বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

শিক্ষক ও শিশু পর্যবেক্ষণ
হোসনে আরা

একজন শিশুর সর্বোতমুখী বিকাশের অভিপ্রায়ে শ্রেণিকক্ষে যিনি শিখন শেখানোর কাজে গুরুদায়িত্ব পালন করেন তিনিই শিক্ষক। শিশুর দৈহিক, মানসিক, পারিপার্শ্বিক বিষয়কে হালকাভাবে না দেখে শিশুর সার্বিক বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করে মনোযোগ সহকারে তার বিভিন্ন দিক তীক্ষèভাবে দেখাই হলো শিশু পর্যবেক্ষণ।

শিশু শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করেই শিক্ষা কার্যক্রম আবর্তিত হয়। শিশুর শক্তি, সামর্থ্য, রুচি, আগ্রহ, মনোযোগ, চাহিদা ইত্যাদি বিষয়গুলোকে অতীতে বিশেষ দাম দেয়া না হলেও বর্তমানে এগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। শিক্ষক বিষয় উপস্থাপনে ও বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিশুর সর্বোতমুখী বিকাশ সাধনের জন্যে সহায়তা করে থাকেন। শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যে প্রত্যেক শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে নিয়ে প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যার সমাধান শুধু বিষয়বস্তুর জ্ঞান দ্বারা সম্ভব হয় না। কারণ শিক্ষার্থীকে কীভাবে পাঠে মনোযোগী করা যায়, কীভাবে তার মনে আগ্রহের সঞ্চার করা যায়, তার গ্রহণক্ষমতা অনুসারে কীভাবে সীমিত সময়ে অধিক বিষয় উপস্থাপন করা যায়, তার উপর কেমন কার্যক্রম পরিচালনা করলে শিখন দীর্ঘস্থায়ী হবে ইত্যাদি সমস্যার সমাধান একজন শিক্ষককেই খুঁজতে হয়। এসব সমস্যার সমাধান করে শিশু শিক্ষাকে সার্থক করার অভিপ্রায়ে শিশু পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। অর্থাৎ আধুনিক পদ্ধতিতে একটি শিশুর সর্বোতমুখী বিকাশকল্পে একজন শিক্ষকের প্রাথমিক ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে শিশুকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা।

আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার মূল ব্যক্তি হলো শিশু। শিশু শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করেই শ্রেণি শিক্ষককে শিখনকার্য পরিচালনা করতে হয়। কাজেই কর্মচঞ্চল শিশুকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অনুধাবন করে তার বিশেষ বৈশিষ্ট্যের প্রতি নজর রেখে যত্ন সহকারে শিক্ষা দিতে হবে। শিশুকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই একজন শিক্ষক অনুধাবন করতে পারেন যে, শিশুর কর্মচঞ্চলতাই তার শিক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি বিশেষ। এক্ষেত্রে শিক্ষক তাকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করেন মাত্র। যদিও প্রতিটি শিশু জীবন্ত সত্তার অধিকারী, কিন্তু সে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। তার আশা আকাঙ্ক্ষা পাওয়ার, জানার সমস্যা একান্ত নিবিড়ভাবে তাকে দেখতে হবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। যে পরীক্ষা শিশুর বিভিন্নমুখী সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে। প্রত্যেক শিশুর কতগুলো সহজাত প্রবৃত্তি আছে, এগুলোর মাধ্যমে একটি শিশুর জানার আগ্রহ আছে বলে সে সমস্যার অন্তরালে সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টায় ব্রতী হয়। শিশুর স্বতঃস্ফূর্ত অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে, সঠিক চিন্তনের মাধ্যমে শিক্ষক শিশুকে পরিচালিত করেন। শিশুর বয়স সামর্থ্য, আগ্রহপ্রবণতা ও বিভিন্ন সমস্যা নির্ধারণ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে তার সর্বাঙ্গীণ বিকাশের ব্যবস্থা করাই একজন শিক্ষকের শিশু পর্যবেক্ষণের মূল উদ্দেশ্য।

শিশুর দৈহিক ও মানসিক বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার আচরণের মাধ্যমে। তাই প্রতিটি শিশুর চিন্তাভাবনা, আগ্রহ, বয়স, মেধা-রুচি, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, তার শিখন প্রস্তুতি পারিপাশির্^কতার বিবরণ শিক্ষক লিপিবদ্ধ করে রাখলে একজন শিক্ষকের শিখন শেখানো কার্যক্রম সফল হবে বলে আমার বিশ্বাস।

হোসনে আরা : প্রধান শিক্ষক, বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়