শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অত্যাচারে ইউপি সদস্য বাড়ি ছাড়া

উপজেলা প্রতিনিধি ॥
ফরিদগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অত্যাচারে ইউপি সদস্য বাড়ি ছাড়া

রণাঙ্গনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কাগজে-কলমে তিনি মুক্তিযোদ্ধা। এই স্বীকৃতি কাজে লাগিয়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছে তার ৪ ছেলে, ২ মেয়ে, ৩ নাতিসহ ৯ জন। এরমধ্যে অনেকে পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। চাকুরির সুবাদে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রভাব খাটিয়ে এই পরিবারের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে এলাকায় নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার কারণে এতদিন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সাহস হয়নি কারো। এ ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাদশা পাঠান পরিবারের।

অভিযোগ রয়েছে, পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য সেলিনা বেগম বাদশা পাঠান পরিবারের অত্যাচারে বাড়িছাড়া হয়েছেন। ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, গত কয়েক বছরে বাদশা পাঠানের ছেলেরা আমাকে, আমার স্বামী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে মোট ১৪টি মিথ্যা মামলা করেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা আমাদের প্রতি জুলুম নিপীড়ন করে। আবার উল্টো মামলায় আমাদেরকেই ফাঁসানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাদশা পাঠানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল, মেহাম্মদ আলী ও তার ৩ নাতি পুলিশে কর্মরত হওয়ায় আমরা থানা পুলিশের সহযোগিতা পাইনি। বর্তমানে আমাদের সবক’টি মামলা অর্থের বিনিময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে। এ সকল মামলা নিষ্পত্তি করতে মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল, জাহাঙ্গীর পাঠান, আলমগীর পাঠান ও মোহাম্মদ আলী আমাদের কাছ থেকে ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে। জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, পুলিশসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তারা আমাদের কাছ থেকে এ অর্থ আদায় করেন। টাকা দিতে গিয়ে আমাকে জমি পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে। এছাড়া বাদশা পাঠানের ছেলেরা আমার ৪ শতক জমির বিপরীতে আমাকে রাস্তা বাবদ ১ শতক জমি লিখে দিতে সম্মত হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে তারা আমার জমি রেজিস্ট্রি ছাড়াই ভোগদখল করে খাচ্ছে। আবার আমাকে রাস্তা ব্যবহার করতে দিচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বাড়ির পুকুরে আমরা এক চতুর্থাংশের মালিক। মাছ ফেলার সময় তারা টোটাল খরচের অর্ধেক আমার কাছ থেকে আদায় করেছে। অথচ আমাকে মাছ না দিয়েই তারা সেগুলো বাজারে বিক্রি করেছে এবং নিজেরা খেয়েছে। মাছ বিক্রির সব টাকাও তারা নিতো। প্রতিবাদ করলে আবারো মামলা হামলা নির্যাতনের হুমকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তার জন্যে এবং হয়রানি এড়াতে বাড়ি ছেড়ে আমি রূপসা বাজারে বাসা ভাড়া করে থাকছি।

বাদশা পাঠানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল বলেন, সেলিনা মেম্বারের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর সমাধান হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মামলা প্রত্যাহার করতে প্রয়োজনীয় খরচ তিনি বহন করেছেন। তাদের পরিবারের ৯ সদস্যের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরির বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষকও ছিলেন। জমি এবং পুকুর সংক্রান্ত বিরোধের সত্যতাও তিনি স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য শহীদুল্লাহ বলেন, বাদশা পাঠানের ছেলেরা জঘন্য চরিত্রের। এরা বাবার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় আর নিজেরা পুলিশে, সেনাবাহিনীতে কর্মরত হওয়ায় অহঙ্কারে বহু নিরীহ মানুষের উপর নিপীড়ন করেছে। সেলিনার সাথে মামলা-মোকদ্দমা এবং এসব সমাধানে অর্থ আদায়ের বিষয়টি সত্য। তবে সকল মামলার বিষয় আমি জানি না। এছাড়া সেলিনার ৪ শতক জমি দখল করে রাখা এবং পুকুরের মাছ আত্মসাতের বিষয়টিও আমি অবগত আছি। সবাই নিজের কর্মফল ভোগ করা উচিৎ।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তাহের পাটওয়ারী বলেন, মামলা-হামলা-হয়রানির বিষয়টি সত্য। অর্থনৈতিক সব লেনদেন আমাকে জানিয়ে হয় নাই। তবে একটি লেনদেন আমার মাধ্যমে হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়