শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শাহরাস্তিতে জেলা ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার, চিকিৎসার জন্য কুমিল্লায় প্রেরণ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

কাঙ্ক্ষিত সমাজপ্রগতির দল-‘জাসদ’
অনলাইন ডেস্ক

মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বলিষ্ঠ উত্তরাধিকারী, জনগণের অধিকার ও সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী তথা সুবর্ণজয়ন্তী আজ। আর এই দলটির বেলায় বলতে হয়, ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের গর্ভে যেমন জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ, ঠিক তেমনি মুক্তিযুদ্ধের অসম্পূর্ণতাকে পূর্ণতা দিতে, স্বাধীন বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত করতে জন্ম নিয়েছে একটি রাজনৈতিক শক্তি, যার নাম জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।

বামপন্থী ঐতিহ্যের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্তরে স্তরে সামাজিক বিপ্লবের মাধ্যমে ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার স্লোগান এবং সুমহান জাতীয় মুক্তির আন্দোলন ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশের যুবসমাজ মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনার ভিত্তিতে দেশ গঠনের সংগ্রাম বেগবান করতে ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর গঠন করেছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। আর এ দল কোনো শ্রেণী সংগঠন নয়, বরং প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই একটি সমাজতান্ত্রিক ‘গণসংগঠন’। ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ কায়েমের লক্ষ্য যার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সামরিক-বেসামরিক স্বৈরতন্ত্রের ষড়যন্ত্র ও অপরিমেয় অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন-খুন সহ্য করতে হয়েছে এ দলকে। এ দল হারিয়েছে হাজার হাজার কর্মী-সাথীকে। বারবার নিষিদ্ধ হয়েছে দলের কার্যক্রম। দলের মধ্যে ভিন্নমতের কারণে বিভিন্ন সময়ে অনেকে দল ত্যাগ করেছেন, অনেকে অন্য দলে যোগ দিয়েছেন, অনেকে অন্য দল গঠন করেছেন, অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন, কিন্তু আইনগতভাবে জাসদ একটাই। দলের মূলধারায় আমরা যারা আছি তারা অভীষ্ট লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি।

গত শত বছরের বেশি সময় আমরা বামপন্থী রাজনীতিবিদরা মার্কসবাদ ও প্রাসঙ্গিক তত্ত্বগুলো চর্চা করছি মৌলবাদের মতো, এমনকি আচরণ করছি ‘মতবাদের দাস’-এর মতো। কিন্তু একুশ শতকের তৃতীয় দশকে পুঁজিবাদের বিশ্বায়নের যুগেও আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণগুলো তেমন বস্তুনিষ্ঠ করতে পারিনি।

কার্ল মার্কস যেভাবে অনুমান করেছিলেন, এ যাবৎকালে কোথাও সেভাবে সমাজতন্ত্র কায়েম হয়নি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নে যেভাবে সমাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে সেভাবে দ্বিতীয় আর কোনো দেশে হয়নি। অপরদিকে চীনে যেভাবে সমাজতন্ত্র এসেছে, তা কার্ল মার্কস ও ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের চিন্তার চেয়ে আরও বেশি আলাদা। তবে অনেক দেশেই মার্কস-লেনিন বর্ণিত পথে বিপ্লব না হয়ে সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে সমাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে। আবার কোনো কোনো দেশে স্বৈরশাসন-বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বামণ্ডসমাজতন্ত্রীরা ক্ষমতায় এসেছে, যারা সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচির প্রায় অনেক উপাদান গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েমের ম্যান্ডেট সমৃদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের আগে-পরে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ কায়েমের কথা বলেছেন। পরে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন বিষয়ে বঙ্গবন্ধুসহ ক’জন ছাত্রনেতার সাথে ছাত্রলীগের বৃহৎ অংশের নেতাদের ভিন্নমতের কারণে ’৭২-এর অক্টোবরে গঠিত হয় ‘জাসদ’। রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র এবং জাসদণ্ডএর একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে মনে করি, ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ অভিধাটির রয়েছে অনেক ধারণ ক্ষমতা। আমাদের নিজেদের জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম ও বিশ্বব্যাপী চর্চিত ও চিন্তিত বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অভিজ্ঞতাগুলো পর্যালোচনা সাপেক্ষে আমরা ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ বিষয়ে একটি ‘ধারণাগত কাঠামো’ প্রণয়ন ও তার ভিত্তিতে পঠন-শিখন-অনুশীলন-আন্দোলন করছি।

জাসদের জন্ম হয়েছিলো সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে, বিপ্লবী পথে। প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেক্ষিত ছিলো সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মাঝে বেড়ে ওঠা সাম্য তথা শোষণমুক্ত সমাজ নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা। তখন বিশ্বে চলছিলো সমাজতন্ত্র ও জাতিগত আত্মনিয়ন্ত্রণের অনুরণন। আর বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম ছিলো না। বিজয়ী মুক্তি সংগ্রামের পর দেশ গড়ার নীতিতে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি যখন প্রত্যাখ্যাত হলো তখন মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম চালিকাশক্তি যুব সমাজের সঙ্গে সরকারের ব্যবধান তৈরি হলো। কোনোরকম সাংগঠনিক পদক্ষেপ বা কর্মকৌশল দিয়েও এই ব্যবধান তদানীন্তন রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ দূর করার চেষ্টা করেননি। ফলে জনমনের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে প্রগতিশীল একটি রাজনৈতিক দলের জন্ম ছিলো অবধারিত। একদিকে সরকারের অসহিষ্ণু চাপ, অপরদিকে সনাতনী সমাজতান্ত্রিক দলগুলোর সাথে আদর্শগত বিতর্ক মোকাবিলা করে ‘জাসদ’কে নিজ পায়ে দাঁড়াতে হয়েছিলো।

৫০ বছরের যাত্রাপথে ‘জাসদ’কে নানা চড়াই-উৎরাই তথা সংগ্রাম-চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পার হতে হয়েছে। আমাদের অগ্রজ নেতৃবৃন্দ গত শতাব্দির ষাটের দশক থেকেই বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন করার নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে একনিষ্ঠভাবে ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক দলের মাঝে কাজ করে গেছে। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ নামের নিউক্লিয়াস ছিলো স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাণকেন্দ্র। সে সময় নিউক্লিয়াসের মাধ্যমে সমাজতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। যা ১৯৭০ সালে ‘স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ’-এর প্রস্তাব হিসেবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাস হয়। ‘স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার বিষয় স্পষ্টতর হতে থাকে। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঘোষিত স্বাধীনতার ইশতেহার বা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের ঘোষণা ও কর্মসূচিতে বলা হয়, ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে অঞ্চলে অঞ্চলে ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বৈষম্য নিরসনকল্পে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করে কৃষক-শ্রমিক রাজ কায়েম করতে হবে।’ এর প্রেক্ষিতে ’৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সমাজতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছাত্রলীগ বিভক্ত হয় এবং পরবর্তীতে ’৭২ সালের ৩১ অক্টোবর গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজনৈতিক দল তথা প্রথম বিরোধী দল-‘জাসদ’। স্বাধীন দেশে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক অবিমৃষ্যকারিতা দেশকে লুটেরা পুঁজিবাদী ধারায় নিয়ে যায়, যা দেশকে আবারো পুরানো ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণে নিক্ষেপ করে। ইতোমধ্যে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা সংগঠিত হবার সময় পায় ও ক্ষমতাসীনদের পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুর্বলতা, নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও গণবিচ্ছিন্নতার সুযোগে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে সামরিক ক্যু সংঘটিত করে। যে ষড়যন্ত্রে খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা প্রক্রিয়ায় যা আজ সকলেই স্পষ্টভাবে অবহিত। বঙ্গবন্ধু হত্যায় জাসদ রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রাজনৈতিক আন্দোলন করা কঠিন হয়ে পড়ে। খন্দকার মোশতাক এবং খালেদ মোশারফের সরকার কোনো রাজনৈতিক সরকার ছিল না। ছিলো ষড়যন্ত্রমূলক কর্তৃত্ব। দেশ পুরোপুরি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক সামরিক শাসনের ধারায় সামিল হয়।

পরিস্থিতি যখন চরম অনিশ্চিয়তার মধ্যে তখন ৭ নভেম্বর জাসদের সম্মতি ও কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। উক্ত অভ্যুত্থানের বিজয় জাসদ নেতৃত্ব ধরে রাখতে পারেনি। জেনারেল জিয়া দেশী-বিদেশী সহযোগতিায় ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি’ নামে প্রতিবিপ্লব সংঘটিত করেছে, অর্ডিনেন্স দিয়ে সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন করেছে, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামাত-মুসলিম লীগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্যে বিএনপি গঠন করেছে, জাসদ নেতাদের পুনরায় জেল দিয়েছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিয়েছে।

‘জাসদ’ জেনারেল জিয়াকে যেমনি গ্রহণ করেনি, তেমনি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জেনারেল এরশাদকেও মেনে নেয়নি এবং রাজনীতিতে অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ অবসানকল্পে আপসহীন সংগ্রাম গড়ে তোলে। সে উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৫ দলীয় জোট, ৭ দলীয় জোট এবং পরবর্তী পর্যায়ে ৮ দল, ৫ দল ও ৭ দলীয় জোট গড়ে উঠেছিলো। অবশেষে ডাঃ মিলন, শাজাহান সিরাজসহ অনেকের আত্মদানের মাধ্যমে এরশাদ সরকারের পতন হয়।

’৯০-এর সামরিক শাসনবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশ সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে পুনরায় যাত্রা শুরু করে। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরির্তনের ধারা তৈরি হয়। কিন্তু ২০০১ সাল থেকে দেশ আবার উল্টো পথে হাঁটতে থাকে। এসব প্রেক্ষিতে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা ও মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তীতে ঔপনিবেশিক বদলের যেসব কর্তব্য সম্পাদন করা যায়নি তা সম্পন্ন করা, মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে যেসব বিকৃতি দ্বারা কলুষিত করা হয়েছে তাকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করা, স্বাধীনতার পরে যে জাতীয় ঐক্যকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া যায়নি তা গড়ে তোলার জন্যে ঐতিহাসিক প্রয়োজনে ১৪ দলীয় ঐক্যজোট গড়ে উঠে ও পরবর্তীতে তা নির্বাচনী সমঝোতার মহাজোটে পরিণত হয়। মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্যে ১৪ দল ২১ দফা কর্মসূচি জাতির সামনে তুলে ধরে।

মুক্তিযুদ্ধের পর ছাত্র-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলার যে কর্মসূচি ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছিলেন, ১৪ দলের মাধ্যমে সে ধরনের রাজনৈতিক কর্তব্য পালনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া সম্ভব বলে জাসদ মূল্যায়ন করে। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-নির্বাচন-সরকার গঠনের জন্যে ১৪ দলকে অঙ্গীকারবদ্ধ করার বিষয়ে জাসদ প্রধান উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করে। তার ফসল হিসেবে আজ ১৪ দল তথা মহাজোটের সরকার পরপর তিন টার্ম দেশ পরিচালনা করছে। তবে নানাবিধ বিভ্রান্তি, ১৪ দলের অভ্যন্তরীণ সংহতির অভাব সত্ত্বেও জাসদ নীতির প্রশ্নে সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জাসদের ৫০ বছর পূর্তিতে এটা স্পষ্টভাবে বলা যায়, নীতির প্রশ্নে জাসদ সবসময় অটল ছিলো এবং এখন অনেক অভিজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রশ্নে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি দৃঢ় করতে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জাসদ অবিচল ছিলো। বিপ্লবী অভ্যুত্থান সংঘটিত করতে এবং ষড়যন্ত্রকারী প্রতিবিপ্লবীদের মোকাবিলা করতে জাসদের নেতা-কর্মীরা নির্দ্বিধায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।

আমাদের কাঙ্ক্ষিত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্যে জাতীয় ঐক্য এক অপরিহার্য শর্ত। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের ভিত। তারই সাথে এই প্রত্যয় নিয়ে ‘জাসদ’ যে কাজটি করতে চায় তা হলো একদিকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে অংশ নেয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে সুসংহত করা, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনা প্রতিহত করা, দুঃশাসন-নীতিহীনতা, দলবাজি-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি-বৈষম্যের অবসান, এসবের জন্যে দল হিসেবে আপসহীন শক্তির প্রতীক হয়ে জনগণের সামনে উদ্ভাসিত হওয়া এবং সমাজতন্ত্রের আন্দোলনের উপাদান সামনে নিয়ে আসা।

অধ্যাপক মোঃ হাছান আলী সিকদার : সভাপতি, চাঁদপুর জেলা জাসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা, চাঁদপুর জেলা শিক্ষক নেতা এবং সমাজ ও রাজনীতিবিশ্লেষক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়