প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ঐতিহাসিক ছিটমহল আজ উন্নয়নের মূলধারায়
মোঃ কায়ছার আলী
‘শক্তি নয়, ইচ্ছাই রাষ্ট্রের ভিত্তি’-টি এইচ গ্রীন। হবস, লক এবং রুশোর মতে, ‘চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে’। প্রকৃতির নির্মম খেয়াল থেকে বাঁচার এবং একে অপরের জীবন, সম্পত্তি নিরাপত্তার জন্য পারস্পরিক চুক্তিতে উপনীত হওয়ার ফলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্র, জাতি, উপজাতি, বর্ণ ও গোত্রে বিভক্ত কিন্তু সকলের মূল পরিচয় মানুষ। তাইতো দেশে-দেশে মানুষে-মানুষে এত ভেদ-প্রভেদ থাকা সত্ত্বেও পরস্পরের প্রতি মমত্ববোধ চিরন্তন। মানবাধিকার, জননিরাপত্তাসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা একমাত্র রাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। আমার এক বন্ধু মুক্তিযোদ্ধা, অবসরপ্রাপ্ত দিনাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ময়েজ উদ্দীন আহমেদ আমাকে জোর দিয়ে বললেন-‘পৃথিবীতে যত চুক্তি হয়েছে (বিনা রক্তপাতে)-এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ চুক্তি হলো স্থল সীমান্ত চুক্তি (ছিটমহল বিনিময়)। উন্নত দেশ হলে উভয় দেশের সরকার প্রধান নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতেন। তাঁর কথার সূত্র ধরেই ভাবলাম ছিটমহল নিয়ে পড়ব, জানব এবং লিখব। হাতের কাছে পত্র-পত্রিকা, ইন্টারনেট সার্চ এবং ‘অবরুদ্ধ জনপদ ছিটমহল’ বইয়ের তথ্য সূত্রে জানলাম ছিটমহলের অনেক অজানা ইতিহাস। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের নির্মমতার শিকার বা মোঘল আমলের রাজন্যবর্গের খামখেয়ালিপনার অথবা ক্ষমতার দ্বন্দ্বের প্রতীক হলো ছিটমহল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য কুচবিহারের রাজা এবং রংপুরের মহারাজা তিস্তার পাড়ে তাসখেলায় বাজি ধরতেন ছিটমহলের মালিকানা নিয়ে। তারা ছিলেন সামন্ত। ছিট শব্দের অর্থ খণ্ড বা টুকরা। বিভিন্ন মহলকে এক একটি খণ্ডে বিভক্ত করার পরে এর নাম হয় ছিটমহল। ছিটমহল (ঊহপষধাব) হল রাষ্ট্রের এক বা একাধিক ক্ষুদ্র অংশ, যা অন্য রাষ্ট্র দ্বারা পরিবেষ্টিত। A Piece of territory surrounded by foreign dominion is Enclave. অর্থাৎ বন্দিত্ব বা দেশহীন মানুষের আবাসস্থল ছিটমহল।
ইতিহাস পাঠে জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দীতে মোঘল স¤্রাট শাহজাহানের হঠাৎ অসুস্থতার কারণে কুচবিহারের রাজা প্রাণনারায়ণ কামরূপের সুবেদার মীর লুৎফুল্ল¬াকে আক্রমণ করে মোঘল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু বাড়তি অংশের ওপর নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে আওরঙ্গজেব-এর নির্দেশে বাংলার সুবেদার মীর জুমলা বিশাল বাহিনী নিয়ে কুচবিহার আক্রমণ করেন এবং অধিকৃত মোঘল সাম্রাজ্যের হৃত অংশগুলো পুনরুদ্ধার করে রাজধানী কুচবিহারও অধিকার করে ফেলেন। পরে ইসফান্দিয়ার বেগকে কুচবিহারের দায়িত্ব দেন। রাজা প্রাণনারায়ণ পালিয়ে গিয়ে পরবর্তীতে স্বসৈন্য শক্তি সংগ্রহ করে পুনরায় রাজ্য উদ্ধার করেন। তখন থেকেই মোঘলদের সাথে দফায় দফায় রাজার যুদ্ধ লেগেই থাকত যা শেষ হয় ১৭৭২ সালে। কুচবিহারের রাজা হন শান্তনুনারায়ণ। তখন খাঞ্জা খাঁ কুচবিহারের বোদা, পাটগ্রাম এবং পূর্বভাগে চাকলা তিনটি অধিকার করেন। রাজা বেনামে চাকলা তিনটি ইজারা নেন। অন্য ভূ-সম্পত্তি দ্বারা পরিবেষ্টিত হলেও মূলত এ তিনটি চাকলার অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলগুলোই কুচবিহারের ছিটমহল। পরবর্তীতে বহু বছর ব্যাপী খণ্ড খণ্ড যুদ্ধের ফলে কুচবিহার রাজ্যের বেশ কয়েকটি ভূ-খণ্ডে মোঘলদের দখলদারি কায়েম হয় এবং কালক্রমে এ অংশগুলো রংপুরের জমিদারির অধীনে চলে আসে, যা পরে রংপুরের ছিটমহল নামে পরিচিত। সেই ভূ-খণ্ড মূল সম্পত্তির সঙ্গে এক লপ্তে (Stretch) নয় অথচ ঠিকই খাজনা আসত রাজা বা জমিদারের তহবিলে।
পলাশী যুদ্ধের পর ১৭৮৯ থেকে ১৮০০ সালে ইংরেজরা কৌশলে কুচবিহারের রাজাকে নিজেদের বশে আনেন। সে প্রেক্ষাপটে প্রথমেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কুচবিহার রাজার নিকট হতে বোদা, পাটগ্রাম ও পূর্বভাগে তিনটি চাকলা অধিকার করেন এবং পুনরায় কুচবিহারের রাজার নিকট ফিরিয়ে দেন। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগের সময় সমস্যা বাধে কুচবিহারকে ঘিরে। কুচবিহারের রাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের কিছু জমিদারি স্বত্ব ছিল বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুর জেলার আওতাধীন। অপর দিকে রংপুর ও দিনাজপুরের জমিদারদের কিছু তালুক ও জোর ছিল কুচবিহার সীমানার মধ্যে। উভয়পক্ষ সমঝোতায় ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের মধ্যে ভারতের এবং ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের কিছু এলাকা পড়ে। দেশ বিভাগের মত এত বড় জটিল কাজটি (৮ই জুলাই ১৯৪৭ হতে ১৩ই আগস্ট ১৯৪৭) ঝরৎ ঝরৎরষ জবফপষরভ অখণ্ড ভারতের দীর্ঘদিনের স্থল ও জলযোগাযোগ ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, সমন্বিত অর্থনীতি ও স্থিতি সম্পন্ন এলাকা ব্রিটিশ ভারতের পূর্ব-পশ্চিম দুই অঞ্চলের দুটি প্রদেশ বাংলা ও পাঞ্জাবকে মাঝ বরাবর ধরে ম্যাপের ওপর দাগ টেনে ভাগ করেন। সীমারেখা নির্ধারণী Top Sheet-এর মূলকপি ১৬ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হলে বিতর্কের ঝড় উঠে এবং সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় ছিটমহলবাসীর ১৬২টি ছোট-বড় ভূ-খণ্ড অনিষ্পত্তি অবস্থায় রাখে যার ফলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে এই অঞ্চলকে বিধ্বস্ত বলয় (Shattered Belt) বলা হয়।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ছিল বলেই ছিটমহলবাসীর অবস্থা অত্যন্ত করূণ ও জটিল প্রকৃতির। নাগরিক অধিকার বঞ্চিত, নিপীড়িত অসহায় মানুষগুলো মেয়েদের সম্ভ্রমহানীর ভয়ে সন্ধ্যে হলেই লুকিয়ে রাখত, শান্তিতে ঘুমাতে পারত না, হাসপাতালে গেলে ডাক্তার বাবুরা দেখত না, বলত দু’দিন পরে আস এবং গর্ভবতী মহিলাদের সন্তান জন্ম দানের সময় ভর্তি নিত না। কাজলাদিঘী ছিটমহলের বাসিন্দা হবিবর অসম্ভব মেধাবী ছোট মেয়েকে আত্মীয়-স্বজনের সহায়তায় পরিচয় গোপন করে বাংলাদেশের একটি স্কুলে ভর্তি করায়। মেয়েটি এইচএসসি পরীক্ষায় এচঅ-৫ পেলে তার পিতৃ-পরিচয় জানাজানি হয়ে যায়। দেশি-বিদেশি সংস্থা মেয়েটির পড়াশুনার সহযোগিতা করতে আগ্রহী হলে আইনগত সমস্যা দেখা দেয়। এই অবস্থায় মেয়েটিকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলে সে পড়াশুনা ছাড়তে চায় না এবং দিনরাত কান্নাকাটি করে। খাগরাবাড়ি সরকারপাড়া ছিটে সুরতন বেগমের জন্ম হওয়ায় বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু শ্বশুর বাড়ি যাওয়া হয়নি। নিরূপায় বাবা চেরুমদ্দীন জামাই এনে ঘরে রেখেছিলেন। কোর্টভাজনী ছিটের স্বপন চন্দ্র রায় গোপনে বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পরেও পুলিশের চাকরিতে উত্তীর্ণ হয়েও নাগরিকত্বের জটিলতায় চাকরি হয়নি এবং বর্তমানে তার চাকুরির বয়স নেই।
মনছুর আলী মিয়া বলেন, ১৯৬৬ সালে ৭ বছর আমরা গ্রাম থেকে বের হতে পারিনি। গ্রামে হকার আসতো। আমরা গ্রাম থেকে বের হলেই ভারতের পুলিশ তাঁরা করত। ১৯৯২ সালে শালবাড়ি ছিটমহলে শালবনের গাছ কেটে ফেলেছিল দুষ্কৃতকারীরা। এরপর তারা ধরা পড়লে উভয়পক্ষের মারামারিতে, মারা যায় ১জন, আহত অনেক, ৫শত বাড়িতে আগুন, নির্বিচারে লুটতরাজ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ বন্ধ, অবরুদ্ধ এবং সারারাত চলে নারী ধর্ষণ। ঘটনাগুলোর বিচার করাতো দূরের কথা, তদন্ত পর্যন্ত হয় নি। রেডক্লিফ রোয়েদাদ, বাউন্ডারি কমিশনের রিপোর্ট, নুন-নেহেরু চুক্তি, ১৯৭৪ সালের ১৬ মে ইন্দিরা-মুজিব ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরের পরেও দীর্ঘ ৬৮ বছর (৩টি প্রজন্ম) বিচ্ছিন্ন ভূ-খণ্ডের অবহেলিত, নাগরিকত্বহীন মানুষেরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করেছে, যাকে সোজা কথায় বলা যায়, সভ্য সমাজের এক ‘কলঙ্ক তিলক’।
জাতিসংঘ সনদে Protocol to the Internationl Convanant on Civil & Political Right এর ৪.৩ (৩) অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে “রাষ্ট্র সকলের আত্মবিকাশের সমান সুযোগ প্রদান করবে”। অন্যত্র জোর দিয়ে বলা হয়েছে “প্রত্যেক শিশুর একটি জাতীয়তা লাভের অধিকার থাকবে”। এ কথাগুলো একদিন ছিল কাগজে আর কলমে, বাস্তবে নয়। বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার ১৯৯৬ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির সূত্র ধরে নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন। ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশে সফরে এলে তখন একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ছিটমহল বিনিময় ও সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিলটি (জলসীমানা পূর্বেই মিমাংসিত) ৬ই সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মহান জাতীয় সংসদে পাস হয়। নরেন্দ্র মোদীর সরকার ২/৩ অংশের বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসে ছিটমহলবাসীর দীর্ঘদিনের করুণ আর্তনাদ কর্ণগোচর হয়। অদৃশ্য সেই অভিশাপ বা সীমান্তরেখা গত ৭ মে ২০১৫ সালে ১১৯তম (প্রকৃতকক্ষে ১০০তম এবং স্বাধীনতা বা বিজয় দিবসের মত) স্থলসীমান্তচুক্তি সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল (ছিটমহল বিনিময়) ভারতের লোকসভায় ৩৩১ জন সদস্যের উপস্থিতিতে এবং সর্বসম্মতক্রমে পাস হয়। বাংলাদেশের মধ্যে ভারতের ১১১টি ছিটমহল (লালমনির হাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি, কুড়িগ্রামে ১২টি, নীলফামারীতে ৪টি মোট ১৭হাজার ১৬০.৬৩ একর জনসংখ্যা ৩৭ হাজার ৩৮৬ জন) বাংলাদেশ পেল এবং ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের ৫১ টি ছিটমহল (কুচবিহারে ৪৭টি, জলপাইগুড়িতে ৪টি, মোট ৭ হাজার ১১০.০২ একর জনসংখ্যা ১৪ হাজার ৯০ জন) ভারত পেল। বসবাসরতরা ইচ্ছানুযায়ী যে কোনো দেশের অভ্যন্তরেই থেকে যেতে পারলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ভারতের জোর করে দখল করে রাখা ২২৬৭.৬৮২ একর এবং ভারত বাংলাদেশের জোর করে দখল করে রাখা ২৭৭৭.৩৮ একর জমি যার যা দখলে আছে সে তার মালিকানা পেল। তদুপরি নীলফামারী-পশ্চিমবঙ্গ, ফেনীর মহুরী নদী-ত্রিপুরা, লাঠিটিলা ও ডুমাবাড়ী-আসাম সীমান্তে ৬.৫ কি.মি. অমিমাংসিত সীমারেখা স্থির করা হবে এবং তিন বিঘা করিডোর ২৪ ঘন্টা খোলা থাকলো।
২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও গুরুত্ব পেয়েছিল ছিটমহল বিনিময়ের খবর। বিশ্ববাসী জানতে পেরেছিল আমরা উভয়দেশ মিলেমিশে একসাথে ভালো কাজ করতে পারি। এখন তাদের জীবন ধারা বদলে গেছে। দাসিয়ারছড়ার ছোট কামাত গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছোবেয়া খাতুন (৫১) বলেন, “ভাবিনি কোন দিন বাঁচার অবলম্বন পাব। প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে এখন নতুন করে জীবন পেয়েছি”। কালিরহাটের জয়নাল (৪৬) দৈনন্দিন রোজগারের অবলম্বন একটি ভ্যান পেয়ে স্ত্রী সন্তানদের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে পারছেন। সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় জীবনের শেষ আশ্রয় একটি ঘর পেয়ে স্বস্তিতে আছেন আশ্রয়হীন ভবঘুরে বালাতাড়ি গ্রামের হাতেম আলী, মংলু চন্দ্র, জংলু চন্দ্র। কামালপুর গ্রামের আবুবক্কর সিদ্দিক (৭৯) বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন, আপন করে নিয়েছেন। তাঁর কাছে ছিটমহলবাসী সারা জীবন কৃতজ্ঞ। ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন কাটাচ্ছিল রাশমেলা গ্রামের জহিরন, জমিলা ও রাশেদা। বিধবা ভাতা পেয়ে এখন তারা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়েছেন। পুষ্টি প্রোগ্রামের আওতায় সন্তানসহ নিজের নানা পরামর্শ, ঔষধ ও খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন বালাতাড়ি গ্রামের মুক্তা বেগম, জহিরন ও তানিয়া। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট, আকাশ সংস্কৃতি, বিদ্যুৎ সংযুক্তিসহ আধুনিক রাষ্ট্রের সকল সুযোগ-সুবিধা তাদের কাছে স্বপ্ন নয় বাস্তবে দৃশ্যমান হচ্ছে। এই অসম্ভব কাজকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে দীর্ঘদিনের জটিল ও স্পর্শকাতর ইস্যুর সমাধান হওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশ সরকার প্রধানের নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। পরিশেষে দুই দেশের ছিটমহলবাসীর ২০১২ সালে সেই সম্মিলিত স্লোগান, ‘দাও নাগরিকত্ব, নয় মৃত্যু’। ২০১৫ সালে এসে তা পূর্ণতা পেল। তবে মৃত্যু নয়, বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে। বর্তমানে জয় হয়েছে মানবিকতা, মূল্যবোধ এবং মনুষ্যত্বের। বর্তমান প্রজন্ম শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আলোর পথে এগিয়ে যাবে, সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে। এজন্য সমগ্র ভারতবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে আর মাত্র দুটো বাক্য লিখে শেষ করছি-“শুরুটা জাতির পিতার, কন্যা করেছে শেষ। কার্যকর হোল স্থল সীমান্ত চুক্তি, ভারত-বাংলাদেশ”।
লেখক : শিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।