নে। নিজের ভাই-বোনদের বঞ্চিত করে মিথ্যা ওয়ারিস সনদ নিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি নিজের নামে খারিজ করে নিয়েছেন বড় ভাই নুর মোহাম্মদ। সে সম্পত্তি আবার স্ত্রীর নামেও দলিল করে দিয়েছেন নুর মোহাম্মদ।
|আরো খবর
ভাই নাকি রক্তের বাঁধন; হয় যদি বিচ্ছেদ নারীর কারণ। কিন্তু এই ভাই কীসের কারণে এই কাজটি করলেন?
নুর মোহাম্মদ উপজেলার পরিচিত মুখ। হয়তো নামে তাকে অনেকই চিনবে না। বৈশিষ্ট্যে চিনবে, নুর মোহাম্মদ বিভিন্ন হাঁটে বাজারে জন্ডিসের ঔষধ বিক্রি করেন। ‘আমার বাড়ি গাব্দের গাঁও হাজী বাড়ি, .......... জন্ডিস জন্ডিস’।
জন্ডিসের ঔষধ বিক্রির কারনে এলাকায় তার মূল নাম হরিয়ে গিয়ে ‘জন্ডিস’ নামেই উনি অধিক পরিচিত। রিক্সায় করে ভেষজ ঔষধ বিক্রি করেন উপজেলার প্রায় প্রতিটি হাঁটে।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হাজী বাড়ির মৃত দুল মিয়ার বড় ছেলে নুর মোহাম্মদ ২০১৩ সালের ২১ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদে মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটি ওয়ারিশ সনদ নেন।
সেখানে দেখা যায় মরহুম দুলা মিয়ার একমাত্র ওয়ারিশ নুর মোহাম্মদ। বাস্তবতা হলো মরহুম দুলা মিয়ার স্ত্রী মৃত ছবুরা খাতুন। এবং দুই ছেলে- নুর মোহাম্মদ ও ছালেহ আহম্মদ। দুই মেয়ে হালিমা খাতুন ও ছলেমা খাতুন।
কিন্তু নুর মোহাম্মদ ভুল কাগজপত্রের মাধ্যমে বি.এস ৫৮৫ নং খতিয়ানভূক্ত ১৫৪২ দাগের মোট ২৬ শতাংশের মধ্যে ২৩ শতাংশ নিজের নামে খারিজ করে নেন।
পরবর্তীতে তিনি তা তার স্ত্রীকে দলিল করে দেন। সার্ভেয়ার দ্বার মাপজরিপের বন্টকনামায় এই ২৩ শতাংশ ভূমির মধ্যে ছালেহ আহাম্মদ এর ১১ শতাংশ রয়েছে বলে ছালেহ আহম্মদ দাবী করছেন।
এই অবৈধ খারিজ বাতিল চেয়ে তিনি ফরিদগঞ্জ ভূমি অফিসে একটি আবেদন করেন এবং নুর মোহাম্মদ ও তার পরিবার যাতে জোর করে তার সম্পত্তি দখল করতে না পারে সে জন্যে আদালতেও একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে সালেহ আহম্মদ বলেন ‘আমার বড় ভাই প্রতারণা করে ইউনিয়ন পরিষদে ভুল তথ্য দিয়ে বাবার ২৩ শতাংশ জায়গা নিজের নামে খারিজ করে নেয়। সেই সাথে তিনি ঐ সম্পত্তি তার স্ত্রীর নামে লিখে দেন।
আমি এই অবৈধ খারিজের বিরুদ্ধে আবেদন করলেও ভূমি অফিস কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
আমি আমার সম্পদ রক্ষার জন্যে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চাচ্ছি।’
নুর মোহাম্মদকে না পেয়ে তার ছোট ছেলে শেখ ফরিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আলাদাভাবে ২৩ শতাংশ ভূমি আমার বাবা খারিজ করেছেন এটা সত্য; আমরা সেটা সংশোধন করতে চাই, কিন্তু সে পথে বাঁধা সৃষ্টি করছে আমার চাচা সালেহ আহম্মদ।
নিয়ম অনুসারে পৈত্রিক সম্পত্তির প্রতিটি দাগে সব সন্তানরা অংশ পাবে কিন্তু আমার চাচা জোর করে রাস্তার পাশের জমি খাচ্ছে আর আমরা ভিতরের বাগান এবং নাল জমিতে আছি।
এছাড়া উনি আমাদেরকে না জানিয়ে বন্টকনামা করার পূর্বেই অন্যত্র জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। উনি কোনো সালিশও মানছেন না। আমরাও চাই সুষ্ঠ এবং সুন্দর সামাধান। আমার চাচা সালেহ আহম্মদ সামাধানের পথে না হেঁটে উনি আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিচ্ছেন।’