প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৯:১৬
চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে লঞ্চ ভাড়া বৃদ্ধি : বিপাকে যাত্রী সাধারণ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ১১ দিনের ব্যবধানে এবার লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হলো। এতে বিপাকে পড়েছে নদীকেন্দ্রিক যাতায়াতকারী চাঁদপুর-ঢাকা,না'গঞ্জ,শরিয়তপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী সাধারণ। লঞ্চের ভাড়া বড়ানোর প্রজ্ঞাপন পেয়ে এমন খুশি হয়েছেন লঞ্চ-মালিকরা খুশি হলেও বাড়তি ভাড়ায় হতাশ যাত্রীরা।
|আরো খবর
চাঁদপুর-ঢাকার সাধারণ ডেকের সাধারণ ভাড়া ছিল ১০০টাকা।করোনাকালীন সময় ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ১৫০ টাকা।আর এখন জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধিতে এই ভাড়া ২০০ টাকা করা হয়েছে। লঞ্চের নিচতলার চেয়ার সিট ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা,উপরে এসি প্রথম শ্রেণির চেয়ার ৩৫০ টাকা থেকে এখন ৪০০ টাকা করা হয়।আর কেবিন আগে ছিল সিঙ্গেল এসি ৫০০ টাকা।দু'দফা ভাড়া বাড়ায় এখন ৬০০ টাকা থেকে ৭০০/৮০০ টাকা করা হয়েছে। অন্যান্য কেবিনের ভাড়াতো আরো বেশি।
জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণের পরিপ্রেক্ষিতে সমন্বয় করেনৌযানের যাত্রী ভাড়া ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করে গত ১৬ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ সিদ্ধান্ত ওইদিন থেকেই বাড়তি ভাড়া আদায় কার্যকর শুরু হয়ে যায় লঞ্চগুলোতে।
বুধবার ঢাকাগামী যাত্রী পুরাণবাজারের ব্যবসায়ি ইমদাদ শেখ (৪৫) জানান,ভোর ছয়টার আল বোরাক লঞ্চে উঠেন।তিনতলায় প্রথম শ্রেণির চেয়ার টিকেট ৪০০ টাকা নেয়া হয়।আগে এ ভাড়া ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা ছিল।কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে ডেকের,চেয়ারের এবং কেবিনের ভাড়া বেশি বাড়ানো হয়েছে। এখন আমাদের বাড়তি ভাড়া দিয়েই ঢাকা চাঁদপুর আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। এটি আমাদের ওপর জুলুম।
রায়পুর লক্ষ্মীপুরের আবু ইউসুফ (৬৫) নামে আরেক যাত্রী বলেন, লিটারপ্রতি যে টাকা বেড়েছে, লঞ্চ-মালিকরা তার থেকে দেড় গুণ ভাড়া বাড়িয়েছে। আমরা যাত্রীরা সব সময় ভাড়া নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছি। নানা ছুতোয় ভাড়া বাড়ানো হয়। অথচ আমাদের আয় বাড়ছে না।
বিআইডব্লিউটিএ'র চাঁদপুর নদী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। প্রথম ১শ’ কিলোমিটারের মধ্যে ৩০ শতাংশ ভাড়া বাড়ার ফলে এখন ২.৩০ টাকার সঙ্গে .৭০ টাকা যোগ হয়ে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা। চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে পূর্বে ডেকের ভাড়া ছিল ১৫০ টাকা। এখন ৫০ (৩০ শতাংশ) টাকা বাড়িয়ে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা।
প্রতিদিন চাঁদপুর-ঢাকা রুটে ২৪টি বিলাসবহুল লঞ্চ এবং চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জের মধ্যে ১৪টি এবং দক্ষিণাঞ্চল ও শরীয়তপুরের মধ্যে ৮ থেকে ১০ টি ছোট বড় লঞ্চ চলাচল করছে।এসব এলাকার লোকজন ভাড়া বাড়ার কোনো নোটিশ কিংবা ঘোষণা পায়নি।
ভাড়া বাড়ানোর কারণে যাত্রীরা বিশেষ করে স্বল্প বেতনের যারা ঢাকায় চাকরি করেন বা আত্মীয়-স্বজন রয়েছে তাদের সাথে দেখা করতে এবং চিকিৎসা নিতে যাওয়া মানুষগুলো চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
তারা লঞ্চের অতিরিক্ত ভাড়ায় বিপাকে পড়েছেন।সরকারের কাছে অনুরোধ সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ভাড়া কমানোর দাবি করনে।
লঞ্চের কেরানিরা জানান, সরকারিভাবে ৩০ ভাগ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আমরা সেভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছি। ঢেকের ভাড়া ২০৪ টাকা, প্রথম শ্রেণী এসি চেয়ার ৩৫০ টাকা, বিজনেস ক্লাস এসি চেয়ার ৪০০ টাকা এবং নিচ তলার চেয়ার ২৭০ টাকা নেয়া হচ্ছে। সরকারি ভাড়া আরও বেশি। কিন্তু আমরা কিছু কম নিচ্ছি।