প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুরে সরকারি এক দপ্তরের কর্মকর্তার আনাড়িপনায় আরেক সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এনিয়ে সুরহার উদ্যোগকেও কেয়ার করছেন না চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী। চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাথে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের যাতায়াতের প্রধান পথটি অনেক দিন ধরে বন্ধ করে রাখা হয়। নিরাপওার কথা বলে এমনটি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের পথটি অনেক দিন ধরে গেইট নির্মাণ করে তা বন্ধ করে রাখেন। পথটি বন্ধ রাখায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কাজে আসা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়ে। বিশেষ করে সদর উপজেলায় মোট ৯৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২শ’ শিক্ষক-শিক্ষিকা ১শ’ ১৫জন দপ্তরী কাম প্রহরী রয়েছেন। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিনিয়ত শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে দাপ্তরিক কাজে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে আসতে হয়। অনেক অফিসার, শিক্ষক মোটর সাইকেল নিয়ে অফিসে আসেন। কিন্তু এখানে এসেই দুর্ভোগে পড়েন তারা। টেকনিক্যাল স্কল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি ও তাদের সুবিধার জন্যে এ পথটি বন্ধ করে রাখায় যতো সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আব্দুল হাই জানান, এ গেইটটি করার কারণে আমাদের অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, অভিভাবকগণ যাতায়াতে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। হঠাৎ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ কোন কারণ ছাড়াই পথটি বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে আমাদের দপ্তরের একজন কর্মকর্তার সাথে টেকনিক্যাল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অপ্রত্যাশিত আচরণও করেছেন। উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে উপস্থাপনও করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালও বিষয়টি নিয়ে ওই অধ্যক্ষের সাথে আলোচনা করেছেন। তারপরও কোনো লাভ হয়নি। তিনি কারো কোনো কথার তোয়াক্কা না করে পথটি বন্ধ করে রেখেছেন।
এ বিষয়ে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য এটি করা হয়েছে।
বিয়ষটি নিয়ে ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে, উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথেও কথা হয়েছে। এটা সীমানা নির্ধারণ করেই দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বলেন, আমরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে কেন পথটি বন্ধ করে রেখেছেন জানতে চেয়েছি। তিনি ওইদিন আমাদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে যোগাযোগ করেন নি। পথটি খুলে দেয়ার জন্য সদর ইউএনওসহ আমি তাকে বলেছি, কোন লাভ হয়নি। এ ছাড়াও মূল ফটকের গেইটিও অনেক সময় তিনি বন্ধ রাখেন। এ জন্য ভিতরে মসজিদের মুসল্লিদের নামাজে আসতে কষ্ট হয়। চলাচলের পথ বন্ধ করে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ বলেন, আমি এবং আমার উপজেলা চেয়ারম্যান গেইটি খুলে দেয়ার জন্য বলেছি। প্রতিষ্ঠানের চারদিকই খোলা, এ গেইট আটকে কিভাবে তিনি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছেন জানি না। গেইটি সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খুলে দেয়ার জন্য তাকে বলা হয়েছে।
সর্বশেষ ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বন্ধ করে রাখা গেইটি গত সোমবার থেকে খুলে দিয়েছেন বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান। কিন্তু পরবর্তীতে গিয়ে দেখা যায় পুরো গেইটি তিনি বন্ধ রেখে চলাচলের জন্য শুধুমাত্র পকেট গেইটি খুলে দিয়েছেন।