প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২২, ১৭:৪৯
চাঁদপুর স্টেডিয়ামে পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডাঃ দীপু মনি এমপি
পদ্মা সেতু আমাদের সাহস সক্ষমতা আত্মবিশ্বাস ও আত্ম মর্যাদার প্রতীক
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ যেমন ছিল বঙ্গবন্ধুর তেমনি শেখ হাসিনার। কাজেই শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু আমাদের সাহস সক্ষমতা আত্মবিশ্বাস আত্ম মর্যাদার প্রতীক। শোককে শক্তিতে পরিণত করার প্রতীক।
|আরো খবর
তিনি গতকাল ২৫ জুন শনিবার দুপুরে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
প্রধান আলোচক এর বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডঃ মোঃ মশিউর রহমান। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম-বার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দ বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম দেওয়ান। এসময় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা,পেশাজীবীবৃন্দ, সুধীজন,দলীয় নেতাকর্মি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ সর্বস্তরের মানুষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং প্রিয় নেত্রী জননেত্রী দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশের প্রতিটি দিনই ছিল শেখ হাসিনার জন্য চ্যালেঞ্জের। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, মুক্তির পথ মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু ঘাতকের দল একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি তারা তাকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। তারপর দুঃসহ একুশটি বছর বঙ্গবন্ধু কন্যার নিরন্তন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গত ৪১ বছর ধরে ক্রমাগত সংগ্রাম করে চলেছেন পিতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে।
পিতার মতোই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের জন্য যা কিছু করা দরকার বাঙালির প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে তার সবকিছুই করে চলেছেন শেখ হাসিনা। সে কারণে ২০২১ সালে রূপকল্প দিয়েছিলেন, আজকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। সেজন্য আজকে আমরা চাঁদপুর স্টেডিয়ামের মাঠে বসে পদ্মাপাড়ের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে পেরেছি শেখ হাসিনার কল্যাণে।
ডাঃ দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ সুখী শান্তিময় বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছেন। আজকে সেই উন্নয়নের বড় একটা ধাপ আমরা অতিক্রম করলাম পদ্মা সেতু নির্মান করে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের বিজয়ের অপমানের প্রতিশোধের প্রতীক। পদ্মা সেতু আর শেখ হাসিনার কোন তফাৎ নেই। তার এরকম আমাদের সকল উন্নয়ন তার হাত দিয়ে হতে চলেছে আরও হতেই থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর অপর নাম শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে সবুজ-শ্যামল ৫৬ হাজার বর্গমাইলের স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা তারও অধিক প্রায় একটা বাংলাদেশের সমান ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের সুনীল বাংলাদেশ দিয়েছেন সমুদ্র জয়ের মধ্য দিয়ে। সেই সমুদ্র বিজয়ের নামও শেখ হাসিনা।তিনি আমাদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি দিয়েছেন। দারিদ্র্য বিমোচন করে চলেছেন। বাংলাদেশকে আজকে আমরা যে উচ্চতায় দেখছি সবকিছুরই নাম শেখ হাসিনা। কাজেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা আমাদের সাহস প্রত্যয়, এগিয়ে যাবার দৃঢ়তা এবং অনুপ্রেরণা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আমরা যে ভালোবাসি।
আগামীর একটি বছর যে নির্বাচন, আমাদেরকে সেই ভালবাসার পরীক্ষা দিতে হবে। আমরা যেন সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারি। শেখ হাসিনাকে প্রতিটি জায়গায় বিজয় করতে পারি। বিগত একাধিক নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে দেশের জনগণ ভোট দিয়েছিল বলেই আজকের পদ্মা সেতু সম্ভব হয়েছে।
তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতিনিধি হিসাবে তাকে সেবা করার সুযোগ দেয়ায় চাঁদপুর বাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আগামী দিনেও বিশ্বস্ততার সাথে বঙ্গবন্ধু কন্যার পাশে থেকে তাঁর হাতকে শক্তিশালী করা এবং যেকোনো অপশক্তিকে সকল অপপ্রচারকারী বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধীদের
রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডঃ মোঃ মশিউর রহমান বলেন, এইযে পদ্মা সেতু হয়েছে,এটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার শোককে শক্তিতে পরিণত করার এক একটা বড় বড় স্তম্ভ। এই সেতু নির্মাণ অনেক চ্যালেঞ্জের ছিল। তিনি যখন এদেশের জন্য ইতিবাচক করতে চেয়েছেন। হায়েনার দল তখন সেই সব কাজে প্রতিবার বাধা দিয়েছেন। আর তিনি শেখ হাসিনা সেই বাধা লংঘন করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি যখন স্বপ্নের পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সকল কার্যক্রম সারাদেশে একযোগে সম্প্রচার করা হয়। সেই সম্প্রচার অনুষ্ঠানটি সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষ দারুণভাবে উপভোগ করেন। বৃষ্টির বাধাও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। চাঁদপুর স্টেডিয়ামে মানুষের ঢল নামে। এর আগে সকাল ৯ টায় চাঁদপুর শহরে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সবার অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়।