প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
ক্লেমন ইনডোর ক্রিকেটসহ ঢাকাতে নিয়মিত খেলছেন সাদ্দাম
ক্লেমন ইনডোর ক্রিকেট সহ ঢাকাতে নিয়মিত খেলছেন ফরিদগঞ্জের সাদ্দাম হোসেন। তার নেতৃত্বে চলতি বছর ক্লেমন ইনডোর ইউনি ক্রিকেটে তার স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি রানার আপ হয়েছে। দলের অধিনায়ক হিসেবে প্রতিটি ম্যাচেই তিনি খেলেন।
সাদ্দাম হোসেন জানান, তার দল বুটেক্স ইউনিভার্সিটি, ড্যাফেডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আনোয়ার খান মডেল কলেজ, সাউথ এশিয়া ইউনিভার্সিটি, শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সাথে জয়লাভ করে।
সাদ্দাম হোসেন এক সময় জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ ডেভ হোয়াটমোরের তত্ত্বাবধানে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেন। ঢাকাতে তার বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে নিয়মিত ঢাকার বিভিন্ন ক্রিকেট লীগ ও ক্রিকেট টুর্নামেন্টে খেলছেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান ও খালেদ মাসুদ পাইলটের তত্ত্বাবধানে ৩২টি ইউনিভার্সিটির অংশগ্রহণে এ টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিলো। টুর্নামেন্টে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আটটি গ্রুপে বিভক্ত করে, প্রত্যেক গ্রুপে চারটি করে মোট ৩২ ইউনিভার্সিটি ৫৫টি ম্যাচ খেলে। ভেন্যু ছিলো মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম। প্রত্যেকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার হয়। এ টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতায় আছে টাইটেল স্পনসর ক্লেমন, পাওয়ার্ড বাই ইয়ামাহা, কো-স্পন্সর ওয়ালটন, ফ্যান্টাস্টিক হেব্বি এনার্জি বিস্কুট, যাচাই, আকিজ বাইসাইকেল, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, আইসক্রীম পার্টনার জেএনজি, ওয়ার্ডরোব পার্টনার আম্বার, হট বেভারেজ পার্টনার ইস্পাহানী ও ড্রিংকিং ওয়াটার পার্টনার স্পা। তিনি চলতি বছর জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপের অধিনায়ক, ঢাকা দক্ষিণ মেয়র কাপ ৩৯নং ওয়ার্ডে অধিনায়ক ছিলেন। তার নেতৃত্বে দল চ্যাম্পিয়ন হয়। তিনি ১ম বিভাগ ক্রিকেট লীগ আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
সাদ্দাম হোসেনের ক্রিকেটের পথচলাটা ২০০৭ সালে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে কোচ শামীম স্যারের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে। এরপর নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখে এক বছর পরেই ২০০৮ সালে জেলার অনূর্ধ্ব-১৪ দলের হয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রিকেটে খেলেন । এভাবে আঞ্চলিক ক্রিকেটে সাফল্য কুড়ানোর মধ্য দিয়ে ঠিক তার দুবছর পর ২০১১ সালটা ছিলো সাদ্দামের জন্যে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির বছর। সে বছরই বয়স ভিত্তিক দলে প্রথম বারের মতো লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। একই বছর ইন্ডিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট ও তিন ম্যাচ ওডিআই সব মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের ম্যাচ খেলেন। নিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাটস্ম্যান হিসেবে খেলেন ৭০ রানের অনবদ্য এক ইনিংস। এরপর খুব একটা পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সাদ্দামকে। ২০১১ সালে বয়সভিত্তিক জাতীয় দল অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে সুযোগ পান নেপালের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে ক্রিকেটে। সে সিরিজটাতে ৩-০তে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ এবং নেপালের বিপক্ষে ২৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। সময়ের পালাক্রমে সুযোগ হয় দেশের প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে। নেপালের বিপক্ষে ৩-০ তে সিরিজ জেতার বছরই ঢাকা লীগে লালমাটিয়া ক্লাবের হয়ে নাম লেখান প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে। এক বছর সিটি ক্লাবের হয়ে খেলার পরের বছরই তাকে দলে নেয় অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট একাদশ। এ ক্লাবটাতেই টানা খেলেন চার বছর। ২০১৬ সালে যোগ দেন ঢাকা লীগের হট ফেভারিট দল রূপগঞ্জ টাইগার্সে। এই দলটার হয়েও খেলেন দুই মৌসুম। সবশেষ এক মৌসুম খেলেছেন আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে। এমন পথযাত্রার মধ্যেও নিজ জেলা চাঁদপুর জেলা দলের বয়সভিত্তিক সবক'টা টুর্নামেন্টেই নিয়মিতভাবে ক্যাপ্টেন্সি করছেন। এখানেই শেষ নয়, নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন্সির মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। ২০১৭-১৮ এবং ২০১৯-২০ সালে সুযোগ হয় দেশের বাইরে রেড ব্লু টুর্নামেন্টে। সাত দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি ওয়ার্ল্ড কাপে এই টুর্নামেন্টে ক্যাপ্টেন হিসেবে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এই দুই আসরে দল প্রত্যাশিত সাফল্য না ফেলেও তিনি চার ম্যাচেই ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। দুটা টুর্নামেন্টেই হোন ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট।
সাদ্দাম স্বপ্ন দেখেন নিজের ক্রিকেট প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে ধারাবাহিক সাফল্য অব্যাহত রেখে একদিন লাল-সবুজের জার্সিটা গায়ে জড়িয়ে বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন। এ প্রতিবেদককে সাদ্দাম জানান, আমি ক্রিকেটের সাথে জড়িত রয়েছি, আমি ক্রিকেটের সাথে জড়িত থাকতে চাই। আমি সকলের দোয়া প্রত্যাশা করছি।