গত রোববার সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ বাজারস্থ কিউসি (কাতার-কানাডা) টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট থেকে আটককৃত জামায়াতের ১১ নারী সদস্যকে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। আদালত তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করে। তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিসহ দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপের পরিকল্পনার অভিযোগ এনে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে পুলিশ।

মামলায় আটককৃত ১১ নারীসহ নামীয় ১৫ জন ও অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামী করা হয়। মামলার বাদী হচ্ছেন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ নূরুল আলম।

এর আগে গত রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ নজরুল ইসলাম অন্যান্য অফিসারসহ সঙ্গীয় ফোর্স সাথে নিয়ে ওই ভবনটির ১১ তলার ‘বি’ ব্লকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। ভাড়া এই ফ্ল্যাটটি অবসরকালীন ছুটিতে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালামের। আটককৃতদের মধ্যে আব্দুস সালামের স্ত্রী রয়েছেন। অভিযানে ওই বাসা থেকে জামায়াতের মতাদর্শের বই, প্রচারপত্র, চাঁদা আদায়ের রসিদ, নগদ টাকা ও দাওয়াতি কার্ডসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম জব্দ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন কচুয়া উপজেলার বড়ইগাঁও গ্রামের নাছরিন খানম (৫২), হাতিরবন্ধ গ্রামের আঞ্জুমানারা লাকি (৪০), সাচার গ্রামের শাহানারা বেগম (৪৩), হাজীগঞ্জ উপজেলার বাড্ডা গ্রামের ফাতেমা বেগম (৪২), মকিমাবাদ গ্রামের হাছিনা বেগম (৪৭), ছিলাচোঁ গ্রামের সালমা আহম্মদ (৪০), শাহরাস্তি উপজেলার রাগৈ গ্রামের জেসমিন আক্তার (৪৮), বানিয়াচোঁ গ্রামের নিহারা বেগম (৫৭), বাদিয়া গ্রামের শিরিন বেগম (৪২), বেহেলা গ্রামের মাসুদা বেগম (৪২) ও নিজ মেহের গ্রামের সেলিনা আক্তার (৪৩)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় আমিরকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জামায়াতের নেতা-কর্মীগণ অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপ পরিকল্পনা করার উদ্দেশ্যে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ কিউসি টাওয়ারে গোপন বৈঠকে বসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কিউসি টাওয়ারের ওই ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ২০/২৫ জন সদস্য পালিয়ে যায়। অভিযানে জামায়াতে ইসলামীর ১১ জন নারী সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় জামায়াতের মতাদর্শের বই ও নগদ টাকাসহ জব্দ করা হয়।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার নামীয়সহ অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।