মতলব উত্তরের অসহায় দুই গৃহহীন পরিবারকে ঘর উপহার দেয়া হয়েছে। সাদুল্লাপুরে পুড়ে যাওয়া দোকান মালিককে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এক বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ৮ বছর ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করে আসছিলো, মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সহায়তা পাননি। এমনকি অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে চালাতে হয়েছে সংসার। এই পরিবারের নির্ঘুম রাত কাটছিল ভাঙ্গা ঘরে। এমন খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট সমাজসেবক, চাঁদপুর-২ আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী, আহসান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ইসফাক আহসান সিআইপি ঘর নির্মাণ করে দেয়ার কথা বলেন।

শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নতুন ঘর উপহার দেন এবং পরিবারটির সার্বিক বিষয় খোঁজ-খবর নেন এম ইসফাক আহসান সিআইপি।

ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ছফি উল্লা গাজীর স্ত্রী লাভলী বেগম। তিনি এম ইসফাক আহসান সিআইপির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সারা জীবন কষ্টই করে গেলাম। সুখ কী জিনিস জীবনে সেটা বুঝিনি। শেষ বয়সে এসে এতো সুন্দর একটি ঘরে পাবো, সুন্দরভাবে জীবন কাটাবো--এটা ভাবতেই পারিনি। আমাদের মতো আসহায় পরিবারের শেষ আশ্রয় ইসফাক সাহেব। হাজার বছর বেঁচে থাকুন আমাদের মাঝে এই মহান ব্যক্তি।

নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত লাভলী বেগম বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে খুব কষ্টে জীবন-যাপন করছি। তবে পেটের কষ্টের চেয়ে ঘরের কষ্ট ছিল অনেক বড়। কারণ ঝড়-বৃষ্টিতে সন্তানদের নিয়ে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছিলো। কিন্তু এম ইসফাক আহসান সাহেব আমাদের জন্যে যা করল সেটি কোনো দিন ভুলবার মতো নয়। আমার পরিবারকে চির ঋণী করে দিলেন ইসফাক আহসান সাহেব। আল্লাহ তার মঙ্গল করুন।

উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লবাইরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ছফি উল্লা গাজী ১৯৭১ সালে ভারতে ট্রেনিং নিয়ে ভারতের হাতিয়া (আগরতলা) ৩০৩ রাইফেল নং হ্যান্ড গ্রেনেড। কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলাধীন গোয়ালমারী নামক স্থানে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এমএ ওয়াদুদ কমান্ডারের নেতৃত্বে ২নং সেক্টরে মেজর হায়দারের অধীনে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে কবির আহম্মদ খানের নেতৃত্বে মহকুমা প্রশাসনের কাছে অস্ত্র জমা দেন।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক তার সাময়িক সনদ নং-মণ্ড১০১১৩৬, তারিখণ্ড ৮/৯/২০০৫ খ্রিঃ, মুক্তিযোদ্ধা খসড়া তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত আছে, যার ক্রমিক নং-৩৪৫, তারিখণ্ড ২৫/৮/২০০৪ খ্রিঃ। তিনি ২৭/১০-২০১৪ খ্রিঃ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পেয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বাজেট অধিশাখার ১২ জুন ২০১৭ খ্রিঃ তারিখে ২৪২নং স্মারকে তাকে জানানো হয়, তার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোঃ ছফি উল্লাহ গাজীর মুক্তিযুদ্ধের সম্মানী ভাতা বন্ধ রয়েছে।

এম ইসফাক আহসান সিআইপি সাদুল্লাপুর বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ফার্নিচারের দোকান পরিদর্শন করেন এবং ১ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগীতা করেন। তাছাড়া ইসলামাবাদ ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে আবুল খায়েরের পরিবারের মাঝে বসতঘর উপহার দেন। এ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এম ইসফাক আহসান সিআইপির পরিবারের পক্ষ থেকে প্রায় ৫শ’ পরিবারের মাঝে বসত ঘর উপহার দেয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাস্টার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি দেওয়ান জহির, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমান উল্লাহ সরকার, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারিছ খান, ১ওয়ার্ড কাউন্সিলর সবুজ বেপারী, ছেংগারচর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শাহাদাত হোসেন ঢালী খোকন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিরাজ খালিদ, দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ ইদ্রিছ প্রধান, ইউপি সদস্য মানিক মেম্বার, মানবধিকার কর্মী মোঃ মহিউদ্দিন, কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মনির হোসেন ছৈয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম শ্যামল, মোহনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জয়, জহিরাবাদ ইউপি যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, এখলাছপুর ইউপি যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সোহেল, এখলাছপুর ইউপি যুবলীগের সহ-সভাপতি লিটন সরদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির মুন্না, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকার, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এম ইসফাক আহসান সিআইপি স্থানীয় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের লিখনীতে সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের পর আমার দৃষ্টিগোচর হলে আজ আমি এই দুটি পরিবারের মাঝে ঘর উপহার দেই। আপনাদের জানামতে যদি কোনো পরিবারের ঘর না থাকে আমাকে জানাবেন, আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ঘর দেয়ার ব্যবস্থা করবো ইনশাআল্লাহ।