প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
ভবন উদ্বোধন হলো, হস্তান্তর হবে না কেন?
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃক ০১ জুলাই ২০১২ হতে ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে : মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরে সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধকরণ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম অধিকতর সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্যে ভৌত সুবিধাদি বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন সাধন, দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তান-সন্তুতিগণের আর্থ-সামাজিক কল্যাণ সাধন এবং ভবনের অর্জিত আয় থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ, নির্মিত ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ এবং ভবিষ্যতের জন্যে সঞ্চয় সৃষ্টি করা।
|আরো খবর
দেশের ৬৪ জেলার ৪৭০টি উপজেলায় তিনতলা বিশিষ্ট একটি করে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্যে এক হাজার দুইশ তেইশ কোটি চুয়ান্ন লাখ টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে প্রকল্পটির কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এ প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ বাস স্ট্যান্ডের পাশে ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি ভবনটির উদ্বোধন করেন। তারপর সাড়ে তিন বছর পার হয়ে গেলেও ভবনটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তথা মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহারের জন্যে সরকারিভাবে হস্তান্তর করা হয়নি। এর ফলে ভবনটি অযতেœ-অবহেলায় পড়ে আছে। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্মারক সম্বলিত এক নির্দেশের বলে ফরিদগঞ্জের ইউএনও শিউলী হরি চলতি বছরের ৮ মার্চ উক্ত ভবনটির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্যে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন, যাতে তিনি ছাড়া অন্য চারজন হচ্ছেন : উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার।
অভিযোগ উঠেছে, পছন্দ ও অপছন্দজনিত কারণে ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি হস্তান্তর করা হচ্ছে না। ভবনে বিদ্যমান ১২টি দোকান ভাড়া দেয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, এই ভবনে একজন নৈশ প্রহরীসহ তিনজন লোক নিয়োগ করার বিধান থাকলেও কাউকে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। আর ভবনটির জন্যে বরাদ্দকৃত একটি কম্পিউটার ও একটি টেলিভিশন পড়ে আছে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার পরও সাড়ে তিন বছরের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কাছে হস্তান্তর না করাটা নিঃসন্দেহে রহস্যজনক। এ রহস্য উদ্ঘাটন করে ভবনটি যতো দ্রুত সম্ভব হস্তান্তরের উদ্যোগ নেয়া জরুরি। কেননা হস্তান্তরে বিলম্ব ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। এ ক্ষোভ অল্পতেই প্রশমিত করাটা হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্যে বুদ্ধিমানের কাজ।