বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

এমন শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ানো দরকার

এমন শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ানো দরকার
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুর কণ্ঠের হাজীগঞ্জ ব্যুরো ইনচার্জ কামরুজ্জামান টুটুল কিছুটা গতানুগতিকতার বাইরে এসে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন পরিবেশন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সেটি ছাপা হয়েছে। এ প্রতিবেদনের শিরোনাম হয়েছে ‘মাছের ফেরিওয়ালা সজিব বিবিএস শিক্ষার্থী!’ শিরোনামটি ছোট হলেও পাঠকের চোখ আটকে যায় এবং পুরো প্রতিবেদনটি পড়ার জন্যে কৌতূহল তৈরি হয়।

প্রতিবেদনটির সারাংশ হচ্ছে এমন : হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯নং গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের গন্ধর্ব্যপুর গ্রামের রাধেশ্যাম চন্দ্র দাসের ২ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট হচ্ছেন সজিব দাস। বহু আগে তিনি তার মা তুলশী রাণী দাসকে হারিয়েছেন। সংসারে আছেন অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা। এমতাবস্থায় সজিবকেই ধরতে হয়েছে সংসারের হাল। প্রতিদিন সকাল বেলা স্থানীয় আড়ত থেকে পাইকারী মূল্যে মাছ কিনে বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিক্রি করেন বহুদিন ধরে। মাছ ধরা ও বিক্রি করা পিতার পেশা হলেও তিনি অসুস্থতা ও বার্ধক্যহেতু সে পেশায় থাকতে না পারায় অগত্যা সজিবকেই ধরতে হয়েছে সংসারের হাল। প্রতিদিন সকালে রুটিনমাফিক মাছ বিক্রি করে তার আয় হয় প্রায় ৩শ’ টাকা। এতেই কোনো রকমে চলে তার সংসার। মাছ বিক্রি শেষে বাড়িতে ফিরে গোসল সেরে মেহের ডিগ্রি কলেজে যান ক্লাস করতে। তিনি এ কলেজের বিবিএস শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সজিব ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করেন। ২০২০ সালে নিজ এলাকার কাঁকৈরতলা জনতা কলেজ থেকে পাস করেন এইচএসসি। তারপর দূরবর্তী মেহের ডিগ্রি কলেজে বিবিএসে ভর্তি হন। তার বাবা রাধেশ্যাম চন্দ্র দাস বলেন, ছোটবেলা থেকেই সজিবের লেখাপড়ার প্রতি অনেক আগ্রহ। তার ইচ্ছা বড় অফিসার হবে। কিন্তু আমার আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় আমি তাকে ভালোভাবে পড়াতে পারছি না। সে তার অদম্য ইচ্ছা ও আন্তরিক চেষ্টায় ডিগ্রি পর্যন্ত গিয়েছে। সরকারের বা যে কারো সহায়তা পেলে হয়তো লেখাপড়াটা ভালোভাবে শেষ করতে পারবে। সজিব জানিয়েছেন, তিনি এ পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পাননি। শিক্ষানুরাগী কোনো হৃদয়বান ব্যক্তির সহযোগিতা পেলে তিনি তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন। গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম হিরা চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেছেন, আমি জেনেছি সজিব কষ্ট করে লেখাপড়া করে। যতদূর সম্ভব সহায়তা করবো। কাঁকৈরতলা জনতা কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল হক পাটোয়ারী বলেন, আমাদের সাবেক শিক্ষার্থী সজিব মেধাবী, তবে অসহায়। আমরা তাকে সম্ভাব্য সহযোগিতা করেছি। বাস্তবে আর্থিক অনটনের কারণে সে বেশিদূর এগুতে পারছে না।

তিক্ত হলেও সত্য কথা এই যে, আমাদের দেশের সামর্থ্যবান অভিভাবকরা নিজ সন্তানকে প্রাইভেট পড়িয়ে, কোচিংয়ে দিয়ে অনেক টাকা খরচ করে পরীক্ষায় জিপিএ-৫ করায়ত্ত করার প্রয়াস চালায়। এমন শিক্ষার্থীরা ফলাফলের গুণে কিংবা কাগুজে প্রমাণে জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার বৃত্তি বা আর্থিক অনুদান পায়, সংবর্ধিত হয়। সজিবের মতো অদম্য গরিব শিক্ষার্থীরা ভাগ্যগুণে যদি জিপিএ-৫ পায় তাহলে তারাও সংবর্ধনা পায়, বৃত্তি পায় কিংবা আর্থিক অনুদান পায়। অন্যথায় তারা আড়ালেই থেকে যায় এবং শিক্ষাজীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে গিয়ে হোঁচট খায়। এদের পাশে বিশেষ বিবেচনায় এমপি, জেলা/উপজেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ, রোটারী, লায়ন্স ও অ্যাপেক্স ক্লাবসহ অন্যান্য যে কোনো সংস্থার কার্যকর সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়