প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ চতুর্থদিন মহানবমী পূজা। গতকাল ছিলো মহাষ্টমী পূজা। এদিন বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই পূজারীগণ নিজ পরিবারসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দেবীচরণে অঞ্জলি প্রদান করেন। শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষ্টমীর দিন পূজারীদের কাছে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। রামচন্দ্রদেব মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে তার প্রাণপ্রিয় সীতা দেবীকে উদ্ধারের জন্য ১০১টি নীল পদ্ম দিয়ে দেবীদুর্গার পূজা করেছিলেন। এদিনের পূজা কাত্যায়িনী পূজা বলেও খ্যাত রয়েছে। মহাষ্টমীর সকালে অনেক মণ্ডপে কুমারী পূজাও অনুষ্ঠিত হতে দেখা গেছে। তবে চাঁদপুরে কুমারী পূজা সংঘটিত হয়নি।
গতকাল সকাল থেকেই পূজা মণ্ডপ চণ্ডিপাঠে মুখরিত হয়ে উঠে। দিন গণনায় পাঁচদিনব্যাপী শারদীয় উৎসব হলেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে মহাষ্টমী ও মহানবমী বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই দুই দিনই বিকেল থেকে অধিক রাত অবধি চলে প্রতিমা দর্শন। যদিও গতকাল বৈরী আবহাওয়াসহ সারাদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি দেখা গেলেও থামানো যায়নি প্রতিমা দর্শনের একাগ্রতা। ভক্ত নর-নারীগণ পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন আর দর্শন করেছেন দেবী দুর্গাসহ লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক গণেশসহ তাদের পাশে থাকা মহিষাসুরকে। যে মহিষাসুর দ্বারা দেবতাগণ স্বর্গচ্যুত হন। স্বর্গচ্যুত দেবতাদের প্রার্থনা আর তাদের রক্ষাকল্পে তাদের তেজোরশ্মি থেকে ব্রহ্মা-বিষ্ণু আর শিবের সহায়তায় আবির্ভূত হন দেবী দুর্গা। তাদের দেয়া শক্তিতে বলিয়ান হয়ে দেবী বধ করেন মহাপরাক্রমশালী মহিষাসুরকে। দেবী স্বর্গরাজ্য ফিরিয়ে দেন দেবতাদেরকে। আর শান্তি স্থাপন করেন পৃথিবীতে। তাই দেবী আরাধনায় প্রতিবছরই মর্ত্যে আয়োজন করা হয় দুর্গা পূজার। এ বছর আয়োজনকৃত সকল পূজা মণ্ডপই হয়ে উঠে দর্শনীয়। সুউচ্চ তোরণ নির্মাণসহ সুসজ্জিত পূজা মণ্ডপে দেবী পূজিত হন মহাআনন্দে ভক্তহৃদয়ে। দেবী আরাধনায় গতকাল পূজা মণ্ডপগুলো বাদ্য বাজনায় ছিল মুখরিত। মহাষ্টমীর দুপুরে কোথায়, কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে নর-নারায়ণ সেবা। গতবছর পূজা চলাকালীন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে ভুলে গিয়ে ছোট-বড় সকল বয়সের নর-নারী রাস্তায় নেমেছেন প্রতিমা দর্শনে। আর তাদের নিরাপত্তা বিধানে প্রশাসনও ছিল বেশ তৎপর। রাস্তায় রাস্তায় পুলিশি পাহারা ছিল প্রশংসনীয়। শহরের যানজট নিরসনে স্কাউট সদস্যগণও কাজ করেছেন নিরলসভাবে। আর পূজারীসহ দর্শনার্থীদের উৎসাহ দিতে এদিন চাঁদপুরে ছুটে এসেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। ছিলেন জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ। সকলের লক্ষ্যই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন করা। আজ মহানবমী পূজা। আজো সকালে পূজা মণ্ডপ মুখরিত হয়ে উঠবে চণ্ডীপাঠে। দেবীচরণে অঞ্জলি প্রদান করবেন ভক্তবৃন্দ।