প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
রেল কর্তৃপক্ষের বিলম্বিত বোধোদয়
সীমানা বেষ্টনী বা দেয়ালের অভাবে চাঁদপুরে রেলওয়ের মূল্যবান সম্পদ চুরি যাওয়াটা নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়ে আছে যুগের পর যুগ। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) বিশাল রেল এলাকায় এ চুরি ঠেকাত হিমশিম খাচ্ছে কিংবা জনবল সঙ্কটে ব্যর্থ হচ্ছে। আবার এমনও শোনা যাচ্ছে, ২/১ জন বিপথগামী আরএনবি সদস্য কিংবা অন্য কোনো রেল কর্মচারী চোরদের সাথে একাত্ম হয়ে ভাগ-বাঁটোয়ারার চুক্তিতে রেল সম্পদ চুরিতে সহায়তা করছে। লোহা-লক্কড় কিংবা ভাঙ্গারির দোকান থেকে চুরি হওয়া রেলের মালামাল উদ্ধারের ঘটনাও আবার ঘটছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
|আরো খবর
চাঁদপুর বড় স্টেশনে সুইপার কলোনীর বিপরীতে অবস্থিত ট্রেন ধোয়ামোছার ‘ওয়াশপিট’ নামক স্থানে সীমানা দেয়ালের অভাবে এবং আরএনবির দায়িত্বপালন যথাযথ না হওয়ার কারণে ট্রেনের কতো মূল্যবান মালামাল যে চুরি হয়েছে, তার হিসেব বের করা কঠিন। আর ক্যারেজ ডিপোর পাশে সীমানা দেয়াল না থাকায় অনুরূপ বেহিসেবী চুরি হয়েছে বছরের পর বছর। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের বোধোদয় হয়নি। উক্ত ক্যারেজ ডিপোর পার্শ্ববর্তী কয়লাঘাট সংলগ্ন এলাকায় রেলওয়ের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনায় বসবাস করে চোর-ছিনতাইকারীদের একটি বিরাট অংশ। এরা ওয়াশপিট, ক্যারেজ ডিপোসহ বড়স্টেশন এলাকার বিভিন্ন স্থানে শুধু চুরিই করছে না, ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত। প্রতিদিন ভোর ৫টায় মেঘনা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন যখন চাঁদপুর বড় স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে ছাড়ে, তখন উক্ত চোর-ছিনতাইকারীরা যাত্রীদের মোবাইল ফোন, ব্যাগ, ঘড়ি, গলার চেইনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে কয়লা ঘাটের অবৈধ স্থাপনায় ঢুকে পড়ে। এসব স্থাপনা ঘিরে মাদক সিন্ডিকেটসহ বড় অপরাধ চক্রও গড়ে ওঠে। এরা পুলিশ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক ধরা পড়লেও জামিন নিয়ে ফিরে এসে পুনরায় একই কাজ করে। বংশ পরম্পরায় চলে তাদের এই কাজ। অনেক বিলম্বে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের যথাযথ পর্যবেক্ষণের আওতায় বিষয়টি নিয়ে আসে এবং কয়লা ঘাটের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সীমানা বেষ্টনী নির্মাণের কঠোর পদক্ষেপ নেয়। গত সোমবার (৮ নভেম্বর) দিনব্যাপী চলে এই উচ্ছেদ এবং একই সাথে চলে সীমানা বেষ্টনী নির্মাণের কাজ।
আমরা চাঁদপুর বড় স্টেশনের ক্যারেজ ডিপো সংলগ্ন কয়লা ঘাট এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং রেল সম্পদ রক্ষায় সীমানা বেষ্টনী নির্মাণে রেলওয়ের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। আর সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তাদের জানাই ধন্যবাদ। চাঁদপুরে রেলওয়ের শত শত কোয়ার্টার এলাকা ও পরিত্যক্ত অন্যান্য স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও অনুরূপ কঠোর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি।