শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুরে তিন উপজেলাকে আজ ভুমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী
বিমল চৌধুরী ॥

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ২২ মার্চ বুধবার সারাদেশে ৪র্থ পর্যায়ে ৩৯,৩৬৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে চাঁদপুর জেলার ৬০টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৪টি, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৩১টি, কচুয়া উপজেলায় ১৮টি, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৫টি ও শাহারাস্তি উপজেলায় ২টি গৃহ সম্পূর্ণরূপে উদ্বোধনের জন্যে প্রস্তুত রয়েছে। চাঁদপুর জেলায় ৪র্থ পর্যায়ে আজ মোট ৬০টি গৃহহীন ও জমিহীন পরিবার গৃহ পাবেন। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্পে যে সকল গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার গৃহ পাবেন সে সকল পরিবারকে এক টাকা সেলামীতে দুই শতক জমি প্রদান করা হয়েছে এবং উক্ত পরিবাররের মধ্যে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রেশন, নামজারী ও জমা-খারিজ খতিয়ান সৃজন, সনদপত্র প্রদানসহ সকল কাজ সম্পন্ন করে দেয়া হয়েছে। সরকার কর্তৃক কবুলিয়ত দলিলের জন্যে পরিবার প্রতি ২৫৮ টাকা, নামজারি ও খতিয়ান প্রদান বাবদ ১১৭০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এতে নামজারি, জমি রেজিস্ট্রেশন ও আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ তাদেরকে কোনো টাকা ব্যয় করতে হয়নি। প্রতিটি একক গৃহের আয়তন ৪০০ বর্গফুট, দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা গৃহ। যার মধ্যে আরো রয়েছে একটি টয়লেট, একটি রান্নার কক্ষ ও একটি ইউটিলিটি স্পেস। আজ উদ্বোধনযোগ্য ৬০টি গৃহের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ৪টি, হাজীগঞ্জে ৫টি, কচুয়াতে ৬টি পরিবারসহ মোট ১৫টি পরিবারকে অবৈধ দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে খাস জমিতে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ৪৫টি পরিবারকে জমি ক্রয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হচ্ছে।

ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল ২০ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মোলন কক্ষে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই মহতী উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই মানবিক উদ্যোগ চলমান থাকবে। মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কতৃক ভূমিহীন ও ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ও ৪র্থ পর্যায়ের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে চাঁদপুর জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে আজকের এই প্রেস ব্রিফিং ও মতবিনিময় সভা বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে উন্নয়নের মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনা সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। যার একটি হলো গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মাঝে গৃহ প্রদান করা। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্প চালু করেন। যা বর্তমান সময়ও কার্যকর রয়েছে।

প্রেস ব্রিফিং এ প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাশেদা আক্তার। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বশির আহমেদ, আরডিসি (রাজস্ব শাখা) শারমিন আক্তার। সাংবাদিকদের মাঝে প্রকল্প বিষয় সমূহ জানতে চেয়ে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল রুশদী, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাংবাদিক আব্দুর রহমান, আব্দুল আউয়াল রুবেল, ফারুক আহমেদ, জাকির হোসেন, আলম পলাশ, আঃ গনি প্রমুখ।

প্রেস ব্রিফিংকালে আরো জানা যায়, চাঁদপুর জেলায় মোট ১৫৯৯টি ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৫৬টি, মতলব উত্তর উপজেলায় ১৮৫টি ও শাহরাস্তি উপজেলায় ৫৮টি হালনাগাদকৃত পরিবারের সকলকে পুনর্বাসন করায় (ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর ও শাহরাস্তি) এ তিন উপজেলাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন।

সারাদেশে ১ম পর্যায়ে ৬৩,১৯৯, ২য় পর্যায়ে ৫৩,৩৩০ ও ৩য় পর্যায়ে ৫৯,১৩৩ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান করা হয়েছে। ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ে হস্তান্তরিত গৃহের সংখ্যা ২,১৫,৮২৭টি। সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তালিকা অনুযায়ী চাঁদপুর জেলায় ক শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ১৫৯৯টি। ১ম পর্যায়ে একক গৃহের মাধ্যমে ১৩৫টি পরিবারকে, ২য় পর্যায়ে ১০৯টি পরিবারকে এবং ৩য় পর্যায়ে ১২৩টি পরিবারকে অর্থাৎ ৩ পর্যায়ে সর্বমোট ৩৬৭টি পরিবারবে পুনর্বাসন করা হয়েছে, ব্যারাকে ৯১৪টি পরিবার ও অন্যান্যভাবে ১৫টি পরিবারকে অর্থাৎ মোট ১২৯৬টি পরিবারবে ইতোমধ্যে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৪র্থ পর্যায়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত ১৯৮টি গৃহের মধ্যে ৫৩টি গৃহ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং ১৪৫টি গৃহের কাজ চলমান। অবশিষ্ট গৃহের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর সদর অ্যাসিল্যান্ড মোঃ হেদায়েত উল্লাহ, জেলা প্রশাসনের আরডিসি শারমিন আক্তারসহ চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকবৃন্দ, জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়