হাইমচরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবীসহ ৫জন গুরুতর আহত হয়েছেন। গত ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার পূর্ব চর কৃষ্ণপুর গ্রামের মরহুম মাওলানা আব্দুল মজিদ গাজীর বসতঘরে এ হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৮ এপ্রিল মাওলানা হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মোশারফ হোসেন মাঝিসহ ৬জনকে আসামী করে হাইমচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত কোনো আসামী আটক করতে পারেনি হাইমচর থানা পুলিশ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোশারফ হোসেন মাঝি গংয়ের সাথে মরহুম আব্দুল মজিদ গাজীর সন্তানদের বসত বাড়ির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ ছিল। এ বিরোধের ধারাবাহিকতায় একই এলাকার মোশারফ মাঝি (৫২), বিল্লাল হোসেন মাঝি (৫৫), শফিকুর রহমান মাঝি (৫০), জহিরুল ইসলাম মাঝি (৫৫), আলী হোসেন মাঝি (৫৬) ও বাচ্চু গাজী (৪৬) গং পূর্বপরিকল্পিতভাবে ৩০/৪০ জনের একটি দল নিয়ে মরহুম মাওলানা আব্দুল মজিদ গাজীর সন্তানদের বাড়ির সীমানার ভেতরে প্রবেশ করে তাদের জায়গা দাবি করে সীমানা নির্ধারণ করেন। মাওলানা মোঃ হাফিজুর রহমান তখন প্রতিবাদ করেন। তখন মাঝি গং ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার উপর হামলা চালায়। আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ফেরদৌস তার ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মারলে ওই কোপ তার ডান চোখের উপর লেগে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। এছাড়াও তাদের হামলায় তার পায়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। মাঝি গং তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। সংবাদ পেয়ে মাওলানা মফিজুর রহমানের তিন ভাই বাড়িতে আসলে তারাও মাঝিদের হামলার শিকার হন। আহতদের মধ্যে আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ফেরদৌস গুরুতর আহত হন। তাকে স্থানীয় লোকজন প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপতালে রেফার করেন। অন্য আহতরা হলেন মরহুম মাওলানা আব্দুল মজিদ গাজীর ছেলে আলগী বাজার সিনিয়র মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মোঃ মজিবুর রহমান, ফারুক-ই আজম আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মাওলানা মোঃ শফিকুর রহমান ও আল-আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মাওলানা মোঃ হাফিজুর রহমান।

মাওলানা হাফিজুর রহমান জানান, মাঝিরা আমাদের বাড়ির পাশের ১০শতাংশ জমি জবরদখল করে রেখেছে। আমরা মাঝিদেরকে আমাদের জমি ছেড়ে দিতে অনুরোধ করে আসছি। মাঝিরা দেই দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপণ করে আসছে। তারা গত ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে শফিক মাঝি ওরফে সইক্কা মাঝির নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের বসত বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড, দা, লাঠি নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। তারা বসতঘর ভাঙচুর, লুটপাটের তাণ্ডব চালিয়ে নগদ টাকাণ্ডপয়সাসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া ওইদিন রাতে ১০টা ৪৬ মিনিটে ০১৭৭২২৭২০৯৭ নম্বর থেকে এবং রাত ১০টা ৫০ মিনিটে ০১৭৮১৬৬৫৯৩৩ নাম্বার থেকে ঢাকা প্রবাসী সাংবাদিক গাজী খলিলুর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ও হত্যার হুমকি দেয়। তিনি বলেন, আমরা মরহুম মাওলানা আব্দুল মজিদ গাজীর সন্তান হিসেবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমরা আশা করি পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের আটক করে আইনের আওতায় এনে আমাদের শ্রদ্ধা, বিশ্বাস অক্ষুণ্ন রাখবে।