বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

কিছু চেয়ারম্যান চোরম্যান হয়েই যায়!

অনলাইন ডেস্ক
কিছু চেয়ারম্যান চোরম্যান হয়েই যায়!

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পলায়নের পর সেই সরকারের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুর্নীতির নানান দিক বেরিয়ে আসছে। এর মধ্যে অনেক জনপ্রতিনিধির দুর্নীতিও বাদ নেই। চাঁদপুর কণ্ঠে প্রায়শই ছাপা হচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যানদের দুর্নীতির সংবাদ। গতকালও ছাপা হয়েছে, যার শিরোনাম হয়েছে ‘ফরিদগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে ইউপি সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন’।

সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, ট্যাক্সের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১১নং চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মিরাজের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি সদস্যরা। ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ৫ জন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউপি সদস্য ইউসুফ মিজি (৭নং ওয়ার্ড)। উপস্থিত ছিলেন জিল্লুর রহমান (৯নং ওয়ার্ড), মোঃ সলেমান (৩নং ওয়ার্ড), মোঃ বোরহান আহমেদ (৬নং ওয়ার্ড) ও সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য খাদিজাতুল কোবরা (৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড)।

লিখিত বক্তব্যে ইউপি সদস্যরা জানান, ২০২২ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে মোঃ মাহমুদুল হাসান মিরাজ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম- দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। আমরা ইউপি সদস্যরা এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি প্রদান ও হয়রানি করতেন। তিনি হোল্ডিং ট্যাক্সের লাখ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। কাবিখা, কাবিটার দুটি প্রকল্পের কাজ না করে টাকা উত্তোলন করে তাও আত্মসাৎ করেছেন। ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ না করে নিজস্ব বাহিনীর নামে সিমকার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। কর্মসূচির কাজের বিষয়ে ইউপি সচিবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। আমাদেরকে কোনো কাজ করতে দেননি তিনি। উল্টো আমাদের নামে প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মিরাজ আত্মগোপনে চলে যান। এ পর্যন্ত তিনি একটি বারও পরিষদের মাসিক সভা করেন নি। ইউপি সদস্যদের পরিষদের কার্যালয়ে না ডেকে তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পরিষদ পরিচালনা করে পবিত্র এই পরিষদটিকে অনিয়মের আখড়া হিসেবে রূপান্তর করেছেন। এদিকে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া থেকে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতে ২৭৯ সিমকার্ড ও ৭৬ মোবাইল ব্যবহারের দায়ে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছে। দুর্নীতিতে চৌকস এই চেয়ারম্যান হচ্ছেন নলছিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুনছুর উল্লাহ শিবলী। তাকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী কন্টিনজেন্ট। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাতিয়া পৌরসভার ওছখালী বাজার পৌর সুপার মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির তথ্যের ভিত্তিতে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২৭৯টি সিমকার্ডসহ ৭৬টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এসব ফোন এবং সিমকার্ড ব্যবহার করে বিপুল অংকের সরকারি টাকা বিকাশ, নগদ ও রকেট একাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলনের আলামত পাওয়া যায়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবন্ধী, শিক্ষা, বিধবা ও বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন সরকারি অর্থ ইউনিয়নের জন্যে বরাদ্দ আসে। যার বড়ো একটি অংশ এ সকল মোবাইল ও সিমকার্ডের মাধ্যমে অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে এই চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে আটক ব্যক্তিকে জব্দ মোবাইল ও সিমকার্ডসহ হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করে নৌবাহিনী।

চেয়ারম্যান শব্দটি থেকে 'য়' বাদ দিলে শব্দটি হয় চোরম্যান। বাংলিশ এই শব্দটির ব্যাপক প্রয়োগ ও ব্যবহার না থাকলেও কিছু ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতি, চাল চুরি, গম চুরি সহ নানা অপকর্মের কারণে তারা বাস্তবে চোরম্যানই হয়ে যায়। অথচ নির্বাচনের আগের প্রচারণায় এদের চরিত্রই থাকে ফুলের মতো পবিত্র। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তীতে দুর্নীতি ফাঁস হওয়া এমন চোরম্যান জাতীয় চেয়ারম্যানদের তাদের চেয়ারে বসার সুযোগ না দিতে যা যা করণীয় তার সবটুকুন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নেয়া দরকার। এছাড়া যে সকল ইউপি চেয়ারম্যানের সিমকার্ড ও মোবাইল-জালিয়াতি ফাঁস হয় নি এবং যারা সন্দিগ্ধ, তাদের অতীতের কার্যক্রম নিয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেয়া দরকার। এতে চুরির আরো নানা অপকৌশল বেরিয়ে আসতে পারে, যেসব কারো মাথাতে এখনো চিন্তা করার বিষয় হিসেবে ঠাঁই পায়নি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়