প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৩, ০০:০০
ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী সাহাপুর মোহাম্মদ চৌধুরী গাজী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় অনিয়ম দুর্নীতি করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সহ-সুপার পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের অভিযোগে এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ১ মে সোমবার তড়িঘড়ি করে নিযোগ কার্যক্রম চূড়ান্ত করার সময় অনিয়মের অভিযোগে নিয়োগ বোর্ড ত্যাগ করেন মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন আহম্মদ রাজন। বিষয়টি সংবাদ কর্মীরা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই নিয়োগ কার্যক্রম প্রক্সি। এখানে নির্ধারিত ব্যক্তিকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে নিয়োগ দেয়ার সকল কার্যক্রম তারা আগেই করে রেখেছে। শুধু ফলাফল ঘোষণার বাকি ছিলো। তাদের অনিয়ম দেখে আমি সেখান থেকে চলে এসেছি। তাদের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার প্রাপ্ত ব্যক্তি যে প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে, সে প্রশ্নপত্র থেকে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দিতে পারেননি।
এদিন সহকারী সুপারিনটেন্ডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বালিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ ফজলুল করিম ও গোবিন্দপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ আবদুল কাদিরসহ ৫ জন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শিক্ষকদের সাথে কথা হলে এবং বিভিন্ন প্রশ্নের তোপে পড়ে তারা সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হিমশিম খেয়ে পড়েন। এ সময় নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং ডিজির প্রতিনিধি ও অত্র মাদ্রাসার সুপারের সিদ্ধান্তে কাঁশারা দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী প্রধান মাওঃ সালাউদ্দিনকে সহ-সুপার হিসেবে চূড়ান্ত করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরীক্ষায় মোট ৭ জন আবেদন করলেও ২জন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জানান, আমাদের চিঠি দিয়ে আজকে জাতীয় বন্ধের দিনে নিয়োগ পরীক্ষা হবে বলে জানালে আমরা সকালে পরীক্ষা দিতে আসি। ৩০ (ত্রিশ) নাম্বারের লিখিত পরীক্ষায় একজনকে ২৪ নাম্বার এবং অন্যদের ৮, ৬ ও ১৩ নাম্বার দেয়াটা পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা দু’-তিনজন শিক্ষকের সাথে কথা হলে তাদের অগোছালো কথার ধরণে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে একেবারেই সন্দেহযুক্ত করেছে। নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্ত করা মাওলানা সালাউদ্দিনের কাছে কত নাম্বারে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছেন জানতে চাইলে এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। কোন্ পত্রিকায় এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে সেটাও তিনি বলতে পারেন নি। তিনি শুধু বলেন, আমি বেশি নাম্বার পাওয়ার জন্যে বেশি করে লিখেছি। এ সময় বিভিন্ন প্রশ্নে তিনি অগোছালো কথাবার্তা বলেন। মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সভাপতি এমরান মেম্বারের সাথে কথা হলে তিনি প্রথমে নিয়োগ বোর্ডের পরীক্ষার বিভিন্ন অনিয়মের কথা বলেন। কয়েক ঘন্টা পরে আবার তার কাছে জানতে চাইলে নিয়োগ পরীক্ষা ভালো হয়েছে বলে তিনি জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকে জানান, এই নিয়োগ পরীক্ষায় সম্পূর্ণ অনিয়ম করা হয়েছে এবং বর্তমান নতুন সহ-সুপারকে নিয়োগ প্রদানে ৫ লাখ টাকা বাণিজ্য করা হয়েছে বলে তারা শুনেছেন। মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবু তাহেরের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সংবাদ কর্মীদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন এবং আগামীতে সংবাদকর্মীদের আরো সুযোগ-সুবিধা দিবে বলেও ব্যর্থ হন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নিয়োগে কিছু অনিয়মের কারণে এই নিয়োগ পরীক্ষাটি বাতিল করে দেয়ার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছি।