প্রকাশ : ০১ মে ২০২৩, ০০:০০
অসাস্প্রদায়িকতা ও সমতার সুদৃঢ় গাঁথুনির ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে আনন্দ উৎসাহ আর ব্যাপক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বরণ করেছে চাঁদপুরের প্রসিদ্ধ সংগীত প্রতিষ্ঠান আনন্দধ্বনি সঙ্গীত শিক্ষায়তন।
গত ২৯ এপ্রিল শনিবার বিকেলে এই শিক্ষায়তনের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকম-লীসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও সঙ্গীত অনুরাগী বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। দুই পর্বে অনুষ্ঠিত বৈকালিক অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল সোয়া ৪টায়। সংগঠনের শিল্পী, কলাকুশলীদের পরিবেশনায় আবৃত্তি-নৃত্য-গীত অনুষ্ঠানে মুখরিত হয়ে উঠে শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তন। বাঙালি সংস্কৃতিকে ঘিরে শিল্পীদের পরিবেশিত বৈচিত্র্যময় উপস্থাপনায় বিমোহিত হয়ে পড়েন দর্শক-সারিতে থাকা দর্শকগণ। তারা তুমুল করতালি দিয়ে শিল্পীদের উৎসাহ প্রদানপূর্বক বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে স্বাগত জানান পরম তৃপ্তিভরে।
আনন্দধ্বনি সংগীত শিক্ষায়তনের সভাপতি মোঃ মোশারেফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমেদ মিন্টুর সঞ্চালনায় দুই পর্বের বৈকালিক অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটারিয়ান কাজী শাহাদাত, শিল্পচূড়ার সভাপতি মাহাবুবুর রহমান সেলিম, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ চাঁদপুর শাখার সভাপতি লায়ন মাহমুদ হাসান খান, জাগরণ সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, আনন্দধ্বনি সংগীত শিক্ষায়তনের সহ-সভাপতি ইসমত আরা সাফি বন্যা। উপস্থিত ছিলেন রোটারিয়ান নাসির খান, রোটারিয়ান গোপাল সাহা, ভাস্কর্যশিল্পী আজাদ হোসেন, কার্যকরী সদস্য ও কবি আশিক বিন রহিম প্রমুখ।
সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি দীর্ঘ সময় নিয়ে পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং শিল্পী কলাকুশলীদের উৎসাহ প্রদান শেষে তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও বাঙালি সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। যা জাতি-ধর্মণ্ডবর্ণ নির্বিশেষ সকল মানুষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে উদযাপন করে থাকে। একমাত্র বাংলা নববর্ষেই নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সকল বয়সের মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। অথচ নববর্ষের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে নিন্দুকেরা অনেক কটুক্তি করেছেন, বলেছেন অনেক কথা। যা ভীষণ অনাকাঙ্ক্ষিত। যারা মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে কথা বলেছেন, তারা সকল সময়ই আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আঘাত করেছেন। কিন্তু তারা কোনোভাবেই সফল হতে পারেন নি। কারণ সংস্কৃতি কর্মীদের ঐক্যবদ্ধতার কাছে তাদের হেরে যেতে হয়েছে। তিনি আগামী বছরগুলোতে বাংলা নববর্ষ আরো ব্যাপকভাবে উদযাপিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন আনন্দধ্বনি সংগীত শিক্ষায়তনের ক্ষমা বণিক ও আবু বকর সিদ্দিক। সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন চয়ন সাহান, নিবেদিতা দাস, মহিমা লোধ, মমতাজ আক্তার ও অনিমা পাল আর নৃত্যানুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন পুতুল দাস।
দীর্ঘ সময় নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্যে আনন্দধ্বনি সঙ্গীত শিক্ষায়তনের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমেদ মিন্টুর গ্রন্থনায় অনুষ্ঠিত ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ দর্শক-শ্রোতাদের মন কাড়তে সক্ষম হয়।