প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
মতলব উত্তরে নদীতে বালু উত্তোলন
প্রভাবশালীদের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির পরিবার
অভিযোগের তীর এখলাশপুর ইউপি চেয়ারম্যানের দিকে
মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর সীমানায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গুলিবিদ্ধ আরিফ সরকারের পরিবারকে ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করতে বাধা প্রদান ও জিম্মি করে চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীরা। উদ্ধার হয়নি অবৈধ অস্ত্র। এ নিয়ে স্থানীয় জনমনে দেখা দিয়েছে নানা শঙ্কা।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ১ অক্টোবর দিবাগত রাতে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর সীমানায় দক্ষিণ বোরোচর নামক স্থানে মেঘনা নদীতে স্থানীয় প্রভাবশালী ও চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম মুন্না ঢালী এবং স্থানীয় মৎস্যজীবী লীগের নেতা ছিদ্দিক রহমান বকাউলের নেতৃত্বে বালু উত্তোলন করতে গেলে স্থানীয় জনগণ বালু উত্তোলনে বাধা প্রদান করে। এ ঘটনায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের লালিত সন্ত্রাসী বাহিনী নাহিদ, রনি, আশরাফুল ও মাসুদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা স্থানীয় জনগণের ওপর হামলা চালায়। এতে স্থানীয় জনগণ হামলা প্রতিরোধ করতে গেলে স্থানীয় মজিব বকাউলের ছেলে নাহিদের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ সরকার গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয় জনগণ তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এদিকে আরিফ সরকার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে সেখান থেকে জোর করে ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম মুন্না ঢালী ও কাসেম সরকারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এসে জোরপূর্বক অ্যাম্বুলেন্স ঘুরিয়ে গুলিবিদ্ধ আরিফ সরকারকে বেসরকারি লালমাটিয়া সিটি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় যেনো দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ না করা হয় সেজন্যে উল্লেখিত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদেরকে জিম্মি করে রেখেছে। এই প্রভাবশালীরা এজন্যে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে দেয়নি গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিকে। আর সম্পূর্ণরূপে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির পরিবারটিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ঘটনার বিষয়ে রাখা হয়েছে ধোঁয়াশার মধ্যে। যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ করতে না পারে।
অনতিবিলম্ব ঘটনার বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করার জন্যে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছে এলাকাবাসী। সেমতে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর সীমানায় বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে গতকাল ৪ অক্টোবর বোরোচর এলাকায় হাজার হাজার জনগণ মানববন্ধন করে এবং সংঘটিত ঘটনায় অনতিবিলম্বে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করার জন্যে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানায়।