প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাগাদী গাছতলায় ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গন
কবরস্থান বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন
ডাকাতিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের গাছতলা এলাকায় নদীর তীরবর্তী বসতঘর কবরস্থান ও কৃষি জমি ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে। বাগাদী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডস্থ গাছতলা জমদ্দার বাড়ি, খান বাড়ি ও গাজী বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত কয়েক দিনে ডাকাতিয়ার করাল গ্রাসে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা। ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবার। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পায়নি কবরস্থান। তিনদিন পূর্বে এক ব্যক্তিকে কবর দেওয়া হলেও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় লাশের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে এলাকাটি। ডাকাতিয়া নদী প্রতি বছর অল্প অল্প করে ভাঙ্গে। গত এক দশকে শুধু বাগাদী গাছতলায় ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকার অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি। এতো ক্ষতির পরও বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যায়। অচিরেই নদী ভাঙ্গনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভিটেমাটি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়বে ঐ এলাকার নদীর পাশে বসবাসকারী প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী লিটন পাঠান জানান, ‘প্রতি বছর নদী আমাদের জমি একটু একটু করে ভেঙ্গে নিয়ে যায়। নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করার পরেও তারা পদক্ষেপ নেয়নি। এর পূর্বে চাঁদপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি দীপু মনি ভাঙ্গন রক্ষায় আশ্বাস দিয়ে গেলেও কার্যকর হয়নি। অল্প অল্প করে ভাঙ্গে, তাই কেউ আমাদের দিকে নজর দেন না। গত ১০ বছরে আমাদের এলাকার প্রায় এক কিলোমিটারের মতো জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। ছিন্নমূল হয়ে গেছে প্রায় শতাধিক পরিবার। এখন আমাদের ভিটেবাড়ি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িটা নদীতে তলিয়ে গেলে থাকবে কোথায় জানে না কেউ। রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হবে।’
ভাঙ্গন এলাকায় বসবাসকারী আসমা বেগম জানান, ‘এখন নদীটি যেখানে ভাঙ্গছে, সেখানে আমাদের বসতঘর, রান্নাঘর ছিল। গত বছর ঘরগুলো সরিয়ে নিয়েছি। এরপর আর জায়গা নেই। নদীতে ভাঙ্গলে কী করবো জানি না।’
নদী থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে বাগাদি ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজারসহ বহু মানুষের ঘরবাড়ি। নদী ভাঙ্গন রোধ না হলে হুমকির মুখে পড়বে এসব প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাই ক্ষতিগ্রস্তরা নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, বাগাদী গাছতলা ও মৈশাদি সহ ডাকাতিয়া নদীর বেশ কয়েকটি এলাকা ভাঙ্গনরোধে একটি ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এটি পাস হলেই ভাঙ্গন রক্ষায় কাজ শুরু করা হবে।