শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২০

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত ৮৮ ব্রাজিলিয়ান নাগরিক: অমানবিক নির্যাতনের শিকার অভিবাসীরা

অমানবিক নির্যাতনের শিকার!

মো. জাকির হোসেন
অমানবিক নির্যাতনের শিকার!
ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতির শিকার হয়ে এবার ব্রাজিলের ৮৮ জন নাগরিক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন নিজ দেশে। শুক্রবার রাতের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা ব্রাজিলের মানাউস শহরে পৌঁছান। কিন্তু ফ্লাইটের যাত্রীদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে দাবি করেছে ব্রাজিল সরকার।

হাত-পা বাঁধা যাত্রী, পানির অভাব, বাথরুমে নিষেধাজ্ঞা: ব্রাজিলে ফিরে আসা যাত্রীদের অভিযোগ, তাদের অপরাধীর মতো বিমানে তোলা হয়। প্রত্যেকের হাতে ও পায়ে শিকল বাঁধা ছিল। দীর্ঘ যাত্রাপথে পানির ব্যবস্থা ছিল না, এমনকি বাথরুম ব্যবহারেরও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তীব্র গরমে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন, কেউ কেউ জ্ঞান হারান।

ফ্লাইটের এক যাত্রী এদগার দা সিলভা মোউরা জানান, "আমরা প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ বন্ধ থাকায় বিমানের ভেতর দমবন্ধ করা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। একাধিক যাত্রী পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন, কিন্তু আমাদের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখানো হয়নি।"

শিশুদের ওপরও নিষ্ঠুরতা! যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন অটিজম আক্রান্ত শিশুও ছিল, যারা একই পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। মানবাধিকারকর্মীরা একে "অমানবিক এবং লজ্জাজনক" বলে অভিহিত করেছেন। ব্রাজিলের মানবাধিকারমন্ত্রী এই ঘটনাকে "গণমানবাধিকার লঙ্ঘন" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

ব্রাজিল সরকারের তীব্র প্রতিক্রিয়া: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন এবং ব্রাজিলের নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের নির্দেশে ব্রাজিলিয়ান এয়ার ফোর্সের একটি উড়োজাহাজ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে অভিবাসীদের মানবিকভাবে ফিরিয়ে আনা যায়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক: শুধু ব্রাজিল নয়, কলম্বিয়া ও গুয়াতেমালার অভিবাসীদেরও একইভাবে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতি ইতোমধ্যে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনা নতুন করে বিতর্ক উসকে দেবে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

ব্রাজিল সরকার ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু করেছে। ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে জবাবদিহি চেয়েছে।

বিশ্বজুড়ে অভিবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ নিশ্চিত করা ও তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ব্রাজিলের এই ঘটনাটি কি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনতে বাধ্য করবে? সেটা এখনো সময়ের অপেক্ষা।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়