প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুরে চাঞ্চল্যকর কোহিনুর হত্যা মামলার রায় ॥ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
চাঁদপুর শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা কোহিনুর বেগম হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামী নাজমা আক্তার নয়নসহ দুই আসামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একই সাথে দুই আসামীকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। রোববার (৩০ জুন) বিকেলে চাঁদপুরের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মহসিনুল হক এ রায় দেন। চালঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনার নয় বছরের মাথায় রায় ঘোষণা করা হলো। আসামীদের অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়।
হত্যার শিকার কোহিনুর বেগম রহমতপুর আবাসিক এলাকার প্রবাসী আব্দুল মান্নান খানের স্ত্রী। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী নাজমা আক্তার নয়ন (৪২) একই এলাকার ভূঁইয়া বাড়ির আলমগীর হোসেন ফারুকের স্ত্রী এবং অপর আসামী রফিক ওরফে দেন্ধা রফিক একই বাড়ির আবদুর রশিদের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, প্রধান আসামী নাজমা আক্তারের কাছ থেকে হত্যার শিকার কোহিনুর বেগম ৫ লাখ টাকা পাওনা ছিলেন। এই টাকা তিনি দীর্ঘদিন না পেয়ে ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২২ আগস্ট রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে কোহিনুর বেগম নাজমার বাড়িতে টাকার জন্যে যান। তখন এক পর্যায়ে নাজমা ও তার সহযোগী রফিক কোহিনুর বেগমকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে এবং হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনা পুরো শহরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পরদিন ২৩ আগস্ট চাঁদপুর সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন কোহিনুর বেগমের আপন ভাই আবদুল মালেক মোহন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় মডেল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মাসুদ রানা শামীমকে। তিনি এ ঘটনায় জড়িত আসামী নাজমা আক্তার নয়ন ও রফিককে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন এবং ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন আসামীরা জামিনে ছাড়া পান।
মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডঃ রণজিত রায় চৌধুরী জানান, মামলাটি আদালতে চলমান অবস্থায় ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আসামীদের অপরাধ স্বীকার, সাক্ষ্যপ্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আদালত এ রায় দেন। আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত এ রায় দেন।
আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম।
এদিকে রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হত্যার শিকার কোহিনুর বেগমের বোন বিউটি বেগম বলেন, বোনকে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। আদালত যে রায় দিয়েছেন, তাতে আমার পরিবার ও বোনের স্বামী এবং সন্তানরা সন্তুষ্ট।