শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

তারা স্বপ্নেও বিএনপির আন্দোলন দেখে ভয়ে আবোল-তাবোল বলছেন
গোলাম মোস্তফা ॥

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ সলিম উল্লাহ সেলিম বলেছেন, এই সরকারের একমাত্র আশ্রয়স্থল এখন পুলিশ। তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা স্বপ্নেও বিএনপির আন্দোলনকে দেখে ভয়ে আবোল-তাবোল বলছেন। অতএব, তাদের শক্তি হলো পুলিশ। যার ওপর ভর করে চলছে। আপনারা দেখেছেন, বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপির জনসভা দেখে সরকার পুলিশ দিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন বাধাগ্রস্ত করছে। সম্মেলনের আগের দিন পুলিশ বাহিনী দিয়ে পরিবহন বন্ধ করে দেয়। সমাবেশে যাওয়া নেতা-কর্মীদের পুলিশের শেল্টারে হামলা চালিয়ে বাধা দিচ্ছে, আহত করছে। মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছে।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। তাঁর সাক্ষাৎকারটি নি¤েœ হুবহু তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছে কবে?

অ্যাডঃ সেলিম : চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : এ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে কবে নাগাদ?

অ্যাডঃ সেলিম : জেলা বিএনপির সম্মেলনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিলরদের গোপন ভোটে চাঁদপুর জেলা বিএনপির দুর্দিনের কাণ্ডারী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক সভাপতি ও আমি অ্যাডঃ সলিম উল্লাহ সেলিম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর আমরা জেলা বিএনপির সংশ্লিষ্ট ইউনিটের নেতা-কর্মী এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দের পরামর্শে একটি প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট দাখিল করেছি। এখন উক্ত কমিটি অনুমোদনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটির। এখানে আমাদের কোনো এখতিয়ার নেই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বিএনপির কোনো শাখার সম্মেলন সম্পন্ন হবার কতোদিন পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে হয়? আর প্রেরিত কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদন দিতে হয় কতোদিনে? এ বিষয়ে বিএনপির গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে কি?

অ্যাডঃ সেলিম : সম্মেলনের পর সাধারণত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাকে কোন্ পদে রাখা যায়, সেটি বিবেচনা করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাঠানো হয়। কিন্তু কতোদিনের মধ্যে পাঠাতে হবে, এসব বিষয়ে গঠনতন্ত্রে কোনো নির্দেশনা নেই। শুধু তাই নয়, কতোদিনের মধ্যে প্রেরিত কমিটি অনুমোদন দিতে হবে সে বিষয়েও গঠনতন্ত্রে কোনো নির্দেশনা দেয়া নেই। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে তা অনুমোদন করে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনারা নানা ইস্যুতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন না ঘোষণা দিয়ে কার্যত সরকার পতনের আন্দোলনই করছেন। আন্দোলনের সাফল্যের ব্যাপারে কতোটুকু আশাবাদী?

অ্যাডঃ সেলিম : আমাদের আন্দোলন এই অবৈধ ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে। এই সরকার রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা আন্দোলনকে ভয় পেয়ে পুলিশ দিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে জেলে ঢুকিয়ে রেখেছে। আইনগত মোকাবিলা করতে হচ্ছে আমাদের প্রতিনিয়ত। হুমকি-ধমকি-গুমণ্ডখুন এতো কিছুর পরও আমাদের সকল কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এতে কি বোঝা যায় না যে, আমরা বিজয়ী হবো। আমাদের আন্দোলন নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন বা দুর্নীতির জন্যে নয়, আমাদের এই আন্দোলন দেশের জনগণের কল্যাণে। জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।

চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির মধ্যে কোনো গ্রুপিং আছে বলে মনে করেন? উপজেলা পর্যায়ের কী অবস্থা? সারাদেশের সর্বত্র গ্রুপিং না মিটিয়ে আপনাদের আন্দোলনের সাফল্য কি পুরোপুরি অর্জন করতে পারবেন?

অ্যাডঃ সেলিম : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি একটি বিশাল রাজনৈতিক সংগঠন। দেশের প্রধান বিরোধী দল। এ দলে পদণ্ডপদবীর জন্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে বা থাকতে পারে। কিন্তু কোনো গ্রুপিং নেই। বিএনপির নেতা-কর্মীদের নেতা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক জিয়া। এর বাইরে আর কোনো নেতা নেই। সবাই খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এক ও ঐক্যবদ্ধ। কোনো শক্তি নেই বিএনপির মধ্যে গ্রুপিং করার। চাঁদপুর জেলা বিএনপি একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন। এখানে কোনো গ্রুপিং-লবিং নেই। আমাদের টার্গেট পূর্ণ করা অর্থাৎ এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছবো। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ বিএনপির আন্দোলন ঠেকাতে আগের মতো রূঢ় নয় কেনো?

অ্যাডঃ সেলিম : আপনার প্রশ্নটি সঠিক নয়, এটি অমূলক একটি অবান্তর কথা। কারণ এই সরকারের একমাত্র আশ্রয়স্থল এখন পুলিশ। তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা স্বপ্নেও বিএনপির আন্দোলনকে দেখে ভয়ে আবোল-তাবোল বলছেন। অতএব, তাদের শক্তি হলো পুলিশ। যার উপর ভর করে চলছে। আপনারা দেখেছেন, বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপির জনসভা দেখে সরকার পুলিশ দিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন বাধাগ্রস্ত করছে। সম্মেলনের আগের দিন পুলিশ বাহিনী দিয়ে পরিবহন বন্ধ করে দেয়। সমাবেশে যাওয়া নেতা-কর্মীদের পুলিশের শেল্টারে হামলা চালিয়ে বাধা দিচ্ছে। আহত করছে। মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছে। এরপরও কি বলবেন পুলিশ রূঢ় আচরণ করছে না?

চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করুন।

অ্যাডঃ সেলিম : চাঁদপুর জেলা বিএনপিসহ সকল উপজেলা বিএনপি একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন। আমাদের চলমান আন্দোলন নিছক আন্দোলন নয়, এটি একটি চলমান যুদ্ধ। এখন আমরা নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্যে যুদ্ধে অবতীর্ণ আছি। এ সরকারের পতন ঘটিয়ে তত্ত্বাবাধয়ক সরকার প্রতিষ্ঠার এই যুদ্ধের জন্যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। অতএব, এ যুদ্ধে বিজয় আমাদের অতি সন্নিকটে। জয় আমাদের হবেই ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য, অ্যাডঃ সলিম উল্যাহ সেলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করেন। তিনি স্কুলে পড়াবস্থায় ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং কলেজ জীবন ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে জেলা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চাঁদপুর জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হন। তারপর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক, পরবর্তীতে জেলা যুবদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। সে সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ভূঁইয়া (বর্তমানে মরহুম)। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন, যার আহ্বায়ক ছিলেন মরহুম খান দেলোয়ার হোসেন। এরপর তিনি চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি দীর্ঘ সময় জেলা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সর্বশেষ চলতি বছর জেলা বিএনপির কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়