প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২১, ১১:১৩
বাঙালির ব্যক্তিগত অর্জন বঙ্গবন্ধুর কারণেই : ড. সেলিম মাহমুদ
প্রতিটি বাঙালির সব ব্যক্তিগত অর্জন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারণেই হয়েছে। আমাদের একটি স্বাধীন দেশ দিয়েছেন বলে আজ আমরা সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। কেউ ব্যাংকের মালিক, ব্যাংকের এমডি, শিল্পপতি, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিচারপতি, রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশের কোটায় স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি পেয়েছি, আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। মঙ্গলবার ১৭ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সিটি ব্যাংক আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর এক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এসব কথা বলেন।
|আরো খবর
তিনি আরো বলেন, আমাদের বুঝতে হবে জীবনে বঙ্গবন্ধু কেন গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু যদি বাংলাদেশ স্বাধীন না করতেন তাহলে ভারতের সেভেন সিস্টার্স ঘেরা আজকের বাংলাদেশ পাকিস্তানের একটা রাজ্য হিসেবে বড়জোর আসাম কিংবা ত্রিপুরার মতো একটি রাজ্য থাকত। একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন জনপদ হিসেবেই থাকত। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আজ শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, সারাবিশ্বে এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শক্তি। আমরা জীবনে যা কিছু পেয়েছি, তার সবটুকুই বঙ্গবন্ধুর কারণে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল কারণ তিনি তদানীন্তন বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি শুধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই করেননি, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করেছিলেন। বাংলাদেশকে একটি শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে গেছেন। জিয়া-এরশাদের দুই সামরিক সরকার, খালেদা জিয়ার দুই মেয়াদের সরকার দেশকে অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে দিয়েছিল। জাতির পিতার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আবার বাংলাদেশকে জাতির পিতার অর্জিত জায়গায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনাই বাংলাদেশকে আবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিতে পরিণত করেছেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা এ দেশে সব বিদেশি শোষণ বন্ধ করার লক্ষ্যে সাংবিধানিক ও আইনি ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। দেশের সব প্রাকৃতিক ও অন্যান্য সম্পদ তিনিই বিদেশি শক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করেছিলেন। বাংলাদেশে এ যাবত গার্মেন্টসসহ যতটুকু শিল্পায়ন হয়েছে, তার মূল চালিকা শক্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর দেওয়া গ্যাস সম্পদ। খুনিরা সপরিবারে জাতির পিতাকে শুধু হত্যাই করেনি, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে খুনি চক্র ও তাদের সুবিধাভোগীরা জাতির পিতা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে। জাতির পিতার নামটি পর্যন্ত তারা নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল এ জাতির ভাগ্য পরিবর্তনকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা মানুষ যাতে জানতে না পারে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আদর্শের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের ভয় শুধু একটি নামে - সেটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেজন্যই তারা এ নাম নিষিদ্ধ করেছিল, সেজন্যই তাদের এ মিথ্যাচার।
সিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জাতির পিতার জীবন ও কর্মের ওপর এ আলোচনা সভায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও কথা সাহিত্যিক মাশরুর আরেফিন বক্তব্য রাখেন। তিনি তার লেখা ‘আগস্ট আবছায়া’র প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। তার উপন্যাস থেকে জাতির পিতার মরদেহ ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়া নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এবং মরদেহ সম্পূর্ণ অসম্মানজনকভাবে তড়িঘড়ি করে দাফনের চেষ্টার মর্মস্পর্শী বর্ণনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে বহু বছর ধরে। ইতিহাস আজ তার জবাব দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলেই আজ আমি ব্যাংকের এমডি। বাংলাদেশ না হলে হয়ত আমি বড়জোর ক্যাশ অফিসার থাকতাম। আলোচনা সভায় সিটি ব্যাংকের সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।