প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২২, ২৩:০০
কুমিল্লায় সমাবেশ সফল করতে চাঁদপুর জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা
শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে এদেশে কোন নির্বাচন হবে না: বরকত উল্লাহ বুলু
আমরা সকল মতবেদ ভূলে ২৬ তারিখের সমাবেশ সফল করবো: শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক
আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিভাগীয় গণ-সমাবেশ করবে বিএনপি। এই সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি সভা করেছে চাঁদপুর জেলা বিএনপি। শনিবার (১২ নভেম্বর) সকালে শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডস্থ মনিরা ভবনের হল রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা বিভাগীয় গণ-সমাবেশ সমন্বয় কমিটির দলনেতা ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
|আরো খবর
প্রধান বক্তা ছিলেন গণ-সমাবেশ সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সায়েদুল হক সাঈদ,বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক লায়ন হারুনুর রশীদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রাশেদা বেগম হীরা, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব এমএ হান্নান, বাহবুবুল ইসলাম স্বপন, আব্দুস সাত্তার পাটওয়ারী, কেন্দ্রীয় নেতা ওডাঃ সরকার মাহবুব আহমদ শামীম, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ- সভাপতি নিজাম উদ্দিন রিপন, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত, সহ- দপ্তর সম্পাদক শাহরিয়ার মজুমদার হক শিমুল প্রমুখ।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ সলিম উল্লাহ সেলিম, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মুনীর চৌধুরী ও খলিলুর রহমান গাজীর যৌথ সঞ্চালনায় প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, কুমিল্লার নাম শুনলেই শেখ হাসিনা আতঙ্কে থাকে।এই অবৈধ সরকার আবারও অবৈধ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। তার সেই খায়েস আর পূর্ণ হবে না। তিনি বলেন, বিএনপি যে আন্দোলন সংগ্রাম করছে তা বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। তা হচ্ছে এদেশের মানুষকে মুক্তি দেওয়ার জন্য।
আজকে দ্রব্য মূল্যের উদ্ধগতি। ব্যাংক গুলিতে কোন টাকা নেই।সব তারা লুটেপুটে নিয়েছে।এই টাকা নিয়ে কানাডার বেগম পাড়ায় বাড়ি হয়েছে। আর বলে বেগম জিয়া নাকি এতিমের ২ কোটি টাকা মেরে দিয়েছে। অথচ সেই টাকা আজকে বেড়ে ব্যাংকে ৪ কোটি টাকা হয়েছে।ঢাকায় আমাদের সমাবেশের মাধ্যমে আমরা বার্তা দিতে চাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে এদেশে কোন নির্বাচন হবে না।মিনিমাম ৫০ লক্ষ্য লোকের সমাবেশ হবে ঢাকাতে।দেশের মানুষ জেগে ওঠেছে। ভোটাধিকার রক্ষায় তারা ঐক্যবদ্ধ।গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে।
তিনি বলেন, কুমিল্লায় ওই দিন ঐতিহাসিক গণসমাবেশ হবে।এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে। আর ১০ ডিসেম্বর ঢাকার মহাসমাবেশে সরকারকে নতুন বার্তা দেয়া হবে।
বুলু বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কোনো দুর্নীতি করেননি। তিনি আইনে নন, বরং শেখ হাসিনার আঙুলের ইশারাতাইে জেলে আছেন। নিরপরাধ বেগম খালেদা জিয়াকে যেভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার বিচার জনতার আদালতে হবে।’
বরকত উল্লাহ বুলু সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাঁচার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে ক্ষমা চাওয়া তার সাথে আপস করা। এ ছাড়া শেখ হাসিনার বাঁচার কোনো উপায় নেই।’তিনি আরও বলেন, ‘দেশব্যাপী সরকারের দুর্নীতি আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণের মাঝে এখন নাভিশ্বাস। তারা এ থেকে মুক্তি চায়। তাই বিএনপির গণসমাবেশে কেবল বিএনপির কর্মীই নয়, বরং লাখো জনতার ঢল নামছে।’
তিনি ঈমানি দায়িত্ব নিয়ে কুমিল্লার ঐতিহাসিক সমাবেশ সফল করার জন্য চাঁদপুরের নেতাকর্মীদের আহবান জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মোস্তাক মিয়া বলেন, কুমিল্লার রাজপথ ২৬ তারিখ বিএনপি নেতাকর্মীদের দখলে থাকবে।। সেদিন লক্ষ্য লক্ষ্য নেতাকর্মীর ঢল নামবে।প্রতিটি ঘরে ঘরে ২৬ নভেম্বরের প্রোগ্রামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মনিক বলেন, আমরা সকল মতবেদ ভূলে ২৬ তারিখের সমাবেশ সফল করবো।ভয়ের কিছু নেই।আগামী দিনে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হলে শেখ হাসিনাকে সর্ব প্রথম ক্ষমতা থেকে হঠাতে হবে।
প্রস্তুতি সভায় আরো বক্তব্য রাখেন,মতলব উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম শুক্কুর পাটওয়ারী, চাঁদপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হারুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. জহির উদ্দিন বাবর, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শরীফ মোঃ ইউনুছ,সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজালাল মিশন, কচুয়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহজালাল প্রধান, ফরিদগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আমানত গাজী, কচুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মকবুল হোসেন, হাইমচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিন উল্ল্যাহ বেপারী, কচুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি নূরুল আমিন বকাউল, মতলব বিএনপির সহ-সভাপতি ডা. সোহেল আহমেদ প্রমূখ।
সভায় নেতৃবৃন্দ যেকোন মূল্যে কুমিল্লার বিভাগীয় গনসমাবেশ সফল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।এছাড়াও সভায় জেলা বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওঃ জসিম উদ্দিন।সভায় জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মাহবুব আনোয়ার বাবলু, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন খান বাবুল, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সেলিমুছ সালাম, ফেরদৌস আলম বাবু, চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডঃ মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন,কচুয়ার হুমায়ুন কবির প্রধান,চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান,হাইমচর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শফিক,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হযরত আলী, কৃষক দল কেন্দ্রীয় নেতা এনায়েত উল্লাহ খোকন, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার, জেলা মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডঃ মুনিরা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ মুক্তা,জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাদল, সাধারণ সম্পাদক হাবিব ভূঁইয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম জুয়েল, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান,জেলা ছাত্র দলের সভাপতি ইমান হোসেন গাজী, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন পাটওয়ারীসহ জেলা,উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রস্তুতি সভা শেষে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে কুমিল্লার সমাবেশ বিষয়ে জনসচেতনতায় লিফলেট বিতরণ করা হয়। লিফলেট বিতরণের সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক।