প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০০
জাতীয়তাবাদের আলোকবর্তিকা ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক

রাজনৈতিক সচেতনতা, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা, আত্মবিশ্বাসী ও মানবতার সপক্ষে সদা জাগ্রত, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদের আদর্শ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা এবং তারুণ্যের অগ্রদূত ও রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের প্রবক্তা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের আস্থাভাজন, চাঁদপুরের মাটি ও মানুষের নেতা, চাঁদপুর জেলা বিএনপির নির্ভরতার প্রতীক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। ব্যক্তিসত্তা ও নেতৃত্বের গুণাবলিতে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের গৌরব ও আলোকবর্তিকা। ফলস্বরূপ চাঁদপুরবাসীর হৃদয়ে নিঃস্বার্থ আলোকিত মানুষ।
যারা দুঃসময়ে রাজপথে ছিলেন না, নিপীড়নের সময় গা-ঢাকা দিয়েছিলেন, আজ তারাই দলকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়। কিন্তু চাঁদপুরের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা জানেন, প্রকৃত নেতা কে? যিনি ঝড়-ঝাপটা সামলে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাই এ সময়ের প্রেক্ষাপটে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের সমকক্ষ রাজনীতিবিদ চাঁদপুর জেলা বিএনপি পরিবারে আছে বলে আমি মনে করি না।
আমার নেতা চাঁদপুরের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। মানবিক মূল্যবোধ ও মানবতার পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়েই তিনি রাজনীতি করেন।
আশির দশকে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)তে যোগ দেন এবং অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্যে দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় এবং দলের প্রতি তাঁর আনুগত্য ও নিষ্ঠার জন্যে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি কখনো ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনীতি করেননি, বরং দলের জন্যে কঠিন সময়েও অবিচল থেকেছেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির ওপর দমন-পীড়ন শুরু হলে অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যান, কেউ কেউ দল ত্যাগ করেন। কিন্তু শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক সেই কঠিন সময়ে দলের জন্যে অবিচল থেকেছেন। তিনি কখনও নিজের নিরাপত্তা বা স্বার্থের কথা না ভেবে দলের জন্যে কাজ করেছেন। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে বিএনপির দুঃসময়ে তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির কর্মীদের পক্ষে মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন এবং জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার নেতা-কর্মীদের পাশে থেকেছেন। তাঁর সংগ্রামী পথচলায় বহু বাধা ও মনোবলে বিঘ্নতা ঘটানোর জন্যে সাজানো নাটকীয় মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু তিনি কখনো কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হননি। তাঁর আদর্শ, ত্যাগ এবং কর্মীদের প্রতি ভালোবাসা তাঁকে চাঁদপুরের রাজনীতিতে অটুট আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। দুঃসময়ে দায়িত্ব নেয়া শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ছিলেন ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’। যাঁর একক নেতৃত্বে আজকে চাঁদপুর জেলা বিএনপি ও তাঁর অঙ্গ সংগঠন সুসংগঠিত।
তাঁর রাজনৈতিক পথচলা কখনোই সহজ ছিলো না। একাধিক দমন-পীড়ন, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং মিথ্যা মামলার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুর ও হাইমচরের মাটি ও মানুষের নেতা শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়, কিন্তু তিনি কখনোই পিছু হটেননি। বরং গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর চাঁদপুর-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈষার্ন্বিত হয়ে তাঁকে গৃহবন্দী করেন তৎকালীন সরকারে থাকা আওয়ামী স্বৈরশাসকের দল।
২০২২ সালের এপ্রিলের ২ তারিখে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক জেলা বিএনপির সম্মেলনে তৃণমূল নেতা-কর্মীর ভোটে জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু স্বৈরশাসকের মিথ্যা মামলার ফলে সদ্য নির্বাচিত জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে আবারো কারাগারে বন্দী করে চাঁদপুরের আন্দোলন ও সংগ্রামকে দমন করে রাখার অপচেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারপরও তাঁকে দমন করে রাখা যায়নি। তিনি রাজপথের প্রতিটি আন্দোলন ও সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন।
সর্বশেষ ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন চাঁদপুরে যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলো, তার নেতৃত্বে ছিলেন শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। এই আন্দোলনের সময় চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক আক্তার হোসেন মাঝি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ছাত্রদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার আপামর জনতার মেয়র নামে পরিচিত আক্তার হোসেন মাঝি। তিনি তাঁর এলাকার প্রতিটি মানুষ, নারী, পুরুষ, শিশু কিংবা বয়স্ক সবাই সহ এই আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাদের এলাকার প্রত্যেকটি ঘরকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন আন্দোলনরত ছাত্র জনতার আশ্রয়স্থল হিসেবে।
আক্তার হোসেন মাঝিসহ চাঁদপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির অভিভাবক তথা সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক।
বিএনপির দুঃসময়ের একমাত্র ভরসা ছিলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, নিপীড়ন সহ্য করেছেন, দলের কর্মীদের আগলে রেখেছেন কে? এই প্রশ্ন যদি চাঁদপুরবাসীকে জিজ্ঞেস করা হয় তাহলে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ছাড়া অন্য কোনো নেতার নাম-পরিচয় পরের কথা, চেহারাও কল্পনা করার মত কেউ ছিলো না দলের ক্রান্তিলগ্নে। অথচ আজ যখন দল সুসময়ের দিকে এগোচ্ছে, তখন হাইব্রিড সুবিধাভোগীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে!
কিন্তু আমরা অতীতের মতোই শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকবো। দলকে শক্তিশালী করতে হলে, দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতার ওপরই ভরসা রাখতে হবে। হাইব্রিডদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলে তারা আবারো সুবিধা নেওয়ার আশায় দলের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে। কারণ রাজপথে যারা ছিল, তারাই দলের আসল শক্তি। আর আমাদের শক্তি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির অটল ভিত্তি, এক সংগ্রামী ইতিহাসের ধারক ও বাহক।
ছাত্রজীবন থেকেই শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং ধাপে ধাপে নেতৃত্বের শিখরে পৌঁছেন। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন ও কর্মকাণ্ডে গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। চাঁদপুরে বিএনপি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তিনি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এবং সবসময় আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
সর্বোপরি, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক জাতীয়তাবাদের আলোকবর্তিকা ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।
লেখক পরিচিতি : ছাত্রনেতা, চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদল।