প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে দিনব্যাপী ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে পরমারাধ্য গুরুদেব অখণ্ড মণ্ডলেশ্বর শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব এবং তার সুযোগ্য মানসকন্যা শ্রী শ্রী মামণি সংহিতা দেবীর পুণ্য মহাসমাধি স্মৃতি দিবস উদযাপিত হয়েছে চাঁদপুর শহরের পুরাণ আদালতপাড়াস্থ স্বামী স্বরূপানন্দের পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম প্রাঙ্গণে। এ উপলক্ষে ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত স্বরূপানন্দ ভক্ত, শিষ্য অনুরাগীসহ সুধীজনদের ব্যাপক উপস্থিতিতে চাঁদপুর অযাচক আশ্রমে সকাল ৫টা হতে ঊষা কীর্ত্তন, মঙ্গল শঙ্খধ্বনি, শ্রী শ্রী অখণ্ড সংহিতা পাঠ, শ্রী শ্রী সমবেত উপাসনা, ব্রহ্মগায়ত্রী পাঠ, নীরব মহানাম জপযজ্ঞ, হরিওঁ কীর্ত্তন স্মৃতিচারণসহ মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে।
আশ্রম অধ্যক্ষ শ্রী স্বরূপ ব্রহ্মচারীর সভাপ্রধানে ও বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের সহ-সভাপতি তাপস কুমার সরকার। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনয় ভূষণ মজুমদার, সদর উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমল চৌধুরী, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দপ্তর সম্পাদক রনজিত সাহা মুন্না, জেলা ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ নেতা প্রশান্ত কুমার সেন, গৌতম কুমার ঘোষ, বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের কর্মকর্তা নিরাপদ স্বর্ণকার, রোটাঃ গৌতম কুমার সাহা, লিটন চন্দ্র পোদ্দার (নারায়ণগঞ্জ), অঞ্জন কুমার দাস, অযাচক আশ্রম পরিচালনা পরিষদ চাঁদপুরের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দাস প্রমুখ।
বক্তারা শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ এবং মামণির বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আমরা চাঁদপুরবাসী খুবই ভাগ্যবান যে, এই চাঁদপুরের মাটিতেই জন্ম নিয়েছেন মহাপুরুষ শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ। বর্তমানে তাঁর মহাপুণ্য জন্মস্থানে নির্মাণ হচ্ছে বিশ্বমানের মন্দির। এই মন্দির দর্শনে এবং পুণ্য অর্জনের নিমিত্তে দেশ বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত ছুটে আসবেন। চাঁদপুরের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়বে দেশ দেশান্তরে, তাতেই আমরা গর্বিত। তারা আরো বলেন, দিন যতো অতিবাহিত হবে স্বরূপানন্দের কর্মধারা ছড়িয়ে পড়বে বিশ্ব মাঝে। স্বরূপানন্দ এমন একজন সাধক ছিলেন, যিনি কখনো এককভাবে কোনো সম্প্রদায়কে প্রাধান্য দেননি, তিনি সকল সম্প্রদায়ের কথা চিন্তা করেছেন। তাইতো তিনি বলতে পেরেছেন, আমি জানিতে চাহি না বন্ধু তুমি হিন্দু না মুসলিম, তুমি খ্রিস্টান না বৌদ্ধ, আমি জানিতে চাহি তুমি কতটুকু মানুষ। তিনি ধর্ম প্রচারের চেয়ে মানবতাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন বেশি।
অনুষ্ঠানে অখণ্ড সংহিতা পাঠ করেন প্রণব কুমার সাহা, অখণ্ড সঙ্গীত পরিবেশন করেন মানিক লাল রায়। এ সময় নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন রঞ্জিত কুমার সাহা, মনোতোষ সাহা, সঞ্জয় কুমার সাহা, প্রিয়লাল ত্রিপুরা প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম পরিচালনা পরিষদ, চাঁদপুর অযাচক আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠন।