প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
সৌদিআরব, দুবাই এবং কাতারে প্রবাস জীবন কাটলেও সর্বশেষ দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে ফিরেন খালি হাতে। অন্যদিকে বেশ ক’বার বিদেশ যাওয়ার জন্যে নিজেদের পৈত্রিক ভূমির প্রাপ্ত সবটুকু সম্পদও বিক্রি করে শেষ করেন। ফলে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব মহসীন মিয়া বর্তমানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করছেন। নিজের পিতৃভূমিতে মাঝে মাঝে এসে থাকার জন্যে একটু জমি চাইলেও ভাই-বোনদের কাছে তা পাননি। সর্বশেষ নিজেদের পৈত্রিক ভূমির বর্তমানে যা সরকারি খাস ভূমি হিসেবে চিহ্নিত সেই ভূমিতে একটি ঘর করার জন্যে জেলা প্রশাসক বরাবর স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এতেই ঝামেলা বাঁধে। শুধু তাই নয়, সেখানে জমি বিক্রির সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি ফরিদগঞ্জ থানার আশ্রয় প্রার্থী হয়েছেন। ঘটনাটি উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ গ্রামের।
জানা গেছে, সাহেবগঞ্জ গ্রামের আলা বক্স হাজী বাড়ির মমতাজ মিয়ার ছেলে মহসীন মিয়া বর্তমানে ঢাকা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সানসিটি রোজভেলী গার্ডেনে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করেন। তিনি জানান, পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে তিনি সকলের দেখভাল করলেও এখন তিনি অসহায়। ৫/৬ বছর সৌদি আরব, দুবাই এবং সর্বশেষ কাতারে প্রবাস জীবন কাটান। বেশ ক’বার বিদেশ যাওয়ার সময় তিনি অর্থাভাবে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তির অংশটুকু বিক্রি করে ফেলেন। গত ৪ বছর পূর্বে কাতারে অবস্থানকালে দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে তিনি নিঃস্ব অবস্থায় দেশে ফিরে আসেন। পরে তিনি জীবিকার টানে ঢাকা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সানসিটি রোজভেলী গার্ডেনে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকুরি নেন। বর্তমানে সেখানেই তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। কিন্তু নিজের জন্মস্থানে একটি ঠিকানার জন্যে তিনি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তির পাশে ১৫ শতক সরকারি খাস ভূমিতে স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়ার জন্য আবেদন করেন। যা এখন প্রক্রিয়াধীন।
১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার সরেজমিন গেলে মহসীন মিয়া জানান, তিনি সরকারি এই খাস জমিটি দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন। রাস্তার পাশের এই স্থানে সৃজনকৃত বাগান তৈরি করেছেন। আর ভূমিহীন হিসেবে সরকারি খাস জমিতে বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এই সংবাদ শুনে গত বুধবার তার বোন জামাতাসহ লোকজন তার নির্মাণাধীন ঘরের কাজ বন্ধ করে দেয়। একই সাথে সৃজনকৃত বাগানের গাছপালা কেটে ফেলে। শুধু তাই নয়, সেখানে জমি বিক্রির সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয় তারা। তিনি এখন আইন মোতাবেক জেলা প্রশাসকের কাছে আশ্রয় প্রার্থী।
স্থানীয় আঃ হান্নান, আঃ আজিজ, আলমগীর, রুহুল আমিন ও বাবুল মিয়াসহ লোকজন জানান, মহসীন মিয়া সবকিছু হারিয়ে এখন ভূমিহীন। তাই সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে বলে আমরা জেনেছি। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার বোন জামাতাসহ লোকজন তার ক্ষতি সাধন করছে।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে মহসীন মিয়ার বোন ও বোন জামাতাকে কয়েকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তা না ধরায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। অন্যদিকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন করেন বলে জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সেলিম।