প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৬, ০৩:৫৭
মায়ের অপমানের জবাব দিলেন কোটি মানুষ: জনসমুদ্রের সাক্ষী হয়ে বিশ্বনেতৃত্বের শ্রদ্ধা

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখটি কেবল একটি শোকের দিন নয়, বরং এটি একটি অমোঘ সত্য ও ন্যায়ের বিজয় হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এদিন ঢাকার রাজপথ সাক্ষী হয়েছে এক অভূতপূর্ব মহাকাব্যের। এদিন কেবল বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও ‘দেশমাতা’ বেগম খালেদা জিয়ার বিদায় ঘটেনি, বরং অবসান ঘটেছে এক দীর্ঘস্থায়ী প্রতিহিংসার রাজনীতির। জনসমুদ্রের সেই উত্তাল ঢেউ যেন চিৎকার করে বলে দিয়েছে—ব্যক্তিকে কারান্তরালে রাখা যায়, কিন্তু আদর্শকে শিকল পরানো অসম্ভব।
|আরো খবর
তারেক রহমানের ধৈর্য ও ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ প্রতিদান
ভিডিও : ২০১৮ সালে শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তারেক জিয়ার বক্তব্য।
ফিরে যেতে হয় ২০১৮ সালের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোতে। তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী যখন দম্ভভরে ঘোষণা করেছিল কারাবন্দিত্বের কথা, তখন পুরো জাতি ছিল স্তম্ভিত। অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো এটাই রাজনীতির শেষ অধ্যায়। কিন্তু সেই চরম দুঃসময়ে বিদেশে নির্বাসিত থেকেও অটল ধৈর্য ধরেছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ব্যক্তিগত ক্ষোভ বা উস্কানির পথে না গিয়ে তিনি শান্ত অথচ ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তায় বলেছিলেন—
“খালেদা জিয়া আমার মা, আমি তাঁর সন্তান। কিন্তু তাঁর ওপর হওয়া এই অবর্ণনীয় জুলুমের জবাব আমি ব্যক্তিগতভাবে দেব না; এর জবাব দেবে সময় এবং বাংলাদেশের জনগণ।”

ছবি : খালেদা জিয়ার জানাজায় জনসমাগম
তারেক রহমানের সেই দূরদর্শী ঘোষণা আজ ২০২৫-এর শেষে এসে এক বাস্তব সত্যে পরিণত হয়েছে। জানাজায় অংশ নেওয়া লাখো মানুষের প্রতিটি চোখের জল ছিল প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে এক একটি শক্তিশালী গণরায়। জনগণ প্রমাণ করেছে, রাষ্ট্রযন্ত্রের পেশিশক্তি দিয়ে সাময়িক বিজয় পাওয়া সম্ভব, কিন্তু ইতিহাসের আদালতে জয়ী হতে হলে জনগণের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা অপরিহার্য।

ছবি : খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য পথে মানুষের ঢল নামে। ছবি: এএফপি
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: ঢাকার আকাশ যখন বিশ্বভ্রাতৃত্বের মিলনমেলা
বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে যে, তিনি কেবল একটি দলের নেত্রী ছিলেন না, বরং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার এক প্রতীক। মানিক মিয়া এভিনিউ-তে অনুষ্ঠিত জানাজা রূপ নেয় এক বিশ্বনেতৃত্বের মহামিলনে।
ভারতের বিশেষ প্রতিনিধির উপস্থিতি এবং ব্যক্তিগত শোকবার্তা হস্তান্তর ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। চিঠিতে খালেদা জিয়াকে “আদর্শনিষ্ঠ ও আপসহীন নেত্রী” হিসেবে অভিহিত করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন সূচনা-এর প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া ২৮টিরও বেশি দেশের কূটনীতিকদের উপস্থিতি স্পষ্ট বার্তা দেয়—বিএনপির আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আজ এক নতুন উচ্চতায়।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির বজ্রশপথ
এই বিদায়লগ্নে শোককে শক্তিতে পরিণত করেছে তৃণমূল। আমরা বিশ্বাস করি, বেগম খালেদা জিয়ার ওপর হওয়া প্রতিটি অন্যায়ের জবাব জনগণ দিতে শুরু করেছে। চাঁদপুর জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের বজ্রশপথ—গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ও অবিচল থাকব।
ইতিহাসের নিষ্ঠুর পরিহাস এই যে, যারা তাঁকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল তারা আজ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। আর যাকে নীরবে নিঃশেষ করতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি আজ কোটি মানুষের প্রার্থনায় অমর। তারেক রহমানের ধৈর্য ও জনগণের এই রায়ই আগামী দিনের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার শক্তি।
ডিসিকে/ এমজেডএইচ
প্রতিবেদক : অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, চাঁদপুর জেলা বিএনপি।
ডিসিকে /এমজেডএইচ








