মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

আর কোথাও এমনটি না হোক---

অনলাইন ডেস্ক
আর কোথাও এমনটি না হোক---

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর চাঁদপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোই এখনও অনেক বেশি আলোচনায়। গণঅভ্যুত্থানের অব্যবহিত পর চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন মজুমদারের পুরাণ আদালত পাড়াস্থ বাসায় দফায় দফায় হামলা এবং তার জায়গায় ভূগোলের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শোয়ায়েবকে স্থলাভিষিক্ত করার মধ্য দিয়ে এই কলেজে ফিরে শান্তি। একই সাথে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মোঃ নাছিম আখতারের পদত্যাগের দাবিতে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে চলতে থাকে অবরোধ। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করেন নি। তাকে নিয়ে আপাতত শিক্ষার্থীদের নীরবতা। তবে ছোট্ট একটি কলেজ মতলবের মুন্সীরহাট কলেজে চলে কিছু শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর অনড় অবস্থান। যে কারণে অধ্যক্ষ আব্দুল মালেককে পদত্যাগ করতে হয়, যদিও তাকে আরেক দল শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর ভূমিকায় স্বপদে ফিরতে হয়। চাঁদপুর সদর উপজেলার ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তীতে কলেজে না আসায় সেখানে ভারপ্রাপ্ত কে হবেন সেটা নিয়ে ও অন্য বিষয় নিয়ে চলছে অস্থিরতা, ভাংচুর ও অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগানোর মহড়া। তার পূর্বাপর ফরিদগঞ্জের গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজে পলাতক অধ্যক্ষকে নিয়ে চলেছে মানববন্ধন, যাতে তিনি পদত্যাগ করেন ও তার অনিয়মের বিচার হয়। সেখানেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ ও এডহক কমিটি নিয়ে ক্ষমতাপ্রত্যাশী দেশের বৃহত্তম দল বিএনপির দু গ্রুপের মধ্যে চলছে অপ্রীতিকর ঘটনা। সেসব এখন হয়ে গেছে গণমাধ্যমের মোক্ষম উপজীব্য বিষয়। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে পরপর সংবাদ প্রকাশের ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হয় ‘গল্লাক কলেজের এডহক কমিটি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ’ শিরোনামের সংবাদ।

সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটি নিয়ে দু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির দু গ্রুপই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে উভয় পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেছে বলে পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে অভিযোগ তদন্তে ও এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ও রাতে দু দফায় বিএনপির দু গ্রুপ (এমএ হান্নান এবং লায়ন হারুন গ্রুপ)-এর মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি এবং রাতে গল্লাক বাজারে দু গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) কলেজের সহকারী অধ্যাপক হারুনুর রশিদ কলেজের এডহক কমিটি জমা দিতে গেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে কে বা কারা তার হাত থেকে কমিটির কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করে চলে যাওয়ার সময় উপস্থিত বিএনপির দু গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এতে কলেজ আঙ্গিনা এবং গল্লাক বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একই ঘটনায় রাতে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সূত্রে মতে, বিএনপির দু গ্রুপের সমর্থক তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে এডহক কমিটির প্রধান করতে চায়। কেউ চাচ্ছেন লায়ন হারুন গ্রুপের উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান কচি এডহক কমিটির প্রধান হোক। অন্যরা চাচ্ছেন বিএনপির এম এ হান্নান গ্রুপের নেতা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ কলেজের এডহক কমিটির প্রধান থাকুক। এদিকে কলেজের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, কুমিল্লার মধ্যে অন্যতম সেরা কলেজ গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজ। কলেজ প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক রক্ত-ঘাম ঝরেছে। এডহক কমিটি নিয়ে দু গ্রুপের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব তা অবসান করে সবাই কলেজের উন্নয়নে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই। ফরিদগঞ্জ থানার ওসি হানিফ সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে গল্লাকের ঘটনায় উভয় পক্ষ পৃথক দুটি অভিযোগ দিয়েছে। আমরা ঘটনা তদন্তে নেমেছি। ইউনিয়নের বিট অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনা তদন্ত করছে আর এলাকার শান্তি রক্ষায় শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) কলেজে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

অন্যান্য কলেজ থেকে গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ঘটনাটি কিছুটা ভিন্ন। এখানে অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও অনিয়মের বিচারের চাইতে এডহক কমিটি তে কারা আহ্বায়ক ও সদস্য হবেন, সেটা নিয়ে চলছে সেমসাইড। এটা দৃষ্টিকটু। ক্ষমতাপ্রত্যাশী একটি দলের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষ এমনটি প্রত্যাশা করে না। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত কর্তৃত্ববাদী সরকারের এমপি এই কলেজটি নিয়ে এবং এমপির মদদে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীরা যা করেছে এলাকাবাসী সেই অধ্যায় ভুলে গিয়ে সামনে ভালো কিছু চায়। এই চাওয়ার মাঝে যদি ভবিষ্যতে যে দল থেকে যারা এমপি হবার সম্ভাবনা আছে, তাদের লোকজন এমন দৃষ্টিকটু কিছু করে, তাহলে সাধারণ্যে হতাশা সঞ্চার হওয়া ছাড়া আর কিছুই থাকে না। সেজন্যে গল্লাক ছাড়া জেলার ও দেশের অন্য কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেমসাইড-জাতীয় কিছু না হোক--সেটাই শান্তিপ্রিয় প্রতিটি মানুষের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়